ওবায়দুল কাদেরের উপন্যাসে সিনেমার শুটিং ফের শুরু
দীর্ঘদিন পর আবারো বড় পর্দায় দেখা যাবে ফেরদৌস-পূর্ণিমা জুটিকে। সাথে আছেন ওপার বাংলার জনপ্রিয় অভিনেত্রী ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের উপন্যাস অবলম্বনে নির্মিত সিনেমা গাঙচিলে একসাথে দেখা যাবে তাদের। গত বছর শুটিং শুরু হলেও নানা জটিলতায় শুটিং পিছিয়েছে এই সিনেমার। সাতমাস বিরতির পর বিএফডিসিতে শুরু হয়েছে এর শেষ লটের শুটিং।
গাঙচিলের শুটিংয়ের ফাঁকেই নিউজ টোয়েন্টিফোরের রিপোর্টার ফাতেমা কাউসারের সাথে আড্ডায় মেতে ওঠেন ফেরদৌস। কথা বলেন, করোনা মহামারির এই সাত মাসের অভিজ্ঞতা, সিনেমা নিয়ে তার ভাবনা ও বর্তমান সিনেমার অবস্থা নিয়ে।
১..দীর্ঘদিন পর আবারো লাইট ক্যামেরা অ্যাকশনে ফিরেছেন অনুভূতি কেমন?
ফেরদৌস: এই সিনেমায় মানুষের কথা রয়েছে, রয়েছে ঘূর্ণিঝড় জলোচ্ছ্বাসের কথাও। যেটা আমাদের নিত্যনৈমিত্তিক ব্যাপার। আমি এই প্রথমবার সাংবাদিক চরিত্রে অভিনয় করছি। আমার সাথে পূর্ণিমা, ঋতুপর্ণা রয়েছে। সব মিলিয়ে আমার মনে হচ্ছে দর্শকরা পছন্দ করবে। সময় উপযোগী গান, চিত্রনাট্য খুব ইন্টারেস্টিং। সবচেয়ে বড় ব্যাপার আমাদের মন্ত্রী মহোদয় ওবায়দুল কাদেরের উপন্যাস অবলম্বনে এই সিনেমা নির্মিত হচ্ছে। আশা করছি ভালো কিছু হবে।
৪…আপনি জার্নালিজম নিয়ে পড়াশুনা করেছেন নিশ্চই এই চরিত্র ফুটিয়ে তুলতে অনেকটা সহজ হয়েছে?
ফেরদৌস: ক্যারিয়ারের শুরু থেকেই প্রচুর সাংবাদিকের সাথে বন্ধূত্ব। তাদেরকে মাথায় রেখেছি। তবে এখনতো ইলেকট্রনিক মিডিয়ার যুগ সেই ভাবেই উপস্থাপনের চেষ্টা করছি যতটুকু সম্ভব হচ্ছে। ভালো লাগছে নিজের চিরচেনা চরিত্রে কাজ করতে।
৫…সাত মাস পর হল খুলেছে কী মনে হয় আবারও কি হলে দর্শক ফিরবে?
ফেরদৌস: ভালো লাগছে যে হল খুলেছে। তবে হল খুললেই যে এই মুহূর্তে দর্শক সাহস করে হলে যাবে আমার তেমনটি মনে হয় না। অর্ধেক টিকিট বিক্রির একটা ব্যাপার রয়েছে; শুনলাম সে হিসেবে যারা বড় বাজেটের সিনেমা নির্মাণ করেছেন তারা তাদের লগ্নির কথা চিন্তা করে হয়তো এই মুহূর্তে সিনেমা মুক্তি দেবে না। এ বছর আমার মনে হয় বিগ বাজেটের সিনেমা মুক্তি পাবে না।
৬…. আপনারও বেশ কয়েকটি সিনেমা রেডি আছে সেগুলো মুক্তির ব্যাপারে কী ভাবছেন?
ফেরদৌস: আগে দেখি দর্শক হলে কতটা যায় তারপর সিদ্ধান্ত নেব।
৭…আমাদের দেশের প্রেক্ষাপটে ওটিটি প্ল্যাটফর্ম নিয়ে আপনি কতটা আশাবাদী?
