February 15, 2025, 11:11 pm

চিকিৎসকদের অসম্মান করার অধিকার নেই কারও

Reporter Name
  • Update Time : Saturday, March 28, 2020,
  • 101 Time View

মানুষের প্রাণ বাঁচাতে নিজেদের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে যে চিকিৎসকরা দেশে দেশে দিন-রাত লড়ছেন করোনা ভাইরাসের বিরুদ্ধে, কৃতজ্ঞতার প্রকাশ হিসেবে তাঁদের প্রতি সম্মান প্রদর্শনই স্বাভাবিক। একই কথা প্রযোজ্য সম্মুখ সারির স্বাস্থ্য সেবা কর্মীদের ক্ষেত্রেও।

অথচ বাংলাদেশে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত রোগীদের সেবা দানকারী চিকিৎসকদের কেউ কেউ অবমাননা, সরকারি হুমকি, এমনকি পুলিশের প্রহারের শিকার হয়েছেন।

রাজবাড়ী জেলার পাংশা উপজেলায় কর্মরত চিকিৎসক সুপ্রভ আহমেদ এ সপ্তাহে ফেসবুকে লিখে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।

তিনি জানান, তিনি হাসপাতালে দায়িত্ব পালনশেষে ভ্যানযোগে বাড়ি ফেরার পথে পরিচয় দেওয়ার পরও পাংশা মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নিজে সুপ্রভকে প্রহার করেছেন। তিনি এর প্রতিকার চেয়েছেন।বীর চিকিৎসকদের প্রতি সমবেতভাবে সম্মান প্রদর্শনের ঘটনার শুরু চীনে।

করোনা ভাইরাস সংক্রমণের সূচনাকেন্দ্র উহান নগরীতে রোগ নিয়ন্ত্রণে আনার পর অন্যান্য নগরী ও প্রদেশ থেকে আগত চিকিৎসক ও স্বাস্থ্য সেবা কর্মীদের ক্ষেত্রে। রাস্তার দুই পাশে দাঁড়িয়ে জনতা অভিবাদন জানিয়েছেন তাঁদেরকে।

ইতালি, স্পেন, ফ্রান্স ও ব্রিটেনে প্রতিদিন স্বাস্থ্য সেবা কর্মীদের পালা বদলের সময়, রাত ৮টায়, রুদ্ধদ্বার বা লকডাউনে থাকা নাগরিকরা ব্যালকনি, জানালা ও দরোজায় দাঁড়িয়ে করতালির মধ্য দিয়ে অভিবাদন জানাচ্ছেন এই বীর যোদ্ধাদের প্রতি। ভারতেও লক ডাউনের আগে ‘জনতা কারফিউ’-এর দিন একই ঘটনা ঘটেছে।

করোনা রোগীদের সেবা দেওয়ার কারণে কোনো কোনো চিকিৎসক ও স্বাস্থ্য সেবা কর্মীকে সামাজিকভাবে হেনস্তার শিকার হতে হয়েছিল ভারতে।

হেনস্তাকারীদের প্রতি কঠোর শাস্তির হুঁশিয়ারী জানিয়ে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বলেন, চিকিৎসা ও স্বাস্থ্য সেবা দানকারীরা “ঈশ্বরের প্রতিমূর্তি”। করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসা সেবা দিতে গিয়ে আক্রান্ত হচ্ছেন অনেক চিকিৎসক। প্রাণও হারাচ্ছেন। যেমন প্রাণ হারিয়েছেন পাকিস্তানের তরুণ চিকিৎসক উসামা রিয়াজ। আর আজ এই বীর চিকিৎসককে ‘নিশান ই কাশ্মীর’ খেতাবে ভূষিত করে সম্মাননা জানিয়েছেন আজাদ জম্মু ও কাশ্মীরের প্রধানমন্ত্রী।

অথচ বাংলাদেশের সরকার প্রধান বা স্বাস্থ্যমন্ত্রী কেউই আঘাত প্রাপ্ত সুপ্রভ আহমেদ-এর খোঁজ নেননি বা অন্যায়ভাবে চিকিৎসককে আঘাতকারী পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করেছেন বলে জানা যায়নি। এ বিষয়ে তাঁদের কোনো বিবৃতিও আমার চোখে পড়েনি।

উপরন্তু স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে প্রচারিত বিজ্ঞপ্তিতে চিকিৎসকদের সুরক্ষা পোশাক ছাড়াই রোগীদের প্রথম দফা পরীক্ষা করার নির্দেশ প্রদান করে। অপর এক বিজ্ঞপ্তিতে কোনো চিকিৎসক সেবা প্রদানে অস্বীকৃতি জানালে নিকটস্থ থানা বা সেনা ক্যাম্পে খবর দিতে অনুরোধ জানানো হয় নাগরিকদের প্রতি।

চিকিৎসকদের আপত্তি এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তীব্র সমালোচনার বিজ্ঞপ্তি দু’টি প্রত্যাহারে বাধ্য হয় বাংলাদেশ সরকার।

বাংলাদেশে সরকার, প্রতিষ্ঠান ও নাগরিকদের প্রতি অনুরোধ থাকবে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চিকিৎসা দানকারী চিকিৎসক ও স্বাস্থ্য সেবাকর্মীদের সম্মাননা না জানাতে পারেন, তাঁদের অসম্মান করার কোনো অধিকার নেই কারও।

টরন্টো

২৮ মার্চ ২০২০

(ফেসবুক থেকে সংগৃহীত)

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category
© All rights reserved © 2024
ডিজাইন ও কারিগরি সহযোগিতায়: রায়তা-হোস্ট
tmnews71