সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শনিবার (৯ এপ্রিল) ছড়িয়ে পড়ে কিংবদন্তি চিত্রনায়ক ও ঢাকা-১৭ আসনের এমপি আকবর হোসেন পাঠান ফারুক মারা গেছেন। অথচ তিনি মারা যাননি। বিভিন্ন মাধ্যমে তার মৃত্যুর গুজব ছড়িয়ে পড়েছে। তিনি সিঙ্গাপুরের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। বর্তমানে সিঙ্গাপুরের মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালে চিকিৎসা চলছে তার।
শনিবার (৯ এপ্রিল) মধ্যরাত থেকেই হঠাৎ এ অভিনেতার মৃত্যুর গুজব ছড়িয়ে পড়ে। কে বা কারা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেয় এই ভুয়া খবরটি। ফারুকের পুত্র রোশন হোসেন শরৎ জানান, তার বাবা এখনও বেঁচে আছেন। বিভিন্ন মাধ্যমে মৃত্যুর সংবাদ ছড়িয়ে পড়ার বিষয়টি গুজব। এদিকে ফারুকের স্ত্রীও ফারহানা সিঙ্গাপুর থেকে গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করে বলেন, ‘এখনও ফারুক বেঁচে আছেন। আমরা বিব্রত হচ্ছি এসব খবর শুনে। তোমরা দোয়া করো তোমাদের নায়কের জন্য। ’
সবার কাছে দোয়া চেয়ে ফারুকের স্ত্রী আরও বলেন, ফারুকের জন্য সবাই দোয়া করবেন। আল্লাহ যেন আবার তাকে আমাদের মধ্যে সুস্থভাবে ফিরিয়ে দেন।
শনিবার রাতে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে এ সংক্রান্ত একটি পোস্ট দেন তিনি। পোস্টে জায়েদ খান লেখেন, ‘আমাদের সবার প্রিয় মিয়া ভাই সুস্থ আছেন, ভালো আছেন। কেউ দয়া করে গুজব ছড়াবেন না। সবাই তার জন্য দোয়া করবেন। ‘
প্রায় পাঁচ দশক ধরে বড় পর্দা মাতিয়েছেন নায়ক ফারুক। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ থেকে ঢাকা-১৭ আসনে প্রথমবারের মতো সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন তিনি।
১৯৪৮ সালের ১৮ আগস্ট সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন চিত্রনায়ক ফারুক। ১৯৭১ সালে এইচ আকবর পরিচালিত ‘জলছবি’তে অভিনয়ের মধ্য দিয়ে বাংলা চলচ্চিত্রে ফারুকের আত্মপ্রকাশ ঘটে