প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাস মহামারির শেষ কবে- বিশ্ব জুড়ে এ প্রশ্নের উত্তর এখনো অজানা হলেও এর মধ্যেই দেশে সময় ঘনিয়ে আসছে পৌরসভা নির্বাচন। গত ২০১৫ সালের ৩০ ডিসেম্বর থেকে শুরু হয়ে ২০১৬ সালের ১২ জানুয়ারি পর্যন্ত দেশের অধিকাংশ পৌরসভার নির্বাচন সম্পন্ন হয়। নিয়মানুযায়ী এ বছরের ডিসেম্বর মাসে এসব পৌরসভার মেয়াদ শেষ হবে। নির্বাচন কমিশনসূত্রে জানা যায়, মহামারি করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে (নিয়ন্ত্রনে থাকলে) এবং বড় কোন প্রাকৃতিক দূর্যোগ না হলে মেয়াদোর্ত্তীন পৌরসভাগুলো ডিসেম্বর ও জানুয়ারি মাসে পৌরসভা নির্বাচন হতে পারে।
আগামী বছরের মার্চ থেকে জুন মাস পর্যন্ত ধাপে ধাপে ইউপি নির্বাচন হতে পারে। ৪০ থেকে ৪৫ দিন সময় হাতে রেখে এসব পৌরসভা নির্বাচনের তফশিল ঘোষণা করবেন নির্বাচন কমিশন। এ বছরও পৌরসভা ও ইউপি নির্বাচন হবে দলীয় প্রতীকে।
বরগুনার বেতাগী পৌরসভার নির্বাচনে ইতোমধ্যে সম্ভাব্য প্রার্থীরা দৌড়ঝাঁপ শুরু করেছেন। সম্ভাব্য মেয়র, সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর ও কাউন্সিলর প্রার্থীরা করোনা পরিস্থিতির কারণে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে ভোটারদের সাথে কুশল বিনিময় এবং খোঁজ খবর করছেন। মহামারি করোনাকালীন সময় কেউ আবার বাড়ি বাড়ি গিয়ে ত্রান বিতরণ করছেন। তবে করোনার কারণে সম্ভাব্য প্রার্থীরা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে খোঁজ খবর নিতে দেখা গেছে। পৌরসভা নির্বাচনে মেয়র পদে দলীয় সমর্থনে যারা নির্বাচন করতে আগ্রহী তারা হলেন, আওয়ামী লীগ থেকে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি, সাবেক উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও বর্তমান পৌরসভার মেয়র আলহাজ্ব এবিএম গোলাম কবির।
তিনি বেতাগী পৌরসভাকে তৃতীয় শ্রেণি থেকে দ্বিতীয় শ্রেণি এবং দ্বিতীয় শ্রেণি থেকে প্রথম শ্রেণিতে রুপান্তর করেন। এ ব্যাপারে তিনি বলেন,‘ গত নির্বাচনের ইশতেহারের প্রায় আমি ৮০ শতাংশ কাজ করেছি। বঙ্গবন্ধু ভাস্কর্য, বঙ্গবন্ধু পৌর অডিটোরিয়াম, অত্যাধুনিক ডাক বাংলো, পৌরসভার সকল রাস্তাঘাট, ফায়ার সার্ভিস, কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারসহ ব্যাপক উন্নয়নের কাজ করেছি।’ তিনি আরো বলেন, দল ও জনগণ যদি সুযোগ দেয় তবে আমি অসমাপ্ত কাজগুলো সম্পন্ন করব।’ জেলা বিএনপি’র সহ-সভাপতি, সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান ও পৌরসভার মেয়র মো. শাহজাহান কবির দল সর্মথন দিলে দলীয় প্রতীকে নির্বাচন করবেন বলে মতামত ব্যক্ত করেন। তিনি বলেন,‘
নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠ নির্বাচন হলে , জনগণ আমাকে মূল্যায়ন করবে এবং বিপুল ভোটে জয়লাভ করব।’ এদিকে বেতাগী পৌর বিএনপি’র আহ্বায়ক ও সাবেক প্যানেল মেয়র মো. হুমায়ুন কবির মল্লিক দলীয় সমর্থন নিয়ে নির্বাচনে অংশ নিতে মতামত প্রকাশ করেন। তিনি গত নির্বাচনেও বিএনপি দলীয় প্রতীকে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেন। তিনি বলেন,‘ দল ও জনগণ আমাকে সমর্থন দিলে এবং নিরপেক্ষ নির্বাচন হলে আমি জয়লাভ করব। ’ তিনি আরো বলেন,‘ পৌরসভার জনগণের প্রতি আমার শতভাগ আস্থা ও বিশ্বাস রয়েছে এবং নির্বাচিত হলে জনসাধারণের সকল প্রকার নাগরিক সুযোগ সুবিধা প্রদান করা হবে।’
উপজেলা জাতীয় পার্টির সভাপতি মো. নাসির উদ্দিন পিযুস দলীয় প্রতীকে নির্বাচনে অংশগ্রহণে আশা প্রকাশ করেছেন। তিনি গত নির্বাচণেও জাপা দলীয় সমর্থনে মেয়র পদে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেন। তিনি বলেন,‘ নির্বাচন সুষ্ঠ ও নিরপেক্ষ হলে আমি জয়লাভ করব এবং আমার জনগেণের প্রতি পূর্নবিশ্বাস আছে। জনগণ আমাকে মূল্যায়ন করে নির্বাচিত করবে।’ এছাড়া উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ও বর্তমান উপজেলা আওয়ামী যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মো. মাহমুদুল হাসান মহসিন মেয়র পদে নির্বাচনে মতামত ব্যক্ত করেন।
তিনি বলেন,‘ জাতি, ধর্ম ও বর্ণ নির্বিশেষে সকল শ্রেণির জনগণের প্রতি পূর্ণ আস্থা ও বিশ্বাস রয়েছে। কথায় নয়, বরং আমি কাজে বিশ্বাস করি এবং নির্বাচিত হলে মুরব্বীদের যথোপযুক্ত সম্মান প্রতিষ্ঠা করব। এছাড়া আরো কিছু স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে পারে বলে জানাগেছে।