বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরের বয়স দুই বছর বাড়িয়ে জাতীয় সংসদে বিল পাস করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (৯ জুলাই) সংসদ অধিবেশনে অর্থমন্ত্রীর অনুপস্থিতিতে পরিকল্পনামন্ত্রী আবদুল মান্নান ‘বাংলাদেশ ব্যাংক (সংশোধন) অ্যাক্ট-২০২০’ নামে বিলটি পাসের প্রস্তাব করলে তা কণ্ঠভোটে পাস হয়।
স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে সংসদ অধিবেশনে বিরোধী দল জাতীয় পার্টি ও বিএনপির সদস্যরা জনমত যাচাই-বাছাই কমিটিতে পাঠানোর প্রস্তাব করেন।
ওই প্রস্তাবের ওপর আলোচনায় অংশ নেন জাতীয় পার্টির কাজী ফিরোজ রশীদ, মুজিবুল হক চুন্নু, রওশন আরা মান্নান ও পীর ফজলুর রহমান এবং বিএনপির মো. হারুনুর রশীদ।
আলোচনায় অংশ নিয়ে বিরোধীদলীয় সদস্যরা বলেন, ‘একজন বিশেষ ব্যক্তিকে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর পদে রাখতে এই বিল আনা হয়েছে। অথচ ওই ব্যক্তি আর্থিক খাতে সংস্কারে ব্যর্থ হয়েছেন। এটি কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।’
তারা বলেন, বর্তমান গভর্নর ও আগের গভর্নর দুজনই দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ। তারা দায়িত্বে থাকাকালে বাংলাদেশ ব্যাংকের টাকা পাচার হয়েছে। সেই টাকা এখনো ফেরত আনা যায়নি। তাই বয়স না বাড়িয়ে নতুনদের সুযোগ দেওয়া উচিত।
জবাবে পরিকল্পনা মন্ত্রী এম এ মান্নান বলেন, বাংলাদেশে ব্যাংক বা কেন্দ্রীয় ব্যাংক আমাদের অর্থ ব্যবস্থার কেন্দ্রীয় স্তম্ভ। সময়ের পরিবর্তনের সাথে সাথে, অর্থনীতির পরিবর্তনের সাথে সাথে আমাদের বিশাল ব্যাপ্তি তার সঙ্গে তুলনা করে সকল ক্ষেত্রেই পরিবর্তন করতে হবে।
তিনি বলেন, আমাদের পূর্বের গভর্নর যারা ছিলেন, তারা সবাই অত্যন্ত ভালো মানুষ ছিলেন, প্রাজ্ঞ ও অভিজ্ঞ ছিলেন। এমনকি সরকারি কর্মচারীদের আগে বয়স ছিল ৫৭ বছর। আমরা যখন চাকরি করতাম তখন ৫৭ ছিল। এখন সরকার পরিবর্তন করে বাড়ানো হয়েছে।
পরিকল্পনামন্ত্রী আরো বলেন, বিচারপতিদের ৬৭ বছর পর্যন্ত উপভোগ করছেন। সুতরাং সময়ের পরিবর্তনে স্বাস্থ্য ভালো হচ্ছে। অনেক বেশি নতুন নিয়ম কানুন আসছে। এটির সঙ্গে অ্যাডজাস্ট করতে গিয়ে আইনকানুন পরিবর্তন করতে হয়।
তিনি বলেন, গভর্নরের বয়স বাড়ানো কোনো ব্যক্তির বিষয় নয়। এখন থেকে যারা গভর্নর হবেন, এই সংসদ পুনরায় পরিবর্তন না করা পর্যন্ত এই ৬৭ বছর থাকবে।
বিদ্যমান আইনে বলা হয়েছে, বর্তমানে বাংলাদেশ ব্যাংক অর্ডার অনুযায়ী ৬৫ বছরের বেশি বয়স হলে কেউ গভর্নর পদে থাকতে পারবেন না। তাই বর্তমান গভর্নর ফজলে কবিরের মেয়াদ বৃদ্ধির সুযোগ নেই।
কিন্তু কভিড-১৯ মহামারির এই সময় ফজলে কবিরকে আরো দুই বছর রাখতে চায় সরকার। মূলত সে কারণেই আইন সংশোধনের প্রয়োজন।
গত ২ জুলাই ছিল ফজলে কবিরের শেষ কর্মদিবস। ৬৫ বছর পূর্ণ হওয়ায় তাকে পুনঃনিয়োগ দিতে পারেনি সরকার।