চুয়াডাংগার চারটি উপজেলা গুলোতে ঘুরে দেখা যায় প্রচন্ড শীতকে অপেক্ষা করে কুমড়ার বড়ি তৈরিতে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন গ্রামীণ নারীসহ অনেক পুরুষেই।
এরমধ্যে জীবননগর উপজেলার খয়েরহুদা , কাশিপুর ও দেহাটি পেয়ারাতলা,কেডিকে ইউনিয়নের বেশ কয়েকটি পরিবার, দর্শনা উপজেলার আকন্দবাড়িয়া, সামপুর, ইশ্বচন্দ্রপুর দ্বারিয়াপুর গ্রামের অনেক পরিবারেই বছরের বারো মাসই কুমড়ার বড়ি তৈরি করে জীবিকা নির্বাহ শুরু করছেন। উপজেলার কয়েকটি গ্রামের শতাধিক পরিবার এছাড়াও গ্রামের অধিকাংশ পরিবারেই শীতের সময় কুমড়ার বড়ি তৈরি করেন নিজেদের চাহিদার পূরণের জন্য।
আগে শীতকালে পণ্যটির বেশি চাহিদা ছিলো। সে কারণে শুধু শীতকালেই কুমড়ার বড়ি তৈরি হতো। সারাদেশে চাহিদা ক্রমশ বেড়েছে। ফলে পরিবারগুলোর ওপর তাগিদ সৃষ্টি হয়েছে সারাবছর কুমড়ার বড়ি সরবরাহের। বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, বাড়িতে বাড়িতে কুমড়ার বড়ি তৈরি করে শুকানোর জন্য রোদে দেওয়া হয়েছে। নারীদের পাশাপাশি স্কুল পড়ুয়া শিক্ষার্থীসহ পুরুষরাও এ কাজ করছেন।
জানা যায়, কুমড়ার বড়ি তৈরির প্রধান উপকরণ মাসকলাইয়ের ডাল, চালকুমড়া এবং সামান্য মসলা। তবে অন্য ডাল দিয়েও বানানো হচ্ছে। স্থানীয় বাজারে প্রতিকেজি মাসকলাই ১০০ থেকে ১২০ টাকা আর চালকুমড়া ১৫ থেকে ২০ টাকা কেজি। সাইজ বিবেচনায় চালকুমড়া ৫০ থেকে ৭০ টাকায় কিনতে হয়। পাঁচ কেজি চালকুমড়ার সঙ্গে দুই কেজি মাসকলাইয়ের মিশ্রণে কুমড়ার বড়ি ভালো হয়।
কুমড়ার বড়ির কারিগর রেবেকা খাতুন বলেন, ‘এ বড়ি দিয়ে কৈ, শিং বা শোল মাছের ঝোল বেশ মুখরোচক ও জনপ্রিয়। বড়ি বানানোর উপযুক্ত সময় শীতকাল। তবে চাহিদা বাড়ায় এখন সারাবছরই তৈরি করছি। বাড়ির চাহিদা মিটিয়ে এ বড়ি হাত বদল হয়ে চলে যাচ্ছে দেশের বিভিন্ন জেলায়।
বেলী কর্মকার বলেন, ‘দুই টাকা কেজি থেকে শুরু করে আজ ১২ টাকা কেজিতে বড়ি তৈরির কাজ করছি। বিশ বছরের অভিজ্ঞতা আমার। প্রতিদিন গড়ে একশ থেকে দুইশ টাকা আয় হয়ে থাকে। উপার্জনের এ অর্থ দিয়েই করোনার সময় আমাদের সংসারের চাহিদাগুলো পূরণ করছি।’
চুয়াডাঙ্গা জেলা বিসিক বলেন, চুয়াডাঙ্গা জেলার কুমড়ার বড়ি খেতে সুস্বাদু, নরম ও আকারে বড়। ইতোমধ্যে পণ্যটির বাজার সৃষ্টির লক্ষ্যে কাজ করা হচ্ছে। বর্তমানে স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে দেশের দক্ষিণ পশ্চিম অন্জলে চুয়াডাঙ্গা, ঝিনাইদহ, খুলনা, যশোরসহ বিভিন্ন স্থানে বড়িগুলো সরবরাহ করা হচ্ছে।