এম.এস রিয়াদ, বরগুনা জেলা প্রতিনিধি: বরগুনা সদর উপজেলার বদরখালী ইউনিয়নের গুলিশাখালী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক আল মামুনের বিরুদ্ধে অনিয়ম, দূর্ণীতি ও সরকারি অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ পাওয়া গেছে।
এ ব্যাপারে এলাকাবাসীর পক্ষে ইব্রাহীমসহ একাধীক শিক্ষার্থীর অভিভাবক আল মামুনের বিরুদ্ধে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা বরাবর একটি লিখিত অভিযোগপত্র দাখিল করেন।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, ২০১৯ সালের জুন মাসে বিদ্যালয়ের দু’টি পুরাতণ আলমীরা ও বই বিক্রি করে অর্থ আত্মসাৎ করেন প্রধান শিক্ষক আল মামুন। ১৮-১৯ অর্থ বছরে প্রাকৃতিক দুর্যোগে ৫ হাজার এবং প্রাক প্রাথমিকের জন্য ১০ হাজার টাকা বরাদ্দ হলে সেই বরাদ্দকৃত টাকার মালামাল ক্রয় না করে তিনি অর্থ আত্মসাৎ করেন। প্রতি বছর ৫ম শ্রেণির সমাপণী পরীক্ষায় কৃতকার্য ছাত্র-ছাত্রীদের কাছ থেকে তিনি সনদ ও নম্বর ফর্দ বাবদ ১’শ টাকা করে আদায় করেছেন। এছাড়া আল মামুন বিদ্যালয়ের দু’টি গাছ কোন ধরণের বিধি বিধানেরর তোয়াক্কা না করেই ১১ হাজার টাকা বিক্রি করে সেই অর্থ এবং বিগত কয়েক বছরের স্লিপ বরাদ্দের অর্থ লোপাট করেন ।
সরেজমিনে গুলিশাখালি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৫ ম শ্রেণীর শিক্ষার্থী নার্গিস, মারিয়া, গিয়াস উদ্দিন, আঁখি, শাওন এবং মারিয়া আখতারের কাছ থেকে জানা যায়, প্রধান শিক্ষক আল মামুন বিদ্যালয়ে প্রাইভেট পড়িয়ে প্রতি শিক্ষার্থীর কাছে থেকে ৫’শ টাকা আদায় করেন।
তাদের কাছ থেকে আরও জানা যায়, প্রধান শিক্ষকের দেয়া নিয়মানুযায়ী ৫ ম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা রোল নম্বর এক থেকে শুরু করে সিরিয়াল অনুযায়ী প্রতিদিন একজন করে বাড়ি থেকে স্কুলে তার (প্রধান শিক্ষক আল মামুন) জন্য দুপুরের খাবার নিয়ে যেতে হত।
ওই বিদ্যালয়ের ২য় শ্রেণীর শিক্ষার্থী ফেরদৌস এর অভিভাবক ফাতেমা বেগম মুঠো ফোনে বলেন, আমার ছেলের দুই কিস্তি উপবৃত্তির ৬’শ টাকা পেয়েছি। সেখান থেকে মামুন স্যারকে ৩’শ টাকা দিতে হয়েছে। কারন মামুন স্যারের কথানুযায়ী ওই টাকা তাকে না দিলে পরবর্তীতে আর উপবৃত্তির টাকা পাবোনা। ঠিক একই কথা বললেন অপর দুই শিক্ষার্থী জান্নাতি ও জাকিয়ার দাদী রেনু বেগম।
জানতে চাইলে প্রধান শিক্ষক আল মামুন সকল অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ম্যানেজিং এবং পিটিএ কমিটি নিয়ে বরাদ্দকৃত অর্থ দিয়ে সকল কাজ করেছি। আমার বিরুদ্ধে এ অভিযোগ মিথ্যা। তবে টাকা নিয়ে শিক্ষার্থীদের প্রাইভেট পড়ানোর কথা তিনি স্বীকার করেন।
এ বিষয়ে বরগুনার জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা এম এম. মিজানুর রহমান বলেন, আমি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। এ ব্যাপারে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করলেই যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হবে।