অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেছেন, বিশ্ব ব্যাংক একটি আন্তর্জাতিক আর্থিক প্রতিষ্ঠান। তারা যখন কোনো দেশ সম্পর্কে বা কোনো বিষয় নিয়ে তথ্য উপস্থাপন করে, সঙ্গত কারণেই এটি সবাইকে প্রভাবিত করতে পারে। গতকাল (বৃহস্পতিবার) বাংলাদেশের মোট দেশজ উৎপাদনের প্রবৃদ্ধির হার (জিডিপি) নিয়ে বিশ্বব্যাংক যে পূর্বাভাস দিয়েছে তা বাংলাদেশের অর্থনীতির বর্তমান উত্তরণের সঙ্গে সামঞ্জস্যহীন।
বৃহস্পতিবার প্রকাশিত বিশ্ব ব্যাংকের দক্ষিণ এশিয়া ইকনোমিক ফোকাস ফল ২০২০ রিপোর্টের প্রতিক্রিয়ায় অর্থমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, আমাদের জিডিপি সম্পর্কে এবার যে নাম্বারগুলো বলেছেন তারা সেগুলো করোনার প্রভাবে অর্থনীতির স্বাভাবিক গতি শ্লথ হওয়ার শুরু থেকেই বলে আসছে এবং সেই একই জায়গাতেই তারা এখনও আছে।
তিনি বলেন, আমাদের অর্থবছরের তিন মাস পার হয়ে গিয়েছে, এখনও নয় মাস সময় রয়েছে। করোনার প্রভাবে যে শ্লথ গতি অর্থনীতিতে তৈরি হয়েছিল সেটি অনেকটা স্বাভাবিক। স্বাস্থ্য ও মহামারী পরিচালন ব্যবস্থার ওপর উল্লেখযোগ্য চাপ সত্ত্বেও সরকারের উপযুক্ত অর্থনৈতিক প্রণোদনা ও সামাজিক সুরক্ষা ব্যবস্থা অর্থনীতিকে সুসংহত করেছে, দরিদ্র ও দুর্বলদের জন্য মৌলিক সেবা ও পণ্যাদি নিশ্চিত করেছে। অভ্যন্তরীণ বেসরকারি ও সরকারি ব্যয়, বিনিয়োগ, রফতানি এবং রেমিটেন্সসহ অর্থনীতির প্রায় সব খাত বেশ সক্ষম অবস্থানে রয়েছে।
বৃহস্পতিবার প্রকাশিত বিশ্ব ব্যাংকের দক্ষিণ এশিয়া ইকনোমিক ফোকাস রিপোর্টে বাংলাদেশের জিডিপিতে চলতি ২০২০-২১ অর্থবছরে প্রবৃদ্ধি ১ দশমিক ৬ শতাংশ হবে বলে পূর্বাভাস দেয়া হয়েছে। ২০২১-২২ অর্থবছরে বাংলাদেশে জিডিপি প্রবৃদ্ধি হতে পারে ৩ দশমিক ৪ শতাংশ। করোনা মহামারীর প্রভাবে দক্ষিণ এশিয়া নজিরবিহীন অর্থনৈতিক মন্দা পরিস্থিতির দিকে এগিয়ে যাচ্ছে বলেও উল্লেখ করা হয় ওই প্রতিবেদনে।
অর্থমন্ত্রী আরও বলেন, আমরা সবাই জানি যে তাদের প্রক্ষেপণের বৈশিষ্ট্যই হল অত্যন্ত রক্ষণশীল পদ্ধতি। বিশ্ব ব্যাংকের এ যাবৎকালের সব প্রক্ষেপণ যদি কেউ একটি তালিকা করে তাহলে দেখা যাবে যে তারা যে প্রক্ষেপণগুলো করে তা বাস্তবতা হতে অনেক দূরে! আমরা বিশ্বাস করি তারা এবারো সেই গতানুগতিক ধারার একটি বিবৃতি প্রকাশ করেছেন। আমরা আমাদের সক্ষমতার নিরিখে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করি এবং তা অর্জন করি। অর্জন করে বারবার প্রমাণ করতে হয় আমরা সঠিক। এবারও আমরা কাঙ্ক্ষিত প্রবৃদ্ধি অর্জন করে প্রমাণ করব যে আমাদের লক্ষ্যমাত্রাই সঠিক। সাম্প্রতিক সময়ে রেমিটেন্স বাড়লেও এটি সাময়িক মনে করছে অনেকে। বৈধপথে রেমিটেন্স প্রেরণ উৎসাহিত করার জন্য আমরা যখন প্রণোদনার ব্যবস্থা করেছি তখন অনেকেই বলেছিল রেমিটেন্সে এর কোনো প্রভাব পড়বে না। কিন্তু বাস্তবতা হল প্রণোদনার ফলে রেমিটেন্স প্রবাহ বেড়েছে।