মহিপুরে ১০ টাকা কেজি খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির ১১ অসহায়ের চাল আত্মসাৎ করে খেলেন গ্রামপুলিশ
মহিপুর থানা প্রতিনিধি :
করোনা ভাইরাসের মহামারীতে দেশের মানুষ যখন মানবেতর জীবন অতিবাহিত করছেন ঠিক তখনই পটুয়াখালীর মহিপুর থানাধীন ডালবুগঞ্জ ইউনিয়নের ৮ নং ওয়ার্ডের গ্রাম পুলিশ আবু সালেহ’র বিরুদ্ধে ১১ অসহায় পরিবারের ফেয়ার কার্ডের চাল দীর্ঘ ১৭ মাস ধরে আত্মসাৎ করে খাওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
সরেজমিনে গিয়ে যানাযায় ডালবুগঞ্জ ইউনিয়নের ৮ নং ওয়ার্ডের গ্রাম পুলিশ আবু সালেহ চৌকিদার দীর্ঘ মাস ধরে ১১ অসহায়ের চাল পৃথক ভাবে কার্ডের উপরে অন্য ব্যাক্তিদের ছবি বসিয়ে আত্মসাৎ করে আসছেন।
এমতবস্থায় ৮ নং ওয়ার্ড বরকোতিয়ার মেম্বার মেজবা খান ডিলারের কাছ থেকে চৌকিদারের প্রদত্ত কার্ড উদ্ধার করে। সেখানে দেখা যায় ১১ টি কার্ডে কারো কারো কার্ড থেকে ১০ মাস, কারো থেকে ১৭ মাস ধরে গ্রাম চৌকিদার নিজে এবং পরিবারের লোকজন দিয়ে চাল উত্তলন করে আসছে। একটি কার্ডের নামে দেখাযায় মোঃ হান্নান সরদার কিন্তু ছবিতে দেখাযায় চৌকিদারের বাবার ছবি লাগানো এবং সে নিজের স্বাক্ষর দিয়ে চাল উত্তলন করেছেন।
১১ টি ফেয়ার কার্ডের ভিতরে রয়েছে কেউ ভিখারি, কেউ স্বামী পরিত্যাক্তা, কেউ প্রতিবন্ধী এবং কেউ জেলে কাজ করে যাদের চাল তিনি আত্মসাৎ করেছেন।
ভুক্তভোগী স্বামী পরিত্যাক্তা সালেহা জানান প্রথম পর্যায়ে তিনি ৩ বার ফেয়ার কার্ডের চাল উত্তলন করেছেন পরবর্তীতে চৌকিদার তার কাছ থেকে কার্ড অফিসে প্রয়োজন বলে নিয়ে গেলে তার কার্ড আর দেন নি চৌকিদার।
যখনি চৌকিদারকে বলা হতো কার্ডের কথা চৌকিদার বলতো আসনি আসলে পেয়ে যাবেন।
পরবর্তীতে মেম্বারের কাছে বলার পরে মেম্বার কার্ড উদ্ধার করে দিলে সেখানে দেখি ১৭ বার উত্তলন করা হয়েছে।
ভুক্তভোগী জেলে আমির হোসেন জানান তার কার্ড থেকে তিনি ১ বার চাল উত্তলন করার পরে চৌকিদার একই কথা বলে কার্ড নিয়ে পার্শবর্তী খবিরের কাছে বিক্রি করে দেয়।
খবির জানান তাকে কার্ড দেওয়ার কথা বলে চৌকিদার ৫০০ টাকা নেয় এবং সেই কার্ডের উপরে তার ছবি বসিয়ে দেয় এবং তার থেকে সে ১ বার চাল উত্তলন করে একই ভাবে আবার চৌকিদার কার্ড নিয়ে যায়।
এসময় আরো এক ভুক্তভোগী নুরভানু জানান একই কথা বলে চৌকিদার তার কার্ডও নিয়ে যায়।
এছাড়াও প্রায় শতাধিক গ্রামবাসী সাংবাদিকদের কাছে তার বিরুদ্ধে নানা ধরনের অভিযোগ জানান। যানাগেছে তিনি নানা ধরনের অপকর্মের সাথে ও মাদকের সাথে জরিত এবং বিভিন্ন সময়ে গ্রামবাসীদের উপরে নির্বিচারে অত্যাচার চালায়।
৮ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মিজবা খান জানান আমার কাছে ভুক্তভোগীরা অভিযোগ দিলে আমি চেয়ারম্যানের সাথে আলোচনা করি এবং চেয়ারম্যান সাহেব আমাকে ডিলারের কাছ থেকে কার্ড নিয়ে আসতে বললে কর্ড এনে দেখি এই অবস্থা।
চালের ডিলার মাওলানা ওমর ফারুক বলেন আমি কার্ড পেয়ে চাল দেই। এগুলো আমার দেখার দায়িত্ব নয় এগুলো দেখবেন এবং ছবি সনাক্ত করবেন চেয়ারম্যান ও মেম্বাররা।
তদারকি কর্মকর্তা লিটন চন্দ্র রায় বলেন আমার কাছে কখনো কোন অভিযোগ আসেনি অভিযোগ আসলে অবস্যই ব্যবস্থা নিতাম।
এব্যাপারে চৌকিদারে কাছ থেকে চাল ক্রেতা আব্দুস সালাম চাল ক্রয়ের সত্ততা সিকার করেন।
ডালবুগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুস সালাম সিকদার সাংবাদিকদের মুঠোফোনে ঘটনার সত্ততা স্বীকার করে বলেন অভিযুক্ত চৌকিদার এমনিতেই বেপরোয়া এবং একজন মাদক সেবি। আমি এ বিসয়ে উপজেলা নির্বাহী স্যারের সাথে আলোচনা করে অভিযুক্ত ব্যাপারে ব্যাবস্থা গ্রহন করবো।
এ ব্যাপারে কলাপারা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বলেন প্রাথমিক ভাবে অভিযোগের প্রেক্ষিতে ঘটনা সত্য বলে মনে হচ্ছে এবং ভুক্তভোগী দের লিখিত অভিযোগের প্রেক্ষিতে অভিযুক্ত চৌকিদারের বিরুদ্ধে নিয়মিত মামলা দায়ের হবে এবং আমরা অভিযুক্তর ব্যাপারে যথাযথ ব্যাবস্থা গ্রহন করবো।