March 23, 2025, 4:09 am

পড়াশোনা ও চাকরির প্রস্তুতি না ছাড়ায় ঢাবি ছাত্রীকে হত্যার অভিযোগ

Reporter Name
  • Update Time : Tuesday, June 23, 2020,
  • 191 Time View

অনলাইন ডেস্ক

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থী সুমাইয়া বেগমকে হত্যার অভিযোগ করেছেন স্বজনরা। ঘটনাটি ঘটেছে নাটোরের হরিশপুর এলাকায়।

নিহত সুমাইয়া যশোরের অধ্যাপক সিদ্দিকুর রহমান যশোরীর মেয়ে। তিনি নাটোর শহরের হরিশপুর বাগানবাড়ি এলাকার জাকির হোসেনের ছেলে প্রকৌশলী মোস্তাক হোসেন স্ত্রী ছিলেন।

সুমাইয়ার মা নুজহাত বেগম জানান, শ্বশুর জাকির হোসেনের কাছ থেকে ফোনে মেয়ের অসুস্থতার সংবাদ পেয়ে সোমবার সকালে যশোর থেকে নাটোরে যান।

এসে দেখেন, হাসপাতালের মর্গে মেয়ের লাশ পড়ে আছে। শ্বশুর, স্বামী বা তাদের পরিবারের কেউই সেখানে ছিল না। তার অভিযোগ নির্যাতন করে তার মেয়েকে হত্যা করেছেন শ্বশুর বাড়ির লোকজন।

সুমাইয়ার মা আরও অভিযোগ করে বলেন, বিয়ের পর থেকেই শ্বশুরবাড়ির লোকজন সুমাইয়ার পড়ালেখা ও পরে চাকরি করার ইচ্ছা মেনে নিতে পারছিল না। একারণেই তাকে হত্যা করা হয়েছে। প্রায় ছয় মাস আগেও তাকে ঘরে আটকে রেখে মেরে ফেলার চেষ্টা করা হয়েছিল।

পরিবার সূত্রে জানা যায়, ২০১৯ সালে মোস্তাকের সঙ্গে বিয়ে হয় সুমাইয়ার। বাবা অধ্যাপক সিদ্দিকুর রহমান যশোরী ছিলেন একজন নামকরা ইসলামি বক্তা। তার অনুপ্রেরণাতেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগে ভর্তি হয়েছিলেন সুমাইয়া। ভর্তির তিন বছরের মাথায় বাবার পছন্দেই মোস্তাককে বিয়ে করেন।

কিন্তু শ্বশুরবাড়ির লোকজন পড়ালেখায় বাদ সাধে। পড়াশোনার বদলে গৃহস্থালির কাজে মনোযোগ দেওয়ার তাগিদ দেয়। পড়ালেখার খরচ বাবা সিদ্দিকুরই দিতেন। তাই পড়ালেখা বন্ধ করতে হয়নি সুমাইয়াকে। প্রথম শ্রেণিতে স্নাতক (সম্মান) ও স্নাতকোত্তর উত্তীর্ণ হন তিনি। ঢাকায় থেকে বিসিএস পরীক্ষার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। হঠাৎ গত সেপ্টেম্বরে বাবা অধ্যাপক সিদ্দিকুর রহমান মারা যান। এতে আর্থিক সংকটে পড়েন সুমাইয়া।

শ্বশুরবাড়ি থেকে সহযোগিতার পরিবর্তে চাকরির চিন্তা মাথা থেকে ঝেড়ে ফেলে পুরোপুরি সংসারী হওয়ার নির্দেশ দেয়। কিন্তু সুমাইয়া বিসিএস পরীক্ষার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। গত রোববার রাতে সুমাইয়াকে তার স্বামীর ঘরে মারপিট করে হত্যা করা হয়। এরপর ঘটনাটি আত্মহত্যা বলে চালিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করে।

সোমবার দুপুর পর্যন্ত সুমাইয়ার শ্বশুর বাড়ি কাউকে দেখা যায়নি। ময়না তদন্ত শেষে রাতে নাটোরের একটি কবরস্থানে লাশ দাফন করা হয়েছে।

নাটোরের পুলিশ সুপার লিটন কুমার সাহা বলেন, গতকাল রাতে নিহত নারীর মা নুজহাত বেগম থানায় মামলা করেছেন। এতে সুমাইয়ার স্বামীসহ চারজনের বিরুদ্ধে হত্যা অভিযোগ করা হয়েছে। মামলা গ্রহণের পর আসামিদের ধরতে সারারাত অভিযান চালিয়েছে পুলিশ। সুমাইয়ার ননদকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

সুমাইয়ার মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানার জন্য লাশের ময়নাতদন্ত করা হয়েছে। প্রতিবেদন পাওয়া গেলে মৃত্যুর কারণ সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া যাবে।

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category
© All rights reserved © 2024
ডিজাইন ও কারিগরি সহযোগিতায়: রায়তা-হোস্ট
tmnews71