January 3, 2025, 10:38 pm

চান্দিনায় কোরবানী ঈদে মৌসুমী পেশার ‘শান ম্যান’ ;কালের আবর্তে এখন আর দেখা যায়না।

আলিফ মাহমুদ কায়সার কুমিল্লা প্রতিনিধি ঃ
  • Update Time : Monday, July 13, 2020,
  • 166 Time View

শ্রমজীবী মানুষের হাজার পেশার ভিড়ে আরেকটি পেশা ‘শান ম্যান’। পুরোনো দা, বটি, শীলপাটা, ছুরিতে শান দেয়া তাদের কাজ। বিশেষ করে কোরবানির ঈদের আগে তাদের বেশি চোখে পড়ে।

বাসার আশপাশের অলি-গলিতে আপনার শান ম্যানদের দেখা হতে পারে কিংবা পরিচিত হতে পারে তাদের কণ্ঠস্বর- ‘এই দাও ধার, বটি ধার, শীলপাটা ধার, লাগবো…’। এই কমন বাক্যটি চেঁচিয়ে বলতে থাকে তারা।
কিছুদিন পরই কোরবানী ঈদ। ঈদকে সামনে রেখে চলছে প্রস্তুতি। তার মধ্যেই ব্যস্ততা বেড়েছে কামার পল্লীতে। টুং টাং শব্দের সঙ্গে নির্ঘুম বসবাস করছেন কামার শিল্পীরা। কোনো এক সময়ে চান্দিনার প্রতিটি অঞ্চলে শান দেয়ার জন্য বাড়ি বাড়ি ঘুরতেন কামাররা। কিন্তু কালের আবর্তনে এখন আর তা দেখা যায় না।

তেমনি হঠাৎ দেখা হয়ে যাওয়া চান্দিনার উপজেলার বিভিন্ন অলিগলি,প্রত্যন্ত অঞ্চলে মোড়ে গলা ফাটিয়ে ডাকছিলেন মতিউর নামের এক ব্যাক্তি। তার সঙ্গে কথা হলে তিনি জানান, তার বাড়ি সিলেটের হবিগঞ্জ জেলার বানিয়ারচং। ১৫ বছর ধরে তিনি এ পেশায় রয়েছেন। থাকেন বিভিন্ন স্কুলের বারান্দায়।
তিনি প্রতি কোরবানির ঈদে চান্দিনায় আসেন। এক সপ্তাহ ধরে চান্দিনার বাড়িতে বাড়িতে ছুরি, দা, কাঁচি, বটি ও শিল-পাটা ধার দেওয়ার কাজ করেন।
ঈদে অনেক পশু জবাই হয়। এ সময় প্রায় প্রতিটি পরিবারেই ছুরি-বটি, শিল-পাটা ধার দেওয়ার হিড়িক পড়ে। ফলে বছরের অন্যান্য সময়ের চেয়ে ঈদের আগের কয়েকদিন আয়ও ভালো হয়। অন্যান্য সময় ৩০/৪০ টাকা নেওয়া হলেও এখন তারা শান দিতে নেয় ৫০ থেকে ১০০ টাকা তবে স্থানভেদে টাকার অঙ্কের পার্থক্য হতে পারে বলে তিনি জানান।
কিন্তু এবার মহামারি করোনা ভাইরাস সংক্রমনের কারনে তার রোজগার কমে যাওয়া দুই ছেলে, স্ত্রী স্বজনদের নিয়ে বিপাকে রয়েছেন।
দিনরাত সমান তালে মতিউর রহমানের এখন দা, বটি, ছুরি, চাকু, কুড়াল, চাপাতি তৈরি এবং শান দিতে না পারায় জীবন কাটছে দুর্বিষহ।
প্রাচীন কালে যেমন তাদের আয় হতো কিন্তু বর্তমানে আধুনিকতা ছোয়া তাদের শান দেয়া বিলুপ্ত হয়ে গেছে।
পুরোনো সেই ঐতিহ্যকে ফিরিয়ে আনতে কামারদের পাশাপাশি এসব শান দেয়া মানুষদের মূল্যায়ন করা উচিত বলে মনে করেন সচেতন নাগরিক।

বছরজুড়ে তারা অবহেলিত থাকলেও, কোরবানির ঈদের আগে গৃহিণীদের কাছে তাদের কদর বেড়ে যায়। কারণ এই ঈদে গরু জবাইয়ের জন্য দা, ছুরি, চাপাতিতে ধার থাকা জরুরি বলে মনে করেন সেই সাথে তাদেরকে কোরবানি মৌসুমে দেখতে খুবই ভালো লাগার প্রয়াস ব্যক্ত করেন গৃহিণীরা।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
© All rights reserved © 2024
ডিজাইন ও কারিগরি সহযোগিতায়: রায়তা-হোস্ট
tmnews71