করোনার কারণে বন্দি ৬ মাস। এই ৬ মাসে কী ঘোড়ার ডিমটা করেছি! করোনা নিয়ে টেনশান করেছি আর মিনুকে যত্ন করেছি। ওর কিডনি ধীরে ধীরে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। সুতরাং ওর যত্ন প্রথম প্রায়োরিটি।
ওর বিছানায় নতুন নতুন চাদর বিছানো, বালিশের কভার বদলে দেওয়া, ওকে ডিশেড করা, আদর করা, দুবেলা জল পাল্টে দেওয়া, লিটার বক্স সাফ করা, নখ কেটে দেওয়া, বারান্দায় রকিং চেয়ারে বসিয়ে দেওয়া, পথ্য খাওয়ার জন্য দিনে কয়েকবার তার হাত পায়ে ধরা, কিডনি কেয়ার ফুড খেতে না চাইলে যা খেতে চায় অগত্যা তাই দেওয়া, রাত দুটোর সময় হঠাত তার মাছ খেতে ইচ্ছে করলো তো উঠে মাছ সেদ্ধ করে কাঁটা বেছে খাইয়ে দেওয়া।
আরো হাজার রকম কাজ। নিজের জন্য ঘোড়ার ডিম, মিনুর টেক কেয়ারটা কোনও ডিম টিম নয়।
৬ মাস একাই ঘরের কাজ করছি। কুকিং, ক্লিনিং, ডাস্টিং, মপিং, ডিসিং, ওয়াশিং। সব। এসবের মধ্যে কিছু রান্না শিখেছি গত ছ’মাসে। আমি বেসিক কিছু রান্না করতে জানি। কাজ চলার মতো।
কিন্তু রন্ধন শিল্পী নই। এই ক’মাসে আমার রান্না জানার লিস্টে কিছু যোগ হয়েছে, যেমন ভূমধ্যসাগর তীরের স্ন্যাক্স হমস, তিলের পেস্ট আর কাবুলি চানা বা চিক পী দিয়ে বানাতে হয়।
এটায় এখন আমি এক্সপার্ট বলা চলে। বানাতে শিখেছি রসগোল্লা, রসমালাই, ডিমের পুডিং, চিংড়ির মালাইকারি, আলু ভর্তা, মাছ ভর্তা। আজ ওভেনে ভ্যানিলা স্পঞ্জ কেক বানিয়েছি।
ওটিজি ওভেনখানা চার বছর ধরে পড়ে আছে, আজ উদবোধন করলাম। খুব একটা জঘন্য হয়নি কেক। গেলা যায়। এইসব শিখে আমি রীতিমত উত্তেজিত।
এখন চলবে গ্রিল ট্রিল করা। আমি খাদ্য রসিক মানুষ। খাদ্য রসিকদের তো বেরসিক প্রকৃতি ডায়বেটিস রোগ দান করে। এভাবেই আছি। টেনশানে উত্তেজনায়, আশায় হতাশায়।