তারকাদের ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম, টুইটারসহ ইউটিউবেও তাদের নিয়ে বহু কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য চোখে পড়ে, যা শিল্পীর মানসিক অবস্থাকে বিপর্যস্ত করে। বাংলাদেশে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলোর ভেতর ফেসবুক সবচেয়ে জনপ্রিয়। তাই বাংলাদেশের তারকারা সবচেয়ে বেশি নিগৃহীত হন ফেসবুকে। অনেকে কেবল বুলিংয়ের শিকার হয়ে কাজের আগ্রহও হারান।
বাংলাদেশ ও ভারতের জনপ্রিয় অভিনেত্রী জয়া আহসানের মতে, কাজের আগ্রহ হারানোটা খুবই স্বাভাবিক। তিনি বলেন, ‘আজেবাজে মন্তব্যের কোনো সীমা নেই। তারা পরিবার, মা-বাবা এমনকি জন্ম নিয়ে পর্যন্ত কথা বলে। কিছুই বাদ রাখে না। যেভাবে আক্রমণাত্মক মন্তব্য করা হয়, তাতে হীনম্মন্যতা তৈরি হয়। আমার মতো শক্ত মানসিকতার মানুষ তো সবাই না।’
জয়া আহসান জানালেন, তার ধারণা, বুলিং তার সঙ্গে অনেক বেশি হয়।
জয়া বলেন, তিনি যে কী পরিমাণ বুলিংয়ের শিকার হয়েছেন, তা তার যেকোনো পোস্টের মন্তব্যের ঘরে গেলেই টের পাওয়া যাবে। বলেন, ‘আমি তো দুই দেশেই কাজ করি। কিন্তু বাংলাদেশে যে পরিমাণ বুলিংয়ের শিকার হই, তা ভয়াবহ। এখন আর এসব গায়ে মাখাই না।
তবে যখন ভারতের অনুসারীরা আমাদের দেশের মানুষকে উদ্দেশ করে বলেন, তোমরা তো তোমাদের দেশের নারীদেরই সম্মান দিতে জানো না, তোমাদের দেশের পুরুষদের মানসিকতা কেমন, মন্তব্য দেখলে বোঝা যায়, এসব দেখে খুব কষ্ট পাই।’
জয়া আরও বলেন, ‘সাইবার বুলিং যে শুধু অশিক্ষিতেরা করছে তা কিন্তু নয়। আমাদের দেশে যাদের অনেকে আদর্শ মনে করি, সফল, উচ্চশিক্ষিত, এ রকম মানুষেরাও অনলাইনে আমাকে বুলিং করছে। হাতেনাতে প্রমাণও আছে। আমার প্রতিবেশীও আমাকে, আমার পেশা আর কাজ নিয়ে আজেবাজে মন্তব্য করেছে।’
তারকাদের অনেকে আক্ষেপ করে বলেছেন, সরকারের বিরুদ্ধে কেউ কটূক্তি করলে সাইবার অপরাধ বিভাগ যত দ্রুত ব্যবস্থা নেয়, তারকাদের ক্ষেত্রে তা হয় না।
তারকারা মনে করেন, স্বপ্রণোদিত হয়ে ব্যবস্থা নিলে এই ধরনের অপরাধ কমে যায়।
পুলিশের সাইবার ক্রাইম বিভাগের ডিসি আ ফ ম আল কিবরিয়ার বলেন, ‘অভিযোগ পেলে বেশির ভাগ সময় আমরা ব্যবস্থা নিই। কিন্তু কোটি কোটি ফেসবুক আইডি রয়েছে। আর যেসব আইডি থেকে এসব করা হয়, তার বেশির ভাগই ভুয়া। তবে এসব শাস্তিযোগ্য অপরাধ। যে কেউ বুলিংয়ের শিকার হলে থানায় অভিযোগ করবেন। আমরা অবশ্যই ব্যবস্থা নেব।’