রাজধানীর একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থীকে মদপানের পর ধর্ষণ ও হত্যা মামলার পর থেকে নিখোঁজ ছাত্রী নেহাকে আজিমপুর থেকে গতরাতে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
ঘটনার পাঁচদিন পর বান্ধবী নেহা গ্রেফতারের পর বেরিয়ে এসেছে সব চাঞ্চল্যকর তথ্য। পার্টি আয়োজন ও অংশগ্রহণই ছিল রাজধানীতে মৃত বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রী ও তার বন্ধুদের পেশা।
নেহার ফোন থেকে পাওয়া নানা ছবি ও তথ্য বিশ্লেষণ করে পুলিশের দাবি, পার্টি আয়োজন এবং তাতে অংশগ্রহণ করাই ছিল নেহা ও তার বন্ধুদের পেশা। ৩০ জানুয়ারি রাতে উত্তরায় যে পার্টি হয় তার আয়োজকও ছিল নেহা ও আরাফাত। পুলিশ বলছে, অতিরিক্ত মদপানেই দুইজনের মৃত্যু হয়।
নিহত শিক্ষার্থীর বাবার করা মামলায় নেহা এজাহারভুক্ত আসামি। এর আগে মৃত ছাত্রীর বাবা মোহাম্মদপুর থানায় মামলা দায়ের করলে দুইজনকে গ্রেফতার করা হয়। তাদের প্রত্যেককে ৫ দিনের রিমান্ডে নিয়েছে পুলিশ।
এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত আটক করা হয়েছে ২৩ জনকে। অভিযান চালানো হয়েছে উত্তরার বিভিন্ন বার, ক্লাব, রেস্টুরেন্টে। মোট মামলা হয়েছে তিনটি।
গত ৩০ জানুয়ারি রাজধানীর উত্তরায় একটি পার্টিতে চার বন্ধুর সাথে অতিরিক্ত মদ্যপানের পর মারা যান বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রী। পরে তার আরেক বন্ধু আরাফাতেরও মৃত্যু হয়।
পুলিশ জানায়, মারা যাওয়া ছাত্রীর সাথে গ্রেপ্তার রায়হানের প্রেমের সর্ম্পক ছিল। ঘটনার রাতেই দুজনের শারীরিক সর্ম্পকও হয়। আর বিষাক্ত মদপানেই তার ও আরাফাতের মৃত্যু হয়েছে । এ ঘটনায় দায়ের করা ধর্ষণ ও হত্যা মামলার সব আসামি গ্রেফতার হয়েছে। সবগুলো ফরেনসিক রিপোর্ট পেলে পুলিশ মামলার চার্জশিট জমা দেবে বলেও জানানো হয়।
এ প্রসঙ্গে পুলিশের তেজগাঁও বিভাগের অতিরিক্ত উপকমিশনার মৃত্যুঞ্জয় দে সজল বলেন, ওই তরুণী ও তার বন্ধু রায়হানসহ চারজন শুক্রবার (২৮ জানুয়ারি) উত্তরার ব্যাম্বু রেস্টুরেন্টে যায়। সেখানে তারা মদপান করে। এর মধ্যে একটা মেয়ে অসুস্থ হয়ে চলে যায়।
আর বাকিদের মধ্যে আরাফাত, মর্তুজা রায়হান চৌধুরী এবং ভিকটিম উবারে করে মোহাম্মদপুরে নবোদয় হাউজিং এলাকায় নুহাদ আলম তাফসীরের বাসায় যায়। সেখানে তারা রাতযাপন করে। রাতে আরাফাত ও ওই ছাত্রী অসুস্থ হয়ে পড়ে।
তাদেরকে আনোয়ার খান মডার্ন হাসপাতাল ও সিটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সিটি হাসপাতালে শনিবার চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায় আরাফাত। আর রোববার দুপুরে আনোয়ার খান মডার্ন হাসপাতালে মারা যায় ওই ছাত্রী।
এ ব্যাপারে ছাত্রীর বাবা বাদী হয়ে মোহাম্মদপুর থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে একটি মামলা করেন। এতে রায়হান, আরাফাত, তাফসীরসহ পাঁচজনকে আসামি করা হয়েছে। পুলিশ রায়হান ও তাফসীরকে গ্রেফতার করে রোববার পাঁচদিনের রিমান্ডে নেয়।
এদিকে ব্যাম্বু রেস্টুরেন্টের সিসি টিভি ফুটেজ পর্যালোচনা করে সেখানে তাদের অবস্থানের সত্যতা পেয়েছে পুলিশ। ওই রেস্টুরেন্টে বসে মদ পান করলেও তারা মদ বাইরে থেকে নিয়ে গিয়েছিল।