ফেরদৌস: ভীষণভাবে আশাবাদী। যে কোনো নতুন কিছুর সাথে পথ চলতে আমি পছন্দ করি। আমার মনে হয় নেক্সট জেনারেশন ফিল্ম বলতে আমরা যা বুঝি সেটা ওটিটি প্ল্যাটফর্ম। তবে যে গুলো বড়পর্দার জন্য নির্মিত সিনেমা সেগুলো হলে মুক্তি পেলেই ভালো। কারণ সিনেমা হলে সিনেমা দেখার মজাই আলাদা। আবার আমি এও বলব ওটিটির বিকল্প নাই। এই করোনা মহামারীতেই সেটা আমরা বুঝেছি। মানুষ বিনোদন চায়। আমি নিজের অভিজ্ঞতায় দেখেছি এই সাত মাসে মানুষ অনেক সিনেমা দেখেছে।
৮..করোনা মহামারির এই সময় আমাদের নতুন অনেক অভিজ্ঞতা হয়েছে। আপনার অভিজ্ঞতা জানতে চাই
ফেরদৌস: প্রকৃতি হচ্ছে আয়নার মতো। প্রকৃতিতে আমি নিজের প্রতিবিম্ব দেখি। সো আমরা প্রকৃতির সাথে যেমন ব্যবহার করব প্রকৃতিও আমাদের সাথে সে রকম প্রতিদান দেবে। আমি যদি প্রকৃতিকে ধ্বংস করি প্রকৃতিও আমাদের ধ্বংস করে দেবে। এটাই আমার কাছে সবচেয়ে বড় শিক্ষা মনে হয়।
৯…লক ডাউনের সময়টা আপনি কীভাবে কাজে লাগিয়েছিলেন?
ফেরদৌস: পরিবারের কোনো বিকল্প নেই। পরিবারকে সময় দিয়েছি। বাচ্চাদের সময় দিয়েছি। স্ত্রী, মাকে সময় দিয়েছি। লকডাউনের সময় ফোনে বন্ধু বান্ধবের সাথে কথা বলেছি। আমি চেষ্টা করেছি সরকারি বিধি-নিষেধ মেনে চলতে। যখন আবার একটু ছাড় ছিল তখন নিয়ম মেনে মাঝে, মাঝে বের হয়েছি।
১০…বিএফডিসিতে বিভিন্ন সংগঠন এই করোনাকালীন সময়ে নানা কারণে আলোচনায়-সমালোচনায় ছিল। নিজেদের মধ্যে যে বিরোধ সেটা নিয়ে আপনার মতামত জানতে চাই।
ফেরদৌস: যেকোনো সমিতির মূল লক্ষ্য কল্যাণ করা। শিল্পী সমিতিরও মূল লক্ষ্য নিজেদের কল্যাণ করা। শিল্পীদের পাশে থেকে সহায়তা করা। করোনার মতো সময়ে মানুষের পাশে দাঁড়ানো। এফডিসির মধ্যে অনেক কিছুই ঘটতে পারে। আমার মনে হয় সেটা ফলাও করে প্রচার করার দরকার নেই। আমি যদি কারও বদনাম করি সেটা আমার গায়েইএসে পড়বে। দিস ইজ মাই ফ্যামিলি। প্রয়োজনে নিজেরা বসে নিজেদের সমস্যার সমাধান করব।
১১..ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত এবং পূর্ণিমার সাথে একসাথে কাজের অভিজ্ঞতা জানতে চাই।
ফেরদৌস: আমি দুই বাংলার অভিনেতা। আমার সাথে দুজনের অনেক সিনেমা হয়েছে। দুজনকেই এই সিনেমায় খুব সুন্দরভাবে নির্মাতা নইম ইমতিয়াজ নিয়ামুল খুব সুন্দরভাবে প্রেজেন্ট করেছেন। দুজনেই আমার খুব ভালো বন্ধু। পূর্ণিমার সাথে আমার বোঝাপড়াটা অনেক গভীর। আমরা যখন একসাথে এক মঞ্চে বা ক্যামেরার সামনে দাঁড়াই আমি বুঝি ও কী করবে। আবার ওরও আমার উপর সেই ভরসা আছে। আর ঋতুর কাছ থেকে তো আমরা এখনো অনেক কিছুই শিখি।