December 26, 2024, 6:11 pm

কলাপাড়ায় অসহায় দুই মানসিক রোগীর পাশে দাড়ালো ডাক্তার।।

Reporter Name
  • Update Time : Thursday, June 25, 2020,
  • 158 Time View

নিজেস্ব প্রতিবেদক।

কলাপাড়া উপজেলার নিলগঞ্জ ইউনিয়নের হোসেনপুর গ্রামের দুই মানসিক রোগী নিয়ে অসহায় আছিয়া বেগমের পাশে দাড়ালো কলাপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সাবেক এক মহিলা ডাক্তার। “দুই মানসিক রোগী নিয়ে অসহায় মহিলার” সংবাদ গনমাধ্যমে প্রকাশ হলে বিষয়টি তার নজরে আসে। বুধবার দুপুরে সেই আছিয়ার বাড়ীতে এক মাসের খাবার দিয়ে পাঠান তিনি। তিনটি প্রয়োজনীয় মৌলিক চাহিদা অন্ন, বস্ত্র ও চিকিৎসার দায়িত্ব চালিয়ে যাবেন বলেও তিনি ঘোষণা দেন।

জানা যায়, উপজেলার নীলগঞ্জ ইউনিয়নের হোসেনপুর গ্রামের মৃত ছবের ফকিরের স্ত্রী আছিয়া বেগম নিজের ভিটে-বাড়ি না থাকায় অন্যের বাড়িতে আস্রিতা থাকেন। তার একমাত্র মেয়ে আছমা ও বোন ফাতেমা বেগম মানসিক রোগী। তাদের দুজনকেই দেখাভাল করেন আছিয়া বেগম। কিন্তু দুই মানসিক রোগী নিয়ে তিনি অসহায় দিনপাত করে থাকেন। আছিয়া বেগমের অসহায়ত্বের কথা দৈনিক আমার সংবাদ পত্রিকাসহ বিভিন্ন গনমাধ্যমে প্রকাশিত হয়। পরে এটি কলাপাড়ার খবর নামক একটি পেইজে শেয়ার হলে বিষয়টি রাতারাতি ভাইরাল হয়ে যায়।

এতে বিভিন্ন সংগঠন তার প্রতি সহানুভূতির হাত বাড়িয়ে দেয়। কিন্তু এতে আছিয়া বেগমের ভাগ্যের তেমন পরিবর্তন হয়না। তাকে বাড়ি বাড়ি ভিক্ষা করেই চলতে হয়। তবে, এবার তার ভাগ্যের আকাশের পরিবর্তন হয়েছে বলা যেতে পারে। আছিয়া বেগম যাতে ভিক্ষা না করে মানসিক দুই রোগী নিয়ে পেট ভরে দু-বেলা খেতে পারে সে ব্যবস্থার জন্য কলাপাড়ার এক মমতাময়ী ও স্বনামধন্য মহিলা ডাক্তার (নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক) তার প্রতি সহানুভূতির হাত বাড়িয়ে দিয়েছে। তাদের প্রতি মাসের খাবারসহ বস্ত্র ও চিকিৎসার ব্যবস্থা তিনি করবেন বলে জানান। তার মতে, মানুষের মৌলিক পাঁচটি চাহিদার তিনটি চাহিদা অন্ন,

বস্ত্র ও চিকিৎসা আমি পূরণ করার চেষ্টা করবো। আমি যতদিন পারবো দুই মানসিক রোগীসহ আছিয়া বেগমকে সহায়তা করে যাবো।
বুধবার দুপুরে ডাক্তারের সাহয্যের অর্থ নিয়ে অসহায় আছিয়ার বাড়িতে ছুটে যান কলাপাড়া প্রেসক্লাবের সাবেক সাধারন সম্পাদক ও দৈনিক ইত্তেফাক প্রত্রিকার প্রতিনিধি মো. মোহসীন পারভেজ, কলাপাড়া রিপোর্টার্স ক্লাবের সাবেক দপ্তর সম্পাদক ও দৈনিক আমার সংবাদ প্রতিনিধ মো. ওমর ফারুক, দৈনিক ভোরের বার্তা প্রতিনিধি নয়ন অভিরাম গাইন ও সাংবাদিক দিবাকর সরকার। তারা স্থানীয় মুদি দোকান হতে আছিয়া বেগমের সারা মাসের খাবার বাবদ চালসহ যাবতীয় পন্য ক্রয় করে তার বাড়ি পৌঁছে দিয়ে আসেন।

বাড়ির আঙ্গিনায় এসব পন্য দেখে আছিয়া বেগম আবেগে আপ্লুত হয়ে পরেন। তার দু-চোখে খুশির অস্রু দেখতে পাওয়া যায়। আছিয়া বেগম কান্নাজড়িত কন্ঠে বলেন, আমার মত অসহায়কে যে ডাক্তার সাহায্য করেছে আমি তার দীর্ঘায়ু কামনা করি। আল্লাহ যেনো তার দানের হাতকে আরোও বাড়িয়ে দেয়। আপনারা যারা আমার সাহয্যে এগিয়ে এসেছেন আপনাদের উপরও আল্লাহর রহমত বর্ষিত হোক।
এবিষয়ে আছিয়া বেগমকে সহায়তাকারী, পরোপকারী ও মমতাময়ী কলাপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সাবেক সেই মহিলা ডাক্তার বলেন,

দুই মানসিক রোগী নিয়ে আছিয়া বেগমের জীবন কাহিনীর একটি সংবাদ গনমাধ্যমে প্রকাশিত হলে কলাপাড়ার খবর পেইজে দেখে আমার চোখে পানি চলে আসে। তখনই আমি সিদ্ধান্ত নেই তাদের ভরন-পোষণ ও চিকিৎসার দায়িত্ব আমি নিব।

আছিয়া বেগমের যাতে ভিক্ষা করা না লাগে তার সমস্ত ব্যবস্থা আমি করবো। তিনি মনে করেন, সমাজের প্রতিটি স্বচ্ছল মানুষ যদি অসহায়দের পাশে এসে দাঁড়াতো তাহলে এদেশে অসহায় বলে কেহ থাকতো না।

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category
© All rights reserved © 2024
ডিজাইন ও কারিগরি সহযোগিতায়: রায়তা-হোস্ট
tmnews71