স্ত্রীর সন্তান প্রসবের অজুহাত দেখিয়ে প্রথম দফায় বাড়িওয়ালা ফজলুল হকের (৭৩) কাছ থেকে সাত হাজার টাকা ধার নেয় ভাড়াটিয়া আবুল হোসেন (৩৫)। পরে আবারও একই অজুহাত দেখিয়ে টাকা ধার চায় আবুল হোসেন।
কিন্তু দ্বিতীয়বার টাকা দিতে অপারগতা জানায় বাড়িওয়ালা ফজলুল হক।
এ কারণেই বৃদ্ধ বাড়িওয়ালাকে নিজ গ্রামের বাড়ি ময়মনসিংহের নান্দাইল উপজেলায় এনে কুপিয়ে হত্যা করে ভাড়াটিয়া আবুল হোসেন। মাত্র ছয় দিনের মাথায় হত্যাকাণ্ডের রহস্য উম্মোচন করে। এমনটি জানায় পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।
হত্যাকাণ্ডের পর মরদেহটির অজ্ঞাতনামা হিসাবেই ময়নাতদন্ত হয়।
বুধবার দুপুরে ময়মনসিংহ পিবিআই’র পুলিশ সুপার গৌতম কুমার বিশ্বাস বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, নরসিংদী সদরের খাটেহারা পূর্বপাড়ায় নিজ বাসায় বসবাস করতেন আবুল হোসেন। আর ওই বাসায় ভাড়াটিয়া হয়ে থাকত আবুল হোসেন। সেখানেই স্বপরিবারে ভাড়া থেকে একটি টেক্সটাইল মিলে চাকরি করতেন।
পুলিশ সুপার গৌতম কুমার বিশ্বাস আরও জানান, নিহত ফজলুল হকের বাসায় ভাড়া থাকার সুবাদে তাদের মধ্যে সুসম্পর্ক গড়ে ওঠে। কিছুদিন আগে আবুল হোসেন তার স্ত্রীর সিজার করার জন্য ফজলুল হকের কাছ থেকে ৭ হাজার টাকা ধার নেয়। তখন থেকেই আবুল হোসেন ধারণা করেন বাড়িওয়ালার কাছে আরও টাকা আছে। একই অজুহাতে আবারও টাকা ধার চায় সে। কিন্তু নিহত বৃদ্ধ টাকা দিতে অপারগতা প্রকাশ করেন। তখন থেকেই ফজলুল হককে খুন করার পরিকল্পনা করে।
পুলিশ সুপার বলেন, খুনের পরিকল্পনা অনুযায়ী গত বৃহস্পতিবার আবুল হোসেনের নিজ বাড়ি নান্দাইলে বেড়াতে নিয়ে আসে বাড়িওয়ালাকে। পথে মোয়াজ্জেমপুর ইউনিয়নের কামালপুর গ্রামের বাহাদুরপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কাছে এলে পেছন থেকে ফজলুল হকে ঘাড়ে দা দিয়ে কোপ দেয়। পরে হত্যা নিশ্চিত করে পাশের ধান ক্ষেতে লাশ ফেলে পালিয়ে যায়। এ সময় আবুল হোসেন নিহত ফজলুল হকের সাথে থাকা ৩০ হাজার টাকা ও দুইটি মোবাইল নিয়ে নেয়।
এ ঘটনায় মঙ্গলবার ওই ইউনিয়নের চৌকিদার মজিবুর রহমান বাদী হয়ে নান্দাইল থানায় অজ্ঞাতনামাদের আসামি করে মামলা দায়ের করেন।