মুন্সিগঞ্জ সদর উপজেলায় ছাত্রলীগ নেতার পিটুনিতে আহত মো. নয়ন মিজি (৩৫) মারা গেছেন। গতকাল রাজধানীর জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন প্রতিষ্ঠানে (পঙ্গু হাসপাতাল) চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি। এ ঘটনায় দুইজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
নিহত নয়ন মিজি, নয়ন সদর উপজেলার রামপাল ইউনিয়নের উত্তর কাজী কসবা গ্রামের প্রয়াত আবদুল বাতেন মিজির ছেলে।
নয়ন মিজির ছোট বোন পিংকি আক্তার বলেন, বুধবার (৯ জুন) বিকেল ৪টার দিকে তার ভাই বাড়ি থেকে বের হন। এর আধা ঘণ্টা পরই জানতে পারেন উত্তর কাজী কসবা প্রাইমারি স্কুলের সামনে থেকে রামপাল ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক প্রান্ত শেখ ও তার সহযোগী রনি, কাঞ্চনেরা তার ভাইকে তুলে নিয়ে গেছেন। ঘটনা শুনতে পেয়ে তারা সিপাহিপাড়া এলাকার একটি স্কুলের কাছে গিয়ে দেখেন, প্রান্তরা কাঠের ডাসা দিয়ে নয়নকে পেটাচ্ছেন। তিনি ভাইকে বাঁচানোর চেষ্টা করেন। রাস্তায় গিয়ে পুলিশ ডাকেন।
নয়নের ১০ বছরের মেয়ে নিজুম বলে, ‘আমাদের চোখের সামনে আমার বাবাকে কীভাবে মারল! বাবার হাত-পা, মাথা গুঁড়িয়ে দিয়েছে। আমরা কত হাতে-পায়ে ধরলাম। আমার বাবাকে ওরা ছাড়ল না। যখন ছাড়ল বাবা আর চোখ খুলে দেখল না। আমার বাবার হত্যাকারীদের ফাঁসি চাই।’
স্থানীয় লোকজন ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, নয়ন এলাকায় মুরগি ফার্মের ব্যবসা করতেন। পাশাপাশি কবুতর পালতেন। কয়েক মাস আগে তাঁর ফার্ম থেকে রামপাল ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক প্রান্ত শেখ, শোভন, কাঞ্চন, রনিরা কবুতর, মুরগি চুরি করে। এ নিয়ে নয়নের সঙ্গে তাদের দ্বন্দ্ব হয়। এগুলো নিয়ে এলাকায় শালিস হয়। সেই থেকে নয়নের সঙ্গে দ্বন্দ্ব চলছিল। বুধবার এর জের ধরে মূলত প্রান্ত শেখরা, নয়নকে তুলে নিয়ে হত্যার ঘটনা ঘটিয়েছে।
এ ঘটনায় গতকাল বুধবার রাতেই একটি মামলা হয়েছিল বলে জানান অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (মুন্সিগঞ্জ সদর সার্কেল) মিনহাজ উল ইসলাম।
তিনি বলেন, বুধবারের মামলাটি হত্যা মামলায় রূপান্তর করা হবে। এখন পর্যন্ত এজাহারভুক্ত আসামি নাহিদ ও তৌকির নামে দুইজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বাকিদের গ্রেপ্তারে চেষ্টা চলছে।