প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাসে বিপর্যস্ত গোটা বিশ্ব। এই ভাইরাসের বিষাক্ত ছোবলে অসহায় হয়ে পড়েছে আমেরিকা, ব্রিটেন, ইতালি, স্পেন, ফ্রান্স ও ব্রাজিলের মতো দেশ।
এছাড়া আরও দুই শতাধিক দেশে একযোগে ধ্বংসযজ্ঞ চালাচ্ছে এই ভাইরাস। কোনও ধরনের প্রতিষেধক না থাকায় বিশ্বজুড়ে প্রতি মুহূর্তে বাড়ছে আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা। ভারতের চরম আকার ধারণ করেছে করোনা পরিস্থিতি।
এমন অবস্থায় সুখবর হল আগামী ১৫ আগস্ট ভারতের স্বাধীনতা দিবসের আগেই বাজারে আসতে পারে দেশটির তৈরি করোনার প্রথম টিকা। এই টিকার নাম ‘কোভ্যাক্সিন’।
‘ভারত বায়োটেক ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেড (বিবিআইএল)’-এর সহযোগিতায় ওই টিকা বাজারে আনছে ‘ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অব মেডিক্যাল রিসার্চ (আইসিএমআর)’।
বাজারে আনার আগে মানুষের উপর প্রয়োগ করে দেখার জন্য (‘ক্লিনিকাল বা হিউম্যান ট্রায়াল’) দেশের অন্তত ১২টি প্রতিষ্ঠানকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে বলে আইসিএমআর সূত্রের খবর।
গোটা বিশ্বে ইতিমধ্যেই করোনায় সংক্রমিত হয়েছেন ১ কোটিরও বেশি মানুষ। ভারতেও আক্রান্তের সংখ্যা ৬ লাখ ছাড়িয়ে গেছে। এখনও পর্যন্ত বিশ্বের কোথাও করোনার কোনও টিকা বাজারে আসেনি। বেশ কয়েকটি টিকার ক্লিনিকাল ট্রায়াল চলছে।
দেশের বিভিন্ন প্রান্তে প্রথম দেশীয় করোনা টিকার ক্লিনিকাল ট্রায়াল চালানোর জন্য বিশাখাপত্তনম, রোহতক, দিল্লি, পটনা, বেলগাঁও (কর্নাটক), নাগপুর, গোরখপুর, হায়দরাবাদ, গোয়া, আর্য নগর, কানপুর ও কাট্টানকুলাথুরের (তামিলনাড়ু) প্রতিষ্ঠানগুলোকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে বলে আইসিএমআর সূত্রের খবর।
ঢালাওভাবে ক্লিনিকাল ট্রায়াল শুরুর জন্য দেশের ওই প্রতিষ্ঠানগুলিকে চিঠি দিয়েছে আইসিএমআর। তাতে লেখা হয়েছে, “টিকা বানানোর জন্য সার্স-কভ-২ ভাইরাসের স্ট্রেন সংগ্রহ করা হয়েছিল আইসিএমআর-এর অধীনে থাকা পুণের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ ভাইরোলজি থেকে।
টিকার ক্লিনিকাল ট্রায়াল শুরুর আগে যা যা করণীয় আর ঢালাও ভাবে ক্লিনিকাল ট্রায়াল চালানোর জন্য যা যা করণীয়, বিবিআইএল-এর সহযোগিতায় সেই সবই করেছে ও করে চলেছে আইসিএমআর।”
আইসিএমআর-এর তরফে জানানো হয়েছে, খুব দেরি হলেও যাতে ১৫ আগস্টের মধ্যেই এই টিকা সকলের ব্যবহারের জন্য বাজারে আনা যায়, তার জন্য সব ধরনের ক্লিনিকাল ট্রায়াল দ্রুত শেষ করতে বলা হয়েছে দেশের ১২টি প্রতিষ্ঠানকে।
সেই ক্লিনিকাল ট্রায়াল চালানোর জন্য যে সরকারি অনুমোদন লাগে, দেরি না করে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোকে তা জোগাড় করে নিতে বলা হয়েছে।