দেশে করোনা সংক্রমণের শুরুর দিকে যাবতীয় তথ্য-উপাত্ত নিয়ে গণমাধ্যমে হাজির হতেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের (আইইডিসিআর) পরিচালক অধ্যাপক ডা. মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থাপনা ও বাচনভঙ্গির কারণে দ্রুতই সবার মধ্যে পরিচিত পান তিনি।
কিন্তু সম্প্রতি তিনি আর আসছেন না সংবাদ সম্মেলনে। বিষয়টি নিয়ে জনমনে প্রশ্ন উঠেছে। অনেকে বলছেন, এখন ফ্লোরা কেমন আছেন?
এর মধ্যে মার্চের শেষ দিকে হাই ব্লাড প্রেসারের কারণে একদিন আইইডিসিআর-এ উপস্থিত থেকেও সংবাদ সম্মেলনে আসেননি মীরজাদী ফ্লোরা। আইইডিসিআর’র ৪ জন করোনায় আক্রান্তের পর এপ্রিলের দ্বিতীয় সপ্তাহে তিনি চলে যান হোম কোয়ারেন্টাইনে। হোম কোয়ারেন্টাইনে থেকেও সংবাদ সম্মেলনে যুক্ত হন। আর গণমাধ্যমের সামনে আসেননি ফ্লোরা। তবে বেশ কিছুদিন ধরে অনুপস্থিত থাকায় সবার মধ্যে প্রশ্ন তৈরি হচ্ছে, কোথায়, কীভাবে ও কেমন আছেন সেব্রিনা ফ্লোরা।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সুস্থ, স্বাভাবিক আছেন সেব্রিনা ফ্লোরা। এপ্রিলের দ্বিতীয় সপ্তাহে কোয়ারেন্টাইনে গেলেও তার মধ্যে করোনার কোনো লক্ষণ-উপসর্গ ছিল না। ২২ এপ্রিল থেকে আবারো নিয়মিত অফিস করা শুরু করেন।
এ বিষয়ে বুধবার (১৩ মে) বিকেলে আইইডিসিআর’র প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা এ এইচ এম আলমগীর বলেন, ফ্লোরা ম্যাডাম ভালো আছেন, সুস্থ আছেন। তার পরিবারের সবাই সুস্থ আছেন। তিনি নিয়মিত অফিসও করছেন।
সন্ধ্যায় অধ্যাপক ডা. মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরাও রাইজিংবিডিকে জানিয়েছেন, তিনি সুস্থ আছেন। নিয়মিত অফিস করছেন।
তবে নিয়মিত সংবাদ সম্মেলন বা স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের বুলেটিনে না আসার বিষয়ে তিনি কিছু জানাননি।
তবে এ বিষয়ে ভিন্ন যুক্তি রয়েছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের এক কর্মকর্তা ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) একজন ভাইরোলজিস্ট বলেছেন, আইইডিসিআর’র কাজ হলো সংক্রমক রোগ বিষয়ে গবেষণা করা, চিকিৎসার গাইডলাইন তৈরিতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরকে সহায়তা করা। দেশে করোনা সংক্রমণ শুরু হলে আইইডিসিআর কোভিড-১৯ পরীক্ষা, নিয়মিত তথ্য সরবরাহ ও চিকিৎসকদের সরাসরি গাইডলাইন দেওয়া শুরু করে। এছাড়া বিভিন্ন বিষয়ে সরাসরি সিদ্ধান্ত নেওয়া শুরু করে প্রতিষ্ঠানটি। বিষয়টি অনেকে মেনে নিতে পারেননি। এ কারণে হয়তো ফ্লোরা আর সংবাদ সম্মেলনে আসছেন না। অর্থাৎ এখন প্রতিষ্ঠানটির যতটুকু দায়িত্ব (রোগ গবেষণা) রয়েছে ঠিক ততটুকুই করছে।
এদিকে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচলক অধ্যাপক আবুল কালাম আজাদও শারীরিকভাবে অসুস্থ রয়েছেন। এ কারণে তার জায়গায় ভারপ্রাপ্ত মহাপরিচালকের দায়িত্ব পালন করেছেন অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা।