পরীক্ষার সময় শিক্ষার্থীদের হলে থাকার বিষয়ে শিক্ষার্থীদের চলমান আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) উপাচার্য (ভিসি) অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান বলেছেন, ‘এটি উপর মহলের (সরকার) সিদ্ধান্তের বিষয়। এ ক্ষেত্রে আমরা চাইলেই বিচ্ছিন্নভাবে কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়ার সুযোগ নেই।’
আজ দুপুরে হল খোলার দাবিতে ভিসির সঙ্গে বৈঠক করে ছাত্রলীগের ঢাবি শাখা। ছাত্রলীগ নেতাদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে এসব কথা বলেন উপাচার্য। বৈঠকে উপস্থিত একাধিক ছাত্রলীগ নেতা বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. এ কে এম গোলাম রব্বানী, ঢাবি ছাত্রলীগের সভাপতি সনজিত চন্দ্র দাস, সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসাইন, কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সাদ বিন কাদের চৌধুরী, উপবিজ্ঞানবিষয়ক সম্পাদক সবুর খান কলিন্স প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
বৈঠক সূত্রে জানা যায়, ছাত্রলীগ নেতারা তাদের দাবির পক্ষে বিভিন্ন যুক্তি উত্থাপন করেন। এ সময় ছাত্রলীগ নেতারা বলেন, করোনার সময় সবকিছুই স্বাভাবিকভাবে চলছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্যক্রমও স্বাভাবিক। শুধু ক্যাম্পাস বন্ধ। এ ক্ষেত্রে শুধু যাদের পরীক্ষা হবে তাদের বিষয়ে হলে থাকার সিদ্ধান্ত নেওয়া যেতে পারে।
এর জবাবে উপাচার্য বলেন, কোনোভাবেই হল খোলার সিদ্ধান্ত আমরা নিতে পারি না। এটা জাতীয় বিষয়। এর সিদ্ধান্ত নেবে সরকার। এ সময় ছাত্রলীগ নেতারা শিক্ষার্থীদের ওপর পরীক্ষার চাপ কমানোর দাবি জানান।
এর জবাবে উপাচার্য অধ্যাপক আখতারুজ্জামান বলেন, আমরা কোনো বিভাগকে পরীক্ষার বিষয়ে চাপ দিচ্ছি না। তারা যদি শিক্ষার্থীদের থাকার ব্যবস্থা করে পরীক্ষা নিতে পারে তবে সেটা তাদের বিষয়। ভিসির সঙ্গে বৈঠককালে প্রক্টর অধ্যাপক ড. এ কে এম গোলাম রব্বানী সবকিছু নোট করে রাখেন।
বৈঠক শেষে ঢাবি ছাত্রলীগের সভাপতি সনজিত চন্দ্র দাস বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন হল বন্ধ রেখে পরীক্ষা নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। সে কারণে আমরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ এর আগে উপাচার্যকে স্মারকলিপি দিয়েছি। আমরা জোর দাবি জানাই, যদি পরীক্ষা নিতেই হয় তাহলে অবশ্যই হল খুলে পরীক্ষা নিতে হবে। এ ক্ষেত্রে যারা পরীক্ষা দিবে তাদের আইডি কার্ড দেখে হলে প্রবেশের অনুমতি দেওয়া যেতে পারে। আর যদি হল খোলা সম্ভব না হয় তাহলে প্রশাসন যেন একটি যৌক্তিক শিক্ষার্থীবান্ধব কোনো সমাধান খুঁজে বের করে।
সনজিত চন্দ্র আরো বলেন, আমাদের সাধারণ শিক্ষার্থী ভাইবোনেরা যাতে কোনো প্রতিকূলতায় না পড়ে। উপাচার্য স্যার আমাদের আশ্বস্ত করে বলেছেন, যারা পরীক্ষা দিবে তাদের বিষয়টি তাঁরা বিবেচনায় নেবেন। আমরা আশা করি, তারাও আমাদের সাধারণ শিক্ষার্থীদের আবেগ-অনুভূতিকে বিবেচনায় এনে যৌক্তিক সিদ্ধান্ত নেবেন।
বৈঠকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. আখতারুজ্জামান বলেন, ‘আমরা তোমাদের মানবিক দাবির সঙ্গে একমত, দ্বিমত নাই। এখানে বিভিন্ন প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে শিক্ষার্থীরা পড়াশোনা করতে আসে। প্যানডেমিকের কতগুলো ধরন রয়েছে।
এটি এমন একটি বিষয় যেটি সংক্রমক রোগ। এগুলোর ক্ষেত্রে কতগুলো আইন আছে, তাই এ ক্ষেত্রে অংশবিশেষ সিদ্ধান্ত নেওয়া যায় না, কোনো প্রতিষ্ঠান পারে না, একটি জাতীয় সিদ্ধান্তের খুব প্রয়োজন হয়।