দেশকে উন্নয়নের শিখরে পৌঁছে দিতে বর্তমান সরকারের নেওয়া নানামুখী মেগাপ্রকল্পে অর্থায়ন করেছে অগ্রণী ব্যাংক। এদিকে, দেশে নতুন নতুন শিল্প প্রতিষ্ঠায় বড় আকারের ঋণ নিয়ে উদ্যোক্তাদের সংগঠিত করায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে ব্যাংকটি।
১৯৯৫ সাল থেকে এ পর্যন্ত ৯৭টি প্রকল্পের সিন্ডিকেশন ঋণ মঞ্জুর করেছে অগ্রণী ব্যাংক। এর মধ্যে ২৬টি সিন্ডিকেট ঋণের ক্ষেত্রে প্রধান সংগঠকের (লিড অ্যারেঞ্জার) ভূমিকা পালন করে।
ব্যাংকটির সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, এ ধরনের ঋণ বিতরণই নয়, আদায়ের ক্ষেত্রেও পারদর্শিতা আছে তাদের। এ ধরনের ঋণ যাঁরা নিয়েছেন, তাঁদের মধ্যে কেউ খেলাপিও নেই। একাধিক ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠান যখন কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানকে সম্মিলিতভাবে ঋণের ব্যবস্থা করে দেয়, তখন তাকে সিন্ডিকেশন বা কনসোর্টিয়াম ঋণ বলে।
গত ডিসেম্বরে সমাপ্ত বছরের আর্থিক প্রতিবেদন অনুযায়ী, অগ্রণী ব্যাংক সিন্ডিকেশন বা কনসোর্টিয়াম ব্যবস্থার আওতায় মোট ছয় হাজার ৩০০ কোটি টাকা ঋণ মঞ্জুরি করা হয়েছে। এর মধ্যে বিতরণ করা হয়েছে চার হাজার ৪০২ কোটি টাকা। বিতরণকৃত ঋণ আদায়ের হার ৯০ শতাংশ।
সিন্ডিকেশন লোনের আওতায় মঞ্জুর করা ছয় হাজার ৩০০ কোটি টাকা ঋণের মধ্যে লিড অ্যারেঞ্জার হিসেবে চার হাজার ৪০৫ কোটি টাকার ব্যবস্থা করেছে অগ্রণী ব্যাংক। এ অর্থের তিন হাজার ৯৫ কোটি টাকা ঋণ বিতরণ করা হয়েছে বলে ব্যাংক সূত্রে জানা গেছে। লিড অ্যারেঞ্জার হিসেবে ঋণ আদায়ে দক্ষতা দেখিয়েছে রাষ্ট্রীয় আর্থিক প্রতিষ্ঠানটি।
অগ্রণী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোহম্মদ শামস্-উল ইসলাম বলেন, ‘এই ক্ষেত্রে আমরা খুব ব্যতিক্রম। আমি মনে করি, সিন্ডিকেশন লোনের ক্ষেত্রে আমরা যে দক্ষতা দেখিয়েছি, তা আশাতীত।
তিনি বলেন, ‘আমাদের কোনো এনপিএল (নন-পারফরমিং লোন) নেই। ব্যাংকিং খাতে একে অগ্রণী ব্যাংকের একক দক্ষতা বলা যায়। ’
শামস্-উল ইসলাম বলেন, ‘কিছুদিনের মধ্যেই আপনারা দেখবেন, দেশের অর্থনীতিতে নতুন মাত্রা যোগ করতে পাঁচ হাজার ৮০০ কোটি টাকার একটি প্রকল্প আসছে। সেখানেও অগ্রণী ব্যাংক লিড অ্যারেঞ্জার। পদ্মা সেতু নির্মাণে অর্থায়নের দিক থেকেও অগ্রণী ভূমিকা রেখেছে অগ্রণী ব্যাংক। সেতুটি নির্মাণে বৈদেশিক মুদ্রার শতভাগ জোগান দিয়েছে এই ব্যাংকটি। এ ছাড়া কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রে অর্থায়নেও আমরা (অগ্রণী ব্যাংক) লিডার। জনতা ব্যাংকও সেখানে আছে। ’
ইউনিক মেঘনাঘাট পাওয়ার লিমিটেড নামের বিদ্যুৎকেন্দ্রের জন্য সিন্ডিকেশন ব্যবস্থার আওতায় মোট প্রকল্প ব্যয় চার হাজার ৭৩ কোটি টাকার বিপরীতে তিন হাজার ৫৫ কোটি টাকার তহবিল জোগানেও লিড অ্যারেঞ্জার ও এজেন্ট ব্যাংক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছে অগ্রণী ব্যাংক লিমিটেড।
১৯৭২ সালে রাষ্ট্রপতি অধ্যাদেশ নম্বর-২৬-এর অধীন হাবিব ব্যাংক ও কমার্স ব্যাংকের দায় ও সম্পদ নিয়ে অগ্রণী ব্যাংক গঠিত হয়। এই ব্যাংক ২০০৭ সালের ১৭ মে কম্পানি আইন-১৯৯৪-এর অধীন রাষ্ট্র মালিকানাধীন বাণিজ্যিক ব্যাংক হিসেবে নিবন্ধিত হয়।