মণিরামপুরে কলেজ শিক্ষক স্বামীর পরকীয়ায় অভিমান করে একমাত্র সন্তান দেড় বছর বয়সী মেয়ে কথাকে শ্বাসরোধে হত্যার পর অস্ত:সত্ত্বা মা পিয়া মন্ডল (২৩) আত্মহত্যা করেছে। চাঞ্চল্যকর এ ঘটনাটি ঘটেছে শনিবার সন্ধ্যায় উপজেলার কুলটিয়া গ্রামে।
পুলিশ রাত নয়টার দিকে মা-মেয়ের মরদেহ উদ্ধার করে। আত্মহত্যা প্ররোচনার দায়ে পুলিশ রাতেই স্বামী কলেজ শিক্ষক কনার সন্ডলকে আটক করে।
জানাযায়, উপজেলার কুলটিয়া ইউনিয়নের সুজাতপুর গ্রামের ননি মন্ডলের ছেলে মশিয়াহাটি ডিগ্রী কলেজের প্রভাষক কনার মন্ডলের সাথে পাঁচ বছর আগে বিয়ে হয় অভয়নগর উপজেলার দত্তগাতী গ্রামের ভগিরত মন্ডলের মেয়ে পিয়া মন্ডলের। বিয়ের পর কনার মন্ডল স্ত্রীকে নিয়ে কুলটিয়া বাজারের পাশে দোতলায় একটি বাসা ভাড়া নিয়ে তারা সুখের সংসার করছিল।
এরই মধ্যে পিয়ার কোলজুড়ে আসে একমাত্র সন্তান কথা মন্ডল। কথা মন্ডলের বর্তমান বয়স মাত্র দেড় বছর।
পিয়া মন্ডলের দাদু (নানা) কমলেশ মন্ডলের অভিযোগ প্রায় এক বছর আগে কনার মন্ডল এলাকার এক মহিলার সাথে পরকীয়া সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ে। বিষয়টি জানাজানি হলে কনার এবং পিয়ার মধ্যে প্রায় ঝগড়া হতো। অভিযোগ রয়েছে পরকীয়ার প্রতিবাদ করায় কনার মন্ডল প্রায়ই পিয়াকে মারপিট করতো।
স্থানীয় একাধীক সূত্র জানায়, শনিবার সকালে কনার তার স্ত্রীর সাথে ঝগড়ায় লিপ্ত হয়। অবশ্য সকাল থেকে কনার বাড়িতে ছিলেননা। পিয়ার দাদুসহ তার অভিভাবকদের ধারনা স্বামীর উপর অভিমান করেই অন্ত:সত্ত্বা পিয়া মন্ডল শনিবার সন্ধ্যায় মেয়ে কথাকে শ্বাসরোধে হত্যার পর ঘরের সিলিংয়ের হুকের সাথে ঝুলিয়ে নিজেও গলায় দড়ি দিয়ে আত্মহত্যা করে।
খবর পেয়ে থানার ওসি রফিকুল ইসলাম ও নেহালপুর ফাড়ির ইনচার্জ এসআই আতিকুজ্জামান ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে মা-মেয়ের মৃত দেহ উদ্ধার করে।
এ দিকে খবর পেয়ে রাতেই পিয়ার দাদু কমলেশ মন্ডলসহ তার অভিভাবকরা ঘটনাস্থলে এসে ক্ষুব্ধ হয়ে কনার মন্ডলের বিরুদ্ধে আত্মহত্যা প্ররোচনার অভিযোগ এনে তাকে লাঞ্চিত করেন। অবশ্য এ সময় পুলিশ কনার মন্ডলকে বিক্ষুব্ধদের হাত থেকে উদ্ধারের পর তাকে আটক করে।
মনিরামপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রফিকুল ইসলাম জানান, আত্মহত্যা প্ররোচনার দায়ে স্বামী কলেজ শিক্ষক কনার মন্ডলকে আটক করা হয়েছে। এ ঘটনায় থানায় মামলা প্রস্তুতি চলছে।