বাংলাদেশের অনেক মেয়েরা এখন শর্টস পড়ে। পোশাক পরিধানের ক্ষেত্রে এটা একধাপ উন্নতির লক্ষণ। ঢাকায় যখন আমার বন্ধুদের বাসায় যাই অনেক তরুণ মেয়েরাই ঘরে শর্টস পড়ে থাকে। বাবা মায়েরাও এটাকে সহজভাবেই দেখে বা এটা নিয়ে মাথা ঘামানোরও কিছু নাই। শর্টস একটা পোশাকের বেশি কিছু না। অনেকে এটাকে বাঁকা চোখে দেখার প্রয়াস পান। কিন্তু আমার কাছে ব্যাপারটা স্বাভাবিক মনে হয়। মোটেই দোষনীয় মনে হয় না।
অনেক বয়স্ক নারীরাও শর্টস পড়েন বা বিপদজ্জনক মাত্রায় লো কাট ড্রেস পড়েন এবং সেসব ছবি ফেসবুকে পোষ্ট করেন। সেই ছবিতে হাজার হাজার লাইক কমেন্টস থাকে। বেশিরভাগ লাইক পুরুষরা দেন। মজার ব্যাপার হচ্ছে বাংলাদেশে যে পরিমাণ শর্টস মেয়েরা পড়ে ছেলেরা সেই তুলনায় কম পড়ে। নর্থ আমেরিকায় বা ইউরোপেও বাঙালি মেয়েরা ঘরে বাইরে ধুম ধারাক্কা শর্টস পড়ে না। বিদেশে এসেও ওরা খ্যাত রয়ে গেছে!
যেমন আমার ছেলে অর্ক ছয় ফুট এক ইঞ্চি লম্বা। নিয়মিত জীম করে। সুন্দর ফীগার। ইন্টারেস্টিং হচ্ছে আমি সব শেষ অর্কর আদুর গা দেখেছি ওর যখন সাত বছর বয়স তখন। ঢাকায় থাকি তখন আমরা। অর্কর খুব জ্বর হয়েছে একবার। টাইফয়েডের মতো। আমি প্রতিদিন অর্কর বুক পিঠ আইস দিয়ে স্পঞ্জ করি। সেই শেষবার। আর কখনো না। অর্ক কখনো আমাদের সামনে চেঞ্জ হয় না। আমার অনেকবার ইচ্ছে হয়েছে অর্ক কেমন ফীগার বানাল দেখি। এমনকি টরন্টোতে যখন ও টীন এজ হাইস্কুল বা ইউনিভার্সিটিতে পড়ে তখনও ঢোলা ঢালা নাভীর নিচ দিয়ে ঝুলে পড়ে যাচ্ছে, আন্ডার গার্মেন্টস বের হয়ে আছে টাইপ জীন্স পড়তে দেখিনি। বরং আমি নিজে সামারে ঘরে শর্টস পড়ি এবং কখনো কখনো খালি গা হই
আর আমার মেয়ে অরিত্রি তো আরো এক ধাপ উপরে। এখনও পারিবারিক কোনো অনুষ্ঠানে গেলে শাড়ি পড়ার চেষ্টা করে। ওর জন্য জেসমিন শাড়ি কিনে আনে কোলকাতা থেকে। সুন্দর সুন্দর কম্বিনেশনের সালোয়ার কামিজ পড়ে। অরিত্রি হাই প্রোফ্রাইল জব করে, সবাই সাদা কো ওয়ার্কার কিন্তু ড্রেসআপে পুরোপুরি ওর নিজস্ব বৈশিষ্টের বাঙালিয়ানা আছে। এমন না যে আমরা কখনো বলেছি এই ধরনের ড্রেস পড়বা বা এইটা পড়বা না।
আমেরিকা বা কানাডার প্রায় প্রতিটা বাঙালি পরিবারে মা বাবা যেমন তেমনি সন্তানরা চিরায়ত বাঙালি পোশাকে সাজতে পছন্দ করে। ওয়েস্টার্ন আউটফিট পরিধান করলেও সেগুলো হয় দৃষ্টিনন্দন!