December 23, 2024, 3:39 pm

করোনাকালের আজ অন্য রকম ঈদ

Reporter Name
  • Update Time : Monday, May 25, 2020,
  • 109 Time View

ঈদ মানে আনন্দ। ঈদ মানে খুশি। ঈদ মানে স্বজন আর বন্ধুদের মিলনমেলা, হৈ-হুল্লোড়, ঘুরে বেড়ানো। ঈদ মানে কোলাকুলি, করমর্দন। ঈদ মানে প্রতিবেশীদের নিয়ে খাওয়াদাওয়া, আড্ডা দেওয়া। নাড়ির টানে গ্রামে গিয়ে মা-বাবা, ভাই-বোনদের সঙ্গে একত্র হওয়া। নতুন জামাকাপড় পরা। কিন্তু এবার সেই অনাবিল আনন্দের আবহ নেই।

খুশির জোয়ারও নেই। করোনা ভাইরাস মহামারির কারণে সারা বিশ্বের মতো বাংলাদেশেও থমকে গেছে স্বাভাবিক জীবনযাপন। এমন অবস্থায় দরজায় কড়া নাড়ছে ঈদুল ফিতর। শনিবার সন্ধ্যায় বাংলাদেশের আকাশে শাওয়াল মাসের চাঁদ দেখা না যাওয়ায় সোমবার ঈদুল ফিতর উদযাপিত হবে।

ঈদের নামাজ আমাদের দেশে একটি বড় উৎসব। ছেলে, বুড়ো, পাড়া-প্রতিবেশী সবাই দল বেঁধে ঈদের নামাজ পড়তে ঈদগাহে যায়। নামাজ শেষে একে অপরের সঙ্গে কুশল বিনিময়, করমর্দন, কোলাকুলি করে। কিন্তু করোনার স্বাস্থ্যবিধি এবার সেটা হতে দিচ্ছে না। এবার উন্মুক্ত স্থানে জনসমাগম করা যাবে না। ঈদের নামাজ পড়তে হবে মসজিদে।

মসজিদে মসজিদে সময় ভাগ করে একাধিক ঈদের জামাত অনুষ্ঠানের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখেই নামাজ আদায় করতে হবে। যে এলাকায় করোনার প্রাদুর্ভাব নেই সেই এলাকায় হয়তো স্থানীয় লোকজনের উদ্যোগে ঈদগাহে জামাত হতে পারে। কিন্তু সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার নির্দেশনা মেনে করা যাবে না কোলাকুলি, করমর্দন।

ঈদের দিনে আত্মীয়-স্বজন, বন্ধু, প্রতিবেশীর বাড়িতে যাতায়াত ও খাওয়াদাওয়ার সেই রেওয়াজও পালিত হবে না এবার। নতুন জামাকাপড় কেনেনি অনেকেই। ঈদের মেলা নেই কোথাও। প্রতিবছর শাড়ি মেলা, পাঞ্জাবি মেলাসহ বিভিন্ন প্রকার মেলা বসে ঈদ ঘিরে। ছেলে-মেয়ে নিয়ে অনেকেই যায় বিনোদনকেন্দ্রে। এবার সেটাও বন্ধ। প্রকৃতির সৌন্দর্যের সঙ্গে নিজেকে মেলে ধরতে অনেকে ছুটে যায় পর্যটনকেন্দ্রে। কিন্তু এবার দেশের পর্যটনকেন্দ্রগুলোও বন্ধ রয়েছে। সেখানে যাওয়ারও উপায় নেই।

ঈদ সামনে রেখে লাইনে দাঁড়িয়ে ট্রেনের টিকিট কাটা, দূরপাল্লার বাসে টিকিট কাটার জন্য হুড়োহুড়ি, ঈদের আগে যাত্রীবাহী বাস ও ট্রেনের ছাদ ভর্তি মানুষ—এসব দৃশ্য নেই এবার। নেই লঞ্চের ডেকের ওপর ঠাসা যাত্রীর কোলাহল। সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী, ঈদুল ফিতরের ছুটিতে ব্যক্তিগত গাড়িতে বাড়ি যাওয়া যাবে। কিন্তু গণপরিবহন বন্ধ থাকবে। সে কারণে এবার আর মহাসড়কে যানজট নেই। যদিও অনেকেই নানাভাবে বাড়ি গেছে।

টানা প্রায় দুই মাস অফিস-আদালত, কলকারখানা, ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান, গণপরিবহন বন্ধ থাকায় নিম্ন আয়ের মানুষ পড়েছে বিপাকে। ঘরে খাবার নেই। এই অবস্থায় ঈদ তাদের জন্য বিষাদ হয়ে এসেছে। যদিও ব্যক্তিগত উদ্যোগে দেশের ধনী ব্যক্তি, বিভিন্ন সংস্থা ও সরকারের পক্ষ থেকে ত্রাণ ও ঈদ উপহার সামগ্রী বিতরণ করা হয়েছে।

করোনা ভাইরাসের মধ্যে ঘূর্ণিঝড় আম্ফানের আঘাতে কয়েকটি জেলা ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, যা মড়ার ওপর খাঁড়ার ঘা হয়ে এসেছে। সে কারণে ঈদ তাদের জন্য খুশির বার্তা বয়ে আনতে পারেনি। করোনার সঙ্গে ঘূর্ণিঝড়ের ক্ষয়ক্ষতির কষ্টের মধ্যেই এবার তাদের কাটবে এক অন্য রকম ঈদ।

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category
© All rights reserved © 2024
ডিজাইন ও কারিগরি সহযোগিতায়: রায়তা-হোস্ট
tmnews71