আজ ১০ মুহাররম, পবিত্র আশুরা। বিশ্ব মুসলিমের জন্য গভীর শোকাবহ দিন। আরবি ‘আশারা’ শব্দের অর্থ ১০। আর এ জন্যই হিজরি সনের প্রথম মাস মহররমের ১০ তারিখ আজকের দিনটিকে ‘আশুরা’ বলে অভিহিত করা হয়।
করোনাভাইরাস সংক্রমণে সৃষ্ট পরিস্থিতিতে এবার ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা কিছুটা নীরবেই দিনটি পালন করবে। নিষেধাজ্ঞার কারণে রাজধানী ঢাকা ও চট্টগ্রামে ঐতিহ্যবাহী তাজিয়া মিছিল বের হবে না। দিনটি উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক বাণী দিয়েছেন।
পবিত্র আশুরা উপলক্ষে বিভিন্ন ধর্মীয় সংগঠন রাজধানী ঢাকাসহ দেশব্যাপী নানা কর্মসূচি নিয়েছে। প্রশাসনের অনুমতি না থাকায় এবার ইমামবাড়ার হোসেনি দালান প্রাঙ্গণে তাজিয়া মিছিল হলেও তা বাইরে বের হবে না। এ ছাড়া স্বাস্থ্যবিধি মেনে মাতম-মর্সিয়ার আয়োজন করা হয়েছে ইমামবাড়ায়।
পবিত্র আশুরা উপলক্ষে আজ সারা দেশে সরকারি ছুটি। এ উপলক্ষে বিভিন্ন দৈনিক পত্রিকা বিশেষ নিবন্ধ প্রকাশ করবে। বাংলাদেশ বেতার, বাংলাদেশ টেলিভিশনসহ বিভিন্ন বেসরকারি রেডিও এবং স্যাটেলাইট টেলিভিশন চ্যানেল আশুরার তাৎপর্য তুলে ধরে বিশেষ অনুষ্ঠানমালা সম্প্রচার করবে।
গত ২৬ আগস্ট ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে পবিত্র আশুরার দিনে রাজধানীতে সব ধরনের তাজিয়া, শোক ও পাইক মিছিল নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়। চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের পক্ষ থেকেও বন্দরনগরে তাজিয়া মিছিল নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
ডিএমপির বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, বর্তমান করোনাভাইরাস সংক্রমণ পরিস্থিতিতে নাগরিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে পবিত্র আশুরা উপলক্ষে সব ধরনের তাজিয়া, শোক ও পাইক মিছিল নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়।
তবে ধর্মপ্রাণ নগরবাসী স্বাস্থ্যবিধি মেনে ইমামবাড়ায় ধর্মীয় অনুষ্ঠান পালন করতে পারবে। অনুষ্ঠানস্থলে দা, ছোরা, কাঁচি, বর্শা, বল্লম, তরবারি ও লাঠি বহন এবং আতশবাজি ও পটকা ফোটানো সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ থাকবে।
প্রসঙ্গত, হিজরি ৬১ সনের (৬৮০ খ্রিস্টাব্দ) ১০ মহররম ইরাকের কুফা নগরের অদূরে ফোরাত নদীর তীরে কারবালা প্রান্তরে ইয়াজিদ বাহিনীর হাতে সঙ্গী-সাথিসহ নির্মমভাবে শহীদ হন মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর দৌহিত্র ইমাম হুসাইন (রা.)। অন্যায়-অবিচারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে গিয়ে ইমাম হুসাইন (রা.)-এর আত্মত্যাগের এই ঘটনা ইসলামের ইতিহাসে সমুজ্জ্বল হয়ে আছে।