December 23, 2024, 7:53 am

হাজার মাইল পাড়ি দিয়ে পাখিরা এখন পাহাড়ে

Reporter Name
  • Update Time : Monday, March 23, 2020,
  • 500 Time View

অতিথি পাখির খুনসুটিতে মুখরিত রাঙামাটির হ্রদ-পাহাড়। শীতের প্রকোপ যতই বাড়ছে, অতিথি পাখির সংখ্যাও তত বাড়ছে। এরই মধ্যে এসেছে শীত প্রধান দেশের রং-বেরংয়ের নানা প্রজাতির পাখি। রাঙামাটির কাপ্তাই হ্রদের ডুবচরে প্রায় প্রতিদিন বসে এসব পাখিদের মিলন মেলা।

ভোর হলে কুয়াশার বুক চিরে দলবেধে নামে কাপ্তাই হ্রদের স্বচ্ছ জলে। হ্রদের বুকে ডুব সাঁতার, আবার ঝাঁক বেঁধে আকাশের নীলে ওড়াউড়ি। এই যেন তাদের নিত্য দিনে রুটিন।

আর যখন সন্ধ্যার আকাশে সূর্যের গোধূলির সোনালি রঙ ছড়িয়ে পরে, তখনি শুরু হয় পাখিদের মিছিল। কিচির-মিচির ছন্দের তালে সাঁড়ি বেঁধে ফিরে যায় ওরা পাহাড়, বন ও বাঁশঝাড়ের অস্থায়ী নিড়ে। পাখিদের এমন বিস্ময়কর সৌন্দয্য শুধু পাহাড়ের দৃশ্য।

রাঙামাটির হ্রদ-পাহাড় ঘুরে দেখা যায়, প্রতি বছরের মতো শীতের শুরুতেই রাঙামাটিতে এসেছে অতিথি পাখি। সুদূর
সাইবেরিয়াসহ বিভিন্ন শীত প্রধান দেশ থেকে পাহাড়ে এসেছে ফ্লাইফেচার, জলকুট, পর্চাড, জলপিপি, পাতারী, গার্নিগি,
পাস্তামূখী, নর্দানপিন্টেলসহ নানা প্রজাতির পাখি। অতিথি পাখীদের সাথে যোগ দিয়েছে দেশীয় সরালি, ডাহুক, পানকৌরি,
বক, বালিহাঁসসহ নাম না জানা হাজারো নানা প্রজাতির পাখি।

প্রকৃতির টানে হাজার মাইল পাড়ি দিয়ে ওরা আসেছে দূর-দূরন্ত থেকে। পাহাড়, বন আর স্বচ্ছ জলধারা অতিথি পাখিদের যেন বেশি আকর্ষণ করে। তাই শীত এলেই পাহাড়ের গাছগুলোতে দেখা মেলে হাজারো অতিথি পাখি। খনিকের জন্য পাহাড়, বন-জঙ্গল ওদের জন্য নিরাপদ অভায়শ্রম। পাখিদের এমন কলতান ও অভূতপূর্ব সৌন্দর্য উপভোগ করতে স্থানীয়দের সাথে ছুটে যাচ্ছে দূর-দুরান্ত আসা প্রকৃতিপ্রেমী পর্যটকরাও।

তথ্য সূত্রে জানা গেছে, শুধু রাঙামাটি শহর এলাকা নয়। অতিথি পাখির দেখা মিলছে জেলার সুবলং, লংগদু, কাট্টলী,
মাইনিমুখ, সাজেক, বাঘাইছড়ি, হরিণা, বিলাইছড়ি ও বরকলে।

এসব উপজেলায় পাখির কলরবে কানায় কানায় ভরে গেছে হ্রদের তীর ও জলে ভাসা চরগুলো। খুব ভোর বেলা আর সন্ধ্যায় কাপ্তাই হ্রদে দেখা মেলে পাতিহাস, ডাহোক, কালাম, বক, ছোট সরালি, বড় সরালি, টিকি হাঁস, মাথা মোটা টিটি, চোখাচোখি, গাং চিল, গাং কবুতর, চ্যাগা ও জল মোরগ, বইধর।

অন্যদিকে অভিযোগ রয়েছে, প্রতি বছর শুধু শীত মৌসুমের জন্য পার্বত্যাঞ্চলে বিভিন্ন দেশ থেকে ঝাঁকে ঝাঁকে অতিথি
পাখি আসলেও তাদের নিরাপত্তার জন্য নেওয়া হয়নি দৃশ্যমান কোনো উদ্যোগ। তাই অতিথি পাখি আসলে সক্রিয় হয়ে ওঠে এখানকার পাখি শিকারিরা। নিরবে চলে তাদের পাখি নিধন কার্যক্রম।

রাঙামাটি পার্বত্য চট্টগ্রাম দক্ষিণ বনবিভাগ বন সংরক্ষক মো. ছানাউল্ল্যাহ পাটওয়ারী জানান, সাইবেরিয়া, মঙ্গোলিয়া, নেপাল ও হিমালয়ের উত্তরে শীত ও তুষারপাত শুরু হলে অতিথি পাখিরা বাংলাদেশের নাতিশীতোষ্ণ অঞ্চলে চলে আসে। দেশের হাতে গোনা যে কয়েকটি এলাকায় এরা ক্ষণস্থায়ী আবাস গড়ে, তার মধ্যে অন্যতম পার্বত্যাঞ্চল। মূলত অক্টোবরের শেষ ও নভেম্বরের প্রথম দিকে রাঙামাটিতে অতিথি পাখি দেখা যায়। মার্চের শেষদিকে ওরা ফিরে যায় নিজ নিজ দেশে। এরা আমাদের দেশের অতিথি। তাদের নিরাপত্তা দেওয়া সবার দায়িত্ব-কর্তব্য। পাখি নিধনের সর্বোচ্চ শাস্তির বিধান রয়েছে। পাখি নিধনের প্রমাণ পাওয়া গেলে আইনত কঠোর শাস্তির ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category
© All rights reserved © 2024
ডিজাইন ও কারিগরি সহযোগিতায়: রায়তা-হোস্ট
tmnews71