বিশ্ব নবী হয়রত মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের প্রতি বিশ্বাস স্থাপন ও সম্মান জানানোর নির্দেশ এসেছে কুরআনে। আল্লাহ তাআলা বলেন – ‘আমি আপনাকে (নবী করে) পাঠিয়েছি (বিশ্ববাসীর জন্য) সাক্ষীরূপে, সুসংবাদদাতা ও সতর্ককারীরূপে। যাতে তোমরা (মানুষ) আল্লাহ ও তার রাসুলের প্রতি বিশ্বাস স্থাপন কর এবং তোমরা রাসুলকে শক্তি জোগাও, তাঁকে সম্মান কর।’ (সূরা ফাতাহ: আয়াত ৮-৯)
অন্য আয়াতে আল্লাহ তাআলা নবীর প্রতি সম্মান দেখানোর নির্দেশ দেন এভাবে – ‘নিশ্চয় আল্লাহ তাআলা নবীর প্রতি অনুগ্রহ করেন এবং তার ফেরেশতারাও নবীর জন্য অনুগ্রহ প্রার্থনা করেন। হে মুমিনগণ! তোমরাও নবীর জন্য অনুগ্রহ প্রার্থনা কর এবং তাকে যথাযথভাবে সালাম জানাও।’ (সূরা আহজাব : আয়াত ৫৬)
প্রিয় নবী হয়রত মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের প্রতি দরূদ ও সালাম পাঠানো হলো মুমিন মুসলমানের জন্য ইবাদত ও অনেক ফজিলতপূর্ণ কাজ। এতে একদিকে যেমন তাঁর সাক্ষাৎ লাভ হয় তেমনি পরকালে তার সুপারিশ সুনিশ্চিত।
প্রিয় নবী হয়রত মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের প্রতি দরূদ ও সালাম না পড়ায় রয়েছে মারাত্মক ক্ষতি। হাদিসে এসেছে – ‘তিন শ্রেণির ব্যক্তিকে আল্লাহ তাআলা ধ্বংসের অভিশাপ দিয়েছেন। তাদের মধ্যে এক শ্রেণি হলো- যারা প্রিয় নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের নাম শোনার পরও তার প্রতি দরূদ পড়ে না।’ (নাউজুবিল্লাহ)
সুতরাং আল্লাহর ধ্বংস থেকে বাঁচতে, প্রিয় নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সাক্ষাৎ পেতে, পরকালের সুপারিশ লাভে মুমিন মুসলমানের বেশি বেশি দরূদ পড়া জরুরি। যে দরূদটি পড়তে সহজ এবং ছোট তাহলো –
صَلِّى اللهُ عَلَيْهِ وَ سَلَّم
উচ্চারণ : ‘সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম।’
এ ছাড়াও রয়েছে বিখ্যাত দরূদ – দরূদে ইব্রাহিম। নামাজে যে দরূদ পড়া হয়। দরূদ পড়ায় আরও অনেক ফজিলত রয়েছে।
১. যে ব্যক্তি হাশরের ময়দানে প্রিয় নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সঙ্গে থাকতে চান, সে যেন বেশি বেশি দরূদ পড়েন।
২. যে ব্যক্তি প্রিয় নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের মহব্বতে বেশি বেশি দরূদ পড়বে, তাঁর জন্য রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সুপারিশ আবশ্যক হয়ে যায়।
৩. যে ব্যক্তি মহব্বতের সঙ্গে বেশি বেশি দরূদ পড়বে, দরূদের বরকতে ওই ব্যক্তিকে স্বপ্নযোগে প্রিয় নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সাক্ষাৎ লাভ করবেন।
৪. বেশি বেশি দরূদ পড়লে আল্লাহ তাআলা বান্দার দোয়া কবুল করেন।
সুতরাং প্রিয় নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের প্রতি দরূদ ও সালাম পড়া ক্ষতিকর কোনো কাজ নয় বরং দুনিয়া ও পরকালের কল্যাণ লাভে ছোট কিংবা বড় দরূদ বেশি বেশি পড়া। ফলে স্বপ্নে সাক্ষাৎ লাভে ধন্য হবে মুমিন। এতে পরকালে প্রিয় নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সুপারিশ হবে সুনিশ্চিত।
আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে প্রিয় নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের প্রতি দরূদ পড়ার তাওফিক দান করুন। দরূদের যথাযথ ফজিলত লাভ করার তাওফিক দান করুন। প্রিয় নবী হয়রত মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সাক্ষাৎ লাভের তাওফিক দান করুন। আমিন।