December 23, 2024, 8:31 pm

জীবনের গল্প শোনালেন মাশরাফি বিন মুর্তজা

অনলাইন ডেস্ক
  • Update Time : Monday, November 29, 2021,
  • 66 Time View
জীবনের গল্প শোনালেন মাশরাফি বিন মুর্তজা
মারশাফি

আপনারা লেখাপড়ার স্তর শেষ করে বাস্তব জীবনে প্রবেশ করছেন। জীবন কখনও কণ্টকমুক্ত নয় বলে স্নাতকদের উদ্দেশে জানিয়েছেন জাতীয় ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক, সংসদ সদস্য মাশরাফি বিন মুর্তজা।

শিক্ষার্থীদের কাছে নিজের অভিজ্ঞতা তুলে ধরে মাশরাফি বলেন, শত সমস্যাতেও হার মানা যাবে না। সময়কে কাজে লাগানোর মানসিকতা থাকতে হবে। সোমবার ইউনিভার্সিটি অফ লিবারেল আর্টসের (ইউল্যাব) সমাবর্তন অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়ে তরুণদের উদ্দেশে তিনি এসব কথা বলেন।

 

তরুণদের উদ্দেশ্যে মাশরাফি বলেন,আমি আমার জীবনের দুটি বিষয় হয়তো বলতে পারি। আমি খুব ছোট জেলা থেকে এসেছি। যখন ক্রিকেট খেলা শুরু করি। আমি অনূর্ধ্ব-১৭, অনূর্ধ্ব-১০ ১৯ ও ‘এ’ দল হয়ে জাতীয় দলের হয়ে এসেছি। আমরা নড়াইলে যখন ছিলাম, ওই ফ্যাসিলিটিজ ছিল না। এত বেশি কোচ ছিল না, ফিটনেস ট্রেনার ছিল না। কিন্তু আমার কাছে মনে হয়েছে আমি খুব উপভোগ করেছি। আমি খুব অল্প বয়সে বুঝতে পেরেছিলাম, ক্রিকেটটা পছন্দ করি, খেলতে চাই।

 

জীবনের কঠিন সময় যখন এলো, আমার ইনজুরি। যখন অপারেশন হলো। ২০০১ সালে ভারতে গেলাম। তখন ৪টা টেস্ট খেলেছি, তিনটি ওয়ানডে খেলেছি। হসমত হাসপাতালের নাম, ডাক্তার থমাস চেন্ডি। আমি পায়ে ব্যথা পেলাম, উনি বলল দেখে দিচ্ছি। পরে এমআরআই করালো। পরের দিন সকালে বলল যে তোমার লিগামেন্ট টোন হয়েছে। তোমার অপারেশন করাতে হবে এবং এক বছর খেলার বাইরে থাকতে হবে।

 

আমি একা গিয়েছিলাম। ঢাকায়ই কম এসেছি, সেখানে ভারতে গিয়েছিলাম। আমার কাছে মনে হয়েছিল আকাশটা আমার মাথায় ভেঙে পড়েছে। এরপর ওখান থেকে ফিরে ২০০৮ সাল পর্যন্ত ভালোভাবে খেলেছি। পরের তিন বছরে আবার চারটা ইনজুরি। সেখান থেকে ফিরে এসে ১৪৪ থেকে ১২০ কিলোমিটারে বল করা। ওটাকে ম্যানেজ করা, সাতটা অপারেশন করা।

তবে সবকিছুর পরও আমি যখন মাঠে নামতাম, বুঝতাম কী করি। আমি বাংলাদেশের জন্য খেলছি, এর চেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ আর কিছু ছিল না। তখন আমি আসলে…আমি জানি ওই দিনগুলো কেমন গেছে। স্পোর্টসে সার্জারির চেয়েও রিহ্যাবিশন প্রক্রিয়াটা কঠিন। আমি বিশ্বাস করি আমার চাওয়া, ডেডিকেশন, স্পোর্টস নিয়ে ফোকাস আমাকে এগিয়ে নিয়ে গেছে। সেটার কারণে ২০১৫ সালে এসে অধিনায়কত্ব পেয়েছি।

 

আমি এটাই বুঝাতে চাচ্ছি ২০ বছরের ক্যারিয়ারে আরও অনেক বেশি কিছু করতে পারতাম হয়তো। আমি সুস্থ থাকলে তিনশ উইকেট পেতাম টেস্টে, ওয়ানডেতে আরও বেশি পেতাম। কিন্তু এটা নিয়ে আমার কোনো কষ্ট নাই। কারণ আমি জানি চেষ্টা করেছি। এজন্য খারাপ লাগে না। আল্লাহ সবাইকে সুযোগ দেয়, এগুলো নেওয়া খুব জরুরি।

সমাবর্তনে বিশ্ববিদ্যালয়ের চ্যান্সেলর ও রাষ্ট্রপতি মো. আব্দুল হামিদের পক্ষে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি সভাপতিত্ব করেন। সমাবর্তনে সভাপতির বক্তব্যে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেন, জ্ঞান দক্ষতা ও মূল্যবোধের সমন্বয়ে পাঠ্যক্রম প্রণয়ন করা হচ্ছে। আজকে যারা আনুষ্ঠানিকভাবে সনদপ্রাপ্ত হলেন জাতি গঠনে আপনাদের দায়িত্ব অনেক। আপনারাই হবেন একদিন এ দেশের রক্ষাকারী। আপনারাই নিয়ে যেতে পারেন লক্ষ প্রাণের বিনিময়ে অর্জিত বাংলাদেশকে এক নতুন উচ্চতায়।

 

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ইউজিসি’র চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. কাজী শহীদুল্লাহ বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে উচ্চশিক্ষার অন্যতম অনুষঙ্গ হলো গবেষণা। এজন্য বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের গবেষণার সুযোগ করে দিতে হবে। পেশাগত উৎকর্ষ বিধানেরও ব্যবস্থা করতে হবে।

 

সমাবর্তনে আরও উপস্থিত ছিলেন ইউল্যাব বোর্ড অব ট্রাস্টিজের সদস্য কাজী নাবিল আহমেদ এমপি, ইউল্যাবের উপাচার্য অধ্যাপক ইমরান রহমান, উপ-উপাচার্য অধ্যাপক সামসাদ মর্তুজা, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক মিলন কুমার ভট্টাচার্য, রেজিস্ট্রার লে. কর্নেল (অব) ফয়জুল ইসলামসহ, বিভিন্ন অনুষদের ডিন, বিভাগীয় প্রধানগণ, শিক্ষক, কর্মকর্তারা ও শিক্ষার্থীরা।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
© All rights reserved © 2024
ডিজাইন ও কারিগরি সহযোগিতায়: রায়তা-হোস্ট
tmnews71