অতিরিক্ত আঘাতের কারণেই যুবক রায়হান উদ্দিনের (৩০) মৃত্যু হয়েছে। বৃহস্পতিবার (১৫ অক্টেবার) দ্বিতীয় ময়নাতদন্ত শেষে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান সিলেট এমএজি ওসমানি মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ফরেনসিক বিভাগের প্রধান ডা. শামসুল ইসলাম।
তিনি বলেন, রায়হানের শরীরে অসংখ্য আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে। তাকে প্রচণ্ড মারধর করা হয়েছে। এ কারণেই অতিরিক্ত আঘাতে তার মৃত্যু হতে পারে বলে ধারণা ওই চিকিৎসকের। অবশ্য ময়নাতদন্তের রিপোর্ট হাতে পাওয়ার পর বিস্তারিত জানা যাবে।
এ দিন দ্বিতীয়বার ময়নাতদন্ত শেষে রায়হানের মরদেহ বিকেলে আখালিয়া নবাবী মসজিদ সংলগ্ন কবরস্থানে দাফন করা হয়।
এর আগে বৃহস্পতিবার সকালে জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মেজবাহ উদ্দিন, সজিব আহমেদ, পিবিআই তদন্ত কর্মকর্তা মাহিদুল ইসলাম, স্থানীয় কাউন্সিলর মখলিছুর রহমান কামরানের উপস্থিতিতে কবর থেকে মরদেহ উঠায় পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) তদন্ত দল। পরে ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ সিলেট ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ মর্গে নেওয়া হয়।
দ্বিতীয়বার ময়নাতদন্তের জন্য ফরেনসিক বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ওসমানী মেডিক্যাল কলেজের সহকারী অধ্যাপক ডা. শামসুল ইসলামকে প্রধান করে তিন সদস্যে বোর্ড গঠন করা হয়। বোর্ডের অন্য সদস্যরা হলেন- প্রভাষক ডা. দেবেস পোদ্দার, প্রভাষক ডা. আবদুল্লাহ আল হেলাল।
গত রোববার (১১ অক্টোবর) রায়হান উদ্দিন নিহত হন। পুলিশের দাবি, ছিনতাইয়ের অভিযোগে নগরীর কাষ্টঘর এলাকায় গণপিটুনিতে রায়হান মারা যান। কিন্তু নিহতের পরিবার ও স্বজনদের অভিযোগ, ফাঁড়িতে পুলিশের নির্যাতনে রায়হান নিহত হন।
মারা যাওয়ার পর রায়হানের শরীরে বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়। তার হাতের নখও উপড়ানো ছিল। এ ঘটনার পর পুলিশ হেফাজতে নির্যাতন করে রায়হানকে হত্যার অভিযোগ এনে নিহতের স্ত্রী কোতোয়ালি থানার হত্যা মামলা দায়ের করেন।
সোমবার (১২ অক্টোবর) এ অভিযোগে পুলিশের ৩ সদস্যের তদন্ত কমিটির সুপারিশে ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই আকবরসহ ৪ জনকে সাময়িক বরখাস্ত ও ৩ জনকে প্রত্যাহার করা হয়।
সাময়িক বরখাস্ত হওয়া অন্য পুলিশ সদস্যরা হলেন- বন্দরবাজার ফাঁড়ির কনস্টেবল হারুনুর রশিদ, তৌহিদ মিয়া ও টিটু চন্দ্র দাস। প্রত্যাহার হওয়া পুলিশ সদস্যরা হলেন- এএসআই আশেক এলাহী, এএসআই কুতুব আলী ও কনস্টেবল সজিব হোসেন।