ব্রাজিলে শুক্রবার করোনাভাইরাসে আক্রান্তের নতুন রেকর্ড হলো। একই দিন ব্রিটেনের শীর্ষস্থানীয় মেডিক্যাল জার্নাল দাবি করলো, ব্রাজিলে করোনা মহামারির বিরুদ্ধে সফল লড়াইয়ে ‘সম্ভবত সবচেয়ে বড় বাধা’ প্রেসিডেন্ট জেয়ার বোলসোনারো।
এক সম্পাদকীয়তে দ্য লানসেট বলেছে, করোনাভাইরাসকে গুরুত্ব না দেওয়া এবং লকডাউন নিয়ে বোলসোনারোর অবজ্ঞা ব্রাজিলের মানুষকে দ্বিধার মধ্যে রেখেছে। অথচ প্রত্যেক দিনই আক্রান্ত ও মৃত্যুর হার বেড়ে চলেছে। পরিণত হচ্ছে মহামারির নতুন হটস্পটে।
শুক্রবার ব্রাজিলের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় একদিনে ১০ হাজার ২২২ জন আক্রান্ত ও ৭৫১ জনের মৃত্যুর খবর দিয়েছে। মোট আক্রান্ত দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ৪৫ হাজার ৩২৮ জনে, প্রাণহানির সংখ্যা ৯ হাজার ৮৯৭।
ল্যানসেটের দাবি, মহামারি মোকাবিলায় মনোমালিন্যের কারণে জনপ্রিয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী লুইজ হেনরিক মানদেত্তাকে বরখাস্ত করার পর থেকে বোলসোনারো রাজনৈতিক সংকটের মুখে পড়েছেন। ব্রিটিশ মেডিক্যাল জার্নাল এক বিবৃতি দিয়েছে, ‘আসল চ্যালেঞ্জ হলো রাজনৈতিক, ব্রাজিলিয়ান সমাজের সঙ্গে যোগসাজশ রাখার। ‘তাতে কী?’ প্রেসিডেন্টের এই প্রশ্নের স্পষ্ট উত্তর জানতে অবশ্যই ব্রাজিলকে একত্রিত হতে হবে। তাকে করোনা মোকাবিলার কৌশলে আমূল পরিবর্তন আনতে হবে, নয়তো বিদায় নিতে হবে।’
করোনাভাইরাসে রেকর্ডসংখ্যক মৃত্যু নিয়ে গত সপ্তাহে সাংবাদিকদের প্রশ্নে বোলসোনারো বলেছিলেন, ‘তাতে কী? আমি দুঃখিত, কিন্তু আপনারা আমাকে দিয়ে কী করাতে চাচ্ছেন?’
শুক্রবার প্রেসিডেন্ট বলেছিলেন, একটি বারবিকিউ পার্টির আয়োজন করছেন তার বাসভবনে। সেখানে ৩০ জন বন্ধুকে নিমন্ত্রণ করতে চান। পরদিন তিনি কৌতুক করে বলেন, আসলে রাজনৈতিক সমর্থক ও সংবাকর্মীসহ হাজারের বেশি লোককে পার্টিতে চান তিনি।
করোনা মহামারি শুরু হওয়ার সময় প্রেসিডেন্ট করোনাভাইরাসকে ‘সামান্য ফ্লু’ বলেছিলেন। সমর্থকদের সঙ্গে মতবিনিময়ে তাকে মাস্ক ছাড়া দেখা গেছে। এছাড়া অর্থনৈতিক ক্ষতির আশঙ্কায় লকডাউনের বিরুদ্ধে ছিলেন শুরু থেকে। এনিয়ে রাজ্যের গভর্নরদের সঙ্গে বাকবিতন্ডাও হয়েছে বেশ। লোকজনকে সামাজিক দূরত্ব মেনে না চলতেও উৎসাহিত করেছিলেন বোলসোনারো।
শুক্রবার ইম্পেরিয়াল কলেজ লন্ডনের প্রকাশিত রিপোর্টে বলা হয়েছে, ‘ব্রাজিলে এখনো মহামারি নিয়ন্ত্রণে আসেনি এবং বাড়তেই থাকবে। আমাদের গবেষণার ফলাফল এই সংক্রমণ ঠেকাতে আরো কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার পরামর্শ দিচ্ছে এবং স্বাস্থ্য ব্যবস্থার দিকেও নজর রাখতে হবে।