করোনা ভাইরাস আতঙ্কে বন্ধ অফিস-আদালত। বন্ধ সরকারি-বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। বন্ধ ছোট-বড় ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান। এক জেলা থেকে অন্য জেলায় আসা-যাওয়া নিষেধ রয়েছে। করোনা ভাইরাস মোকাবিলার করার জন্য সকলকে ঘরে থাকার পরামর্শ দিয়েছেন সরকার।
শুধু পণ্যবাহী ট্রাক, এ্যাম্বুলেন্স ও সীমিত আকারে ফেরি চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে। খোলা রয়েছে ফার্মেসী, কাঁচাবাজার। সকলকে ঘরে রাখার জন্য এবং বর্তমান পরিস্থিতি সংবাদ মাধ্যমে তুলে ধরার জন্য ঘরের বাহিরে রয়েছে ডাক্তার, পুলিশ, প্রসাশন ও সংবাদকর্মী।
এরই মধ্যে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারাও গেছেন পুলিশ, ডাক্তার ও সাংবাদিক। কিন্ত যাদের জন্য সরকার ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এতো কিছু করছেন, তারা কি ঘরে সময় কাঁটাচ্ছেন। নাকি অকারণে ঘরের বাহির হয়ে বিপদের মাত্রা বাড়িয়ে দিচ্ছেন।
দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুট। দক্ষিনপশ্চিঞ্চলের ২১ জেলার রাজধানীর সাথে যোগাযোগের প্রধান নৌরুট। এই নৌরুটে বন্ধ রয়েছে লঞ্চ চলাচল। তবে পণ্যবাহী ট্রাক ও এ্যাম্বুলেন্স নদী পারাপার করার জন্য সীমিত আকারে ফেরি চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে। বর্তমান এই নৌরুটে ২টি রোরো (বড়) ও ৪টি ইউটিলিটি (ছোট) সহ মোট ৬টি ফেরি চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে।
রাতে পণ্যবাহী ট্রাক বৃদ্ধি পেলে ফেরি’র সংখ্যাও বৃদ্ধি করা হচ্ছে। কিন্ত দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুটে ফেরি চলাচল স্বাভাবিক থাকায় সুযোগ কাজে লাগাচ্ছে সাধারণ মানুষ। প্রতিদিন অবাদে নদী পারাপার হচ্ছে হাজার হাজার নারী পুরুষ। এ সময় ঢাকা থেকে যে পরিমাণ মানুষ আসছে। ঢাকায় ফিরেও যাচ্ছে একই রকম মানুষ।
করোনা ভাইরাসের কারণে ২৫ মার্চ থেকে সারাদেশে গণপরিবহন বন্ধ থাকলেও একদিনেও দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া উভয় ফেরি ঘাটে যাত্রী শুন্য হয়নি। প্রতিনিয়ত হাজার হাজার যাত্রী দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুট পারাপার হয়েছে। হচ্ছে। অবাদে আসা-যাওয়া করছে ভাড়ায় চালিত প্রাইভেটকার, মাক্রোবাস ও মটরসাইকেল। ফেরিতেও তারা সহজে পারাপার হচ্ছে।
এরই মধ্যে দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুটে কর্মরত বিআইডব্লিউটিসি দৌলতদিয়া ঘাট শাখার ৫ কর্মচারী ও তাদের এক কাজের মহিলা সহ মোট ৬জন করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ২৪ ঘণ্টা ফেরি সার্ভিস সচল রেখেছেন বিআইডব্লিউটিসি’র কর্মকর্তা-কর্মচারীবৃন্ধ।
সরাদেশে সাডডাউন-লকডাউন উপেক্ষা করে এত যাত্রী কিভাবে দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া ফেরি ঘাটে আসছে? কে দেবে এর উত্তর? যে হারে এই উভয় ফেরি ঘাট দিয়ে যাত্রী আসা-যাওয়া করছে দেখে মনে হচ্ছে সারাদেশ স্বাভাবিক রয়েছে। সাডডাউন-লকডাউনের কোন তোয়াক্কাই করছেন না কেউ। এদিকে মহাসড়কে নেই গনপরিবহন।
তবে ভাড়ায় চালিত প্রাইভেটকার, মাক্রোবাস ও শতশত মটরসাইকেল চলাচল করছে অবাদে। যে সকল যাত্রী ঢাকা থেকে আসছে এবং ঢাকায় ফিরে যাচ্ছে এরা কোন প্রকার সামাজিক দুরত্ব বজায় রেখে চলাচল করছে না। বরং গাদাগাদি করে ফেরিতে উঠার প্রতিযোগিতা করছে।
বিআইডব্লিউটিসি দৌলতদিয়া ঘাট শাখার ব্যবস্থাপক মো. আবু আব্দুল্লাহ রনি জানান, ফেরি চলাচল করলে যাত্রী পারাপার করবে। কারণ যাত্রী পারাপার নিয়ন্ত্রন করে ঘাট ইজারাদার। এদিকে পন্যবাহী ট্রাক ও এ্যাম্বুলেন্স নদী পারাপার করার জন্য ২টি বড় ও ৪টি ছোট ফেরি চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে। রাতে পণ্যবাহী ট্রাকের সংখ্যা বৃদ্ধি পেলে ফেরিও বৃদ্ধি করা হয়।