মধ্যপ্রচ্য তথা উপসাগরীয় আরব দেশগুলোর ঐতিহ্য ও সংস্কৃতিতে উটের গুরুত্ব অপরিসীম। এ অঞ্চলে শত-সহস্র বছর ধরে মাংস ও পরিবহনের জন্য এবং যুদ্ধে উট ব্যবহৃত হয়ে এসেছে। উট সৌদি আরবের জাতীয় পশুও বটে।
বিগত ২০১৮ ও ২০১৯ সালে সৌদি আরব উট সংশ্লিষ্ট দুটি বিশ্ব রেকর্ড করেছে। সর্বশেষ রেকর্ড করেছে বিশ্বের বৃহত্তম উটের ভাস্কর্য গড়ে। আমাদের দেশের মিডিয়ায় সৌদি আরব কেনো, প্রতিবেশী ও ইউরোপ-আমেরিকার গুটিকয় দেশ ছাড়া বাকি দুনিয়ার তেমন কোনো খবরই আসে না বলা চলে। ফলে এখানকার আলেম থেকে জাহেল (জ্ঞানী থেকে মূর্খ) পর্যন্ত সবাই বিশ্বের বেশির ভাগ দেশ সম্পর্কে বিশেষভাবে অজ্ঞ। যদিও আমরা তা মানতে নারাজ।
ভাস্কর্যটি ৪.৬৫ মিটার উঁচু ও দশ মিটার প্রশস্ত। ২০১৯ সালের ক্যামেল ফেস্টিভাল চলাকালে সৌদি উট ফেডারেশনের সভাপতি প্রিন্স ফাহাদ বিন জালাবি বিন মুসায়েদ তাইফের গভর্নর সাদ আল-মাইমুনি এবং গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডের প্রতিনিধি গ্লেন পোলার্ডের উপস্থিতিতে ভাস্কর্যটি উন্মোচন করেন।
এটি তাইফের উট-গ্রামের অভ্যন্তরে কিং ফয়সাল পার্কে অবস্থিত। জ্যামিতিক শেপ দিয়ে তৈরি এই উটের ভাস্কর্যে ৫১ হাজার লাইট বসানো হয়েছে। রাতের অন্ধকারে লাইটগুলো একসাথে জ্বালালে এই আলো-ঝলমল উটটি তার সগর্ব অস্তিত্ব ঘোষণা করে।
উট সংশ্লিষ্ট দ্বিতীয় বিশ্ব রেকর্ডটি হলো ক্রাউন প্রিন্স ক্যামেল ফেস্টিভাল। এটি এ অঞ্চলের বৃহত্তম উৎসব হিসাবে পরিচিত। ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বরে অনুষ্ঠিত প্রথম উৎসবটি বিশ্বের বৃহত্তম উট উৎসব হিসাবে স্বীকৃতি লাভ করে। সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের পৃষ্টপোষকতায় এ উৎসবটি গোটা সৌদি আরব এবং উপসাগরীয় অঞ্চলের মানুষকে আকর্ষণ করে।
এ ফেস্টিভ্যালের লক্ষ্য হলো আরব ঐতিহ্য ও সংস্কৃতিতে উটের গুরুত্ব তুলে ধরা। এ উৎসবে ১১ হাজার একশ’ ৮৬টি উট প্রতিযোগিতার ৭৮৭ রাউন্ডে অংশ নেয়। ক্যামেল ফেস্টিভ্যালে পাঁচ কোটি ৩০ লাখ সৌদি রিয়াল মূল্যের পুরস্কার দেওয়া হয়। সৌদি আরব গত কয়েক বছর ধরেই স্মরণীয় বিশ্ব রেকর্ড স্থাপনের জন্য শিরোনাম তৈরি করে আসছিলো।
যেমন ২০১৭ সালে বিশ্ব ডায়াবেটিস দিবসে মানুষের তৈরি সবচেয়ে বড় পিকচার মোজাইক, ২০১৫ সালে বিশ্বের বৃহত্তম মানব সচেতনতা রিবন এবং ২০১৮ সালে বিশ্বের বৃহত্তম রাবার ওয়াটার পার্কের বিশ্ব রেকর্ড। এই ফান রেকর্ডগুলোর পাশাপাশি উট সংক্রান্ত দুটি বিশ্ব রেকর্ড তাদের গৌরবের মুকুটে আরো দুটি নতুন পালক যোগ করেছে।