আমাগো কপালে বুঝি ঘর নাই। কতবার কইছি চেয়ারম্যান-মেম্বারগো কেউ আমাগো কতা হুনেনা।
সজ্ঞিব দাস, গলাচিপা (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘর থেকে বঞ্চিত হয়েছেন পটুয়াখালীর গলাচিপা উপজেলার গোলখালী ইউনিয়নের চর বাদুরা গ্রামের মো. কালু হাওলাদার (৮৩) ও মোসা. সাফিয়া বেগম (৬২) নামের এক দম্পতি। কালু হাওলাদার চর বাদুরা গ্রামের মৃত মো. আকলদ্দি হাওলাদারের ছেলে।
ওই গ্রামের আক্কাস মাষ্টার বাড়ি সংলগ্ন বেড়ি বাঁধের উপর দীর্ঘ ৬০ বছর ধরে জীর্ণশির্ণ একটি ঘরে মানবেতর জীবন-যাপন করছেন অসহায় কালু হাওলাদার ও তার স্ত্রী সাফিয়া বেগম। ইউপি চেয়ারম্যান মেম্বারের কাছে বহুবার ধরনা ধরেও কাজের কাজ কিছুই হয়নি এই দম্পতির।
সরেজমিনে গণমাধ্যমকর্মীদের কাছে কান্নাজড়িত কন্ঠে এসব অভিযোগ করেন অসহায় ওই দম্পতি। জানা গেছে, গলাচিপা উপজেলার চর বাদুরা গ্রামে বেড়ি বাঁধের উপরে একটি ডেড়ায় বসবাস করা কালু হাওলাদার তার স্ত্রী সাফিয়া বেগমকে নিয়ে ঝড়-বৃষ্টি ও নানা প্রাকৃতিক প্রতিকূলতার মধ্যে দিয়ে খেয়ে না খেয়ে অতি কষ্টে দিনাতিপাত করছেন। বিয়ের পর থেকেই ওই দম্পতি নিঃসন্তান থাকার কারণে বৃদ্ধ বয়সে এসে তারা আরও অসহায় হয়ে পড়েছেন।
বর্তমানে কালু হাওলাদার অচল হয়ে পড়েছেন। স্ত্রী সাফিয়া বেগম মানুষের বাড়িতে কাজ করে যা পায় তা দিয়েই দিন কাটে তাদের। কান্নাজড়িত কন্ঠে সাফিয়া বেগম এ প্রতিবেদককে বলেন, “হুনছি প্রধানমন্ত্রী গরীব মানষেরে ঘর দেয়। আমাগো কপালে বুঝি ঘর নাই। কতবার কইছি চেয়ারম্যান-মেম্বারগো কেউ আমাগো কতা হুনেনা।
আমনেরা আমাগো একটা ঘরের কতা এমপি সাপরে কইয়েন।’ আবেগজড়িত কন্ঠে বিমর্ষ কালু হাওলাদার বলেন, ‘বুড়া বয়সে আর কত কষ্ট করমু জানিনা। আমি অ্যাহন কাজ করতে পারিনা।
ভাঙ্গা ঘরে দুইজনে খাইয়া না খাইয়া বাঁইচা আছি। জায়গা-জমি, ঘর-বাড়ি কিছুই নাই। আইজ আমার পোলাপান থাকলে এত কষ্ট অইতো না।’এ ব্যাপারে জানতে চাইলে ইউপি চেয়ারম্যান মো. নাসির উদ্দিন হাওলাদার বলেন, ‘ভূমিহীণ ও গৃহহীণ হলে ওই পরিবারের জন্য অবশ্যই আমি প্রধানমন্ত্রীর ঘরের জন্য উপর মহলে সুপারিশ করবো। অতিসত্বর খোঁজখবর নিয়ে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
’ উপজেলা নির্বাহী অফিসার আশিষ কুমার বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর ঘরের ব্যাপারে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা যঁচাই-বাছাই করেন। তার পরেও ওই পরিবার লিখিত আবেদন করলে বিষয়টি গুরুত্বের সাথে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।