এম.এস রিয়াদ,বরগুনা জেলা প্রতিনিধি
চীনের উহান প্রদেশ থেকে ছড়িয়ে পড়া ভয়াবহ ও মহামারি ভাইরাস করোনা (কোভিড-১৯)। যা সারা বিশ্বকে থমকে দিতে বাধ্য করেছে। বাধ্য করেছে মানুষের জীবনের জীবিকার চাকা বন্ধ করতে। এমন মহামারি করোনার হাত থেকে দেশের মানুষকে রক্ষা করতে সরকার হাতে নিয়েছেন স্বাস্থ্য সুরক্ষার নানা ধরণের উদ্যোগ। যেখানে সাধারণ মানুষের স্বাস্থ্য সুরক্ষার পাশাপাশি জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিতে কাজ করে আসছেন বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনী।
এরই ধারাবাহিকতায় সর্বদক্ষিণে অবস্থিত বরগুনা জেলায় করোনা মহামারি প্রতিরোধে সরকার কর্তৃক ঘোষিত ও নির্দেশিত প্রতিটি কর্মকান্ড শুরু থেকেই মাঠে থেকে গুরুত্বের সাথে দায়িত্ব পালন করে আসছেন বরগুনা জেলা পুলিশ।
ইতিপূর্বে বরগুনা জেলা পুলিশ করোনা প্রতিরোধে নানা ধরণের উদ্যোগ গ্রহনের পাশাপাশি তা বাস্তবায়ন করেছেন শতভাগ। যারমধ্যে বরগুনা জেলায় আগত বিভিন্ন দেশ থেকে এক হাজার চুয়ান্ন জনকে হোমকোয়ারেন্টাইন নিশ্চিত করেছেন। এছাড়াও চিহ্নিত করে নিশ্চিত করেছেন দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে আগত ছয় শ’ আটষট্টি জনের প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইন।
বরগুনার সাধারণ মানুষের স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিতের পাশাপাশি করোনা মহামারির সঙ্কটকালে হতদরিদ্রদের বরাদ্দকৃত বিশেষ ত্রাণ শতভাগ স্বচ্ছ ও সুষ্ঠুভাবে বন্টন করতে সর্বাত্তক সহযোগিতা প্রদান করেছেন বরগুনা জেলা পুলিশ। বিশেষকরে জেলার এক শ’ ঊনষাট জন মাদকসেবী আত্মসমর্পণকারীদের মাঝে ইদ উপহার সামগ্রী বিতরণ করার পাশাপাশি জেলা প্রশাসনের মাধ্যমেও খাদ্য সামগ্রী দেয়া হয়েছে।
এর আগে এক শ’ চৌষট্টি জন মাদক সেবনকারী ও ব্যবসায়ীদের আত্মসমর্পণের মাধ্যমে তাদের সমাজের মূল ধারায় ফিরিয়ে আনতে রেঞ্জ ডিআইজি’র অনুপ্রেরণায় ‘নব দিগন্ত’ নামক রেজিস্টার্ড সমাজ সেবা সংগঠন প্রতিষ্ঠা ছিল জেলা পুলিশের অন্যতম কর্মকান্ড।
করোনার কড়াল গ্রাস থেকে বরগুনা তথা বরগুনার মানুষকে রক্ষা করতে বহিঃজেলা থেকে বরগুনার প্রবেশদ্বার আমতলী, বেতাগী, পাথরঘাটা ও বামনায় দশটি স্থানে ছিলো পুলিশের চেকপোস্ট। যেখানে কড়া নজরদারী জোড়দার রাখা হয়েছিলো।
আজ যাদের ভরসার উপরে পুরো দেশের সাধারণ মানুষ প্রতিটি কদম নিশ্চিন্তে ফেলতে সক্ষম হচ্ছেন। যাদের কারণে মানুষের জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত থাকছে। যাদের মূখ্য ভূমিকা ছিলো মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে। অকুতভয় ও লড়াকু এ সৈনিকের নাম বাংলাদেশ পুলিশ বাহীনি।
বরগুনায় সরকারি নির্দেশনা ছাড়াও পুলিশ সুপারের তত্ত্ববধানে নিজস্ব অর্থায়নে মানবিক দিক বিবেচনায় রেখে এক হাজারেরও বেশি কর্মহীন হয়ে পড়া মানুষের ঘরে ঘরে পৌঁছে দেয়া হয়েছে খাদ্য সামগ্রী। যার নেতৃত্ব প্রদান করেছেন বরগুনার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (বরগুনা সদর সার্কেল) মোঃ শাহ্জাহান হোসাইন।
করোনার মাঝেই আগত প্রাকৃতিক দুর্যোগ আম্পান মোকাবেলায়ও ছিলো জেলা পুলিশের অন্যতম ও অনস্বীকার্য ভূমিকা। পাঁচ শ’ নয়টি মূল সাইক্লোন শেল্টারে এক লক্ষ দশ হাজার ছয় শ’ একান্ন জন এবং এলাকাভিত্তিক আরও এক শ’ উনিশ টি উঁচু ভবনকে নতুন করে সাইক্লোন শেল্টার হিসেবে ঘোষিত শেল্টারে তিন হাজার পাঁচ শ’ জনকে নিরাপদে আশ্রয় নিশ্চিত করেছেন। ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্থ এলাকায় ফায়ার সার্ভিস কর্মীদের পাশাপাশি পুলিশ সদস্যরা
পড়ে যাওয়া গাছের গুড়ি কেটে রাস্তা থেকে অপসারণে মূখ্য ভূমিকা পালন করেছেন।
বরগুনা পুলিশ সুপার মারুফ হোসেন (পিপিএম, বিপিএম) বলেন, এমন করোনা মহামারির এ ক্রান্তিলগ্নে যতটা সম্ভব ঘরে থাকুন। নিজে ও পরিবারকে সুরক্ষিত রাখুন। আপনাদের যেকোন প্রয়োজনে ও সহযোগিতায় বরগুনা জেলা পুলিশ স্বদা প্রস্তুত। যেকোন প্রয়োজনে বরগুনা জেলা পুলিশের হট লাইন ও কন্ট্রোলরুমে (০১৭০৩৫৩০৪০০ / ০১৭১৩৩৭৪৩৫২) ফোন দিয়ে আমাদের স্মরণাপন্ন হবেন। আমরা আমাদের সর্বচ্চটুকু দিয়ে আপনাদের পাশে থাকব।