মালদ্বীপের ন্যাশনাল স্টেডিয়ামে এএফসি কাপ ডি গ্রুপে চূড়ান্ত লড়াইয়ের মঞ্চ প্রস্তুত। অলিখিত ফাইনালে আজ মুখোমুখি হচ্ছে বসুন্ধরা কিংস ও মোহনবাগান। এ লড়াই নিয়ে বেশ উন্মাদনা বিরাজমান আয়োজক দেশটির রাজধানী মালের অলিতে গলিতে। হাজারও প্রবাসী বাংলাদেশির মন আজ পড়ে থাকবে স্টেডিয়ামের সবুজ গালিচায়। পাশাপাশি টিভির পর্দায় থাকবে অসংখ্য ফুটবলভক্তের চোখ। মোহনবাগানকে হারালেই ইন্টার-জোন প্লে অফ খেলার যোগ্যতা অর্জন করবে বসুন্ধরা কিংস। এশিয়ার সেরা হওয়ার সুযোগ আসবে তাদের। ড্র করলেই গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হবে মোহনবাগান।
বসুন্ধরা কিংস ও মোহনবাগান ম্যাচে বাংলাদেশ-ভারত লড়াইয়ের উন্মাদনা থাকবে বলে মনে করেন তপু বর্মণ। তিনি বললেন, ‘ভারতের অনেক পুরনো ক্লাব মোহনবাগান। তাদের বিপক্ষে ম্যাচে বাংলাদেশ-ভারত লড়াইয়ের উত্তেজনা দেখা যাবে।’
বাংলাদেশ জাতীয় দলের বেশিরভাগ ফুটবলারই খেলেন বসুন্ধরা কিংসে। অন্যদিকে মোহনবাগানেও আছেন ভারতীয় জাতীয় দলের সুবাশিষ, মানবির সিং আর লিস্টন কুলাকোর মতো ফুটবলাররা। এ লড়াইয়ে বাংলাদেশ-ভারত উন্মাদনা তো থাকবেই! দুই দেশের সমর্থকরাও ম্যাচটার দিকে তাকিয়ে থাকবেন। মোহনবাগানের সুবাশিষ বোসও এমনটা বলে গেলেন, ‘আমরা প্রতিবেশী। সম্পর্কটা খুব ভালো। তবে মাঠের লড়াইয়ে এ সম্পর্কের কথা আর মনে থাকবে না। সেখানে আমরা একে অপরের প্রতিপক্ষ।’
চূড়ান্ত লড়াইয়ের প্রস্তুতি শেষ করেছেন তপু বর্মণরা। গতকাল বিকালে হেনবিরু মাঠে ঘাম ঝরিয়েছেন তারা। কোচ অস্কার ব্রুজোনের নির্দেশনা মেনে পরিকল্পনা করেছেন ফুটবলাররা। মোহনবাগানের আক্রমণভাগকে রুখে দেওয়ার কৌশল ঠিক করেছেন। সেই কৌশল মাঠে প্রয়োগ করার রিহার্সেল করেছেন। আজ কিংসের দলে কিছুটা রদবদল দেখা যেতে পারে। ভারতীয় ক্লাবের বিপক্ষে জয়ের জন্য পূর্ণ শক্তিই নিয়োগ করবেন অস্কার ব্রুজোন। আগের ম্যাচে বেঙ্গালুরুর বিপক্ষে বেশ রক্ষণাত্মক খেলেছিলেন তপুরা। এবার রক্ষণ সামলানোর পাশাপাশি থাকবে আক্রমণাত্মক ফুটবলও। নিজেদের ডি বক্স নিরাপদ রেখে প্রতিপক্ষের অর্ধে খেলার পরিকল্পনা বসুন্ধরা কিংসের। দলের অধিনায়ক তপু বর্মণ বলেছেন, ‘আমাদের গোলবার অক্ষত রাখতে হবে। গোল হজম না করলে ম্যাচে যে কোনো সময় এগিয়ে যাওয়ার সুযোগ থাকবে।’
কোচ অস্কার ব্রুজোন এএফসি কাপের শুরু থেকে প্রতিটা ম্যাচই ফাইনাল মনে করে খেলছেন। তিনি বলেন, ‘এএফসি কাপে এটাকে গ্রুপ পর্ব বলা হচ্ছে বটে, কিন্তু আসলে তা নয়। এখানে একটা ম্যাচ হারা মানেই বিদায় নিশ্চিত। গ্রুপের শীর্ষস্থান দখল করতে হলে সবকটা ম্যাচই জিততে হবে। অন্তত পরাজিত হওয়া চলবে না। নকআউট পর্বের চেয়ে কোনো অংশেই কম নয় এই গ্রুপ পর্ব।’ সত্যিই তো! প্রথম ম্যাচে হেরেই মালদ্বীপের মাজিয়া আর ভারতের বেঙ্গালুরু এফসির বিদায় মোটামুটি নিশ্চিত হয়ে গিয়েছিল। পরের ম্যাচে সেটা কেবল কাগুজে-কলমে রূপ নিয়েছে।
মোহনবাগান কোচ অ্যান্টোনিও লোপেজ হাবাস বলেছেন, ‘আমরা জানি, বসুন্ধরা কিংস বাংলাদেশের চ্যাম্পিয়ন। তারা দারুণ এক দল। প্রতিপক্ষকে শ্রদ্ধা করি আমরা। আমাদের এক পয়েন্ট পেলেই হবে। তবে আমরা জয়ের জন্যই মাঠে নামব।’ অস্কার ব্রুজোনের দলের প্রতি শ্রদ্ধা রাখার পাশাপাশি হুঙ্কারও দিয়ে রাখলেন লোপেজ। অবশ্য আজ দলের ১০ নম্বর জার্সিধারী ফরাসি ফুটবলার হুগো বোমাসকে পাচ্ছেন না তিনি। টানা দুই ম্যাচে হলুদ কার্ড দেখায় আজ মাঠে নামতে পারছেন না বোমাস।
দুটি করে ম্যাচ শেষ হওয়ার পর ইন্টার-জোন প্লে অফ খেলার সুযোগ আছে কেবল বসুন্ধরা কিংস ও মোহনবাগানের। যে জিতবে, তারাই গ্রুপসেরা হয়ে পরের রাউন্ডে খেলার সুযোগ পাবে। ম্যাচটা ড্র হলে পরের রাউন্ডে খেলবে মোহনবাগান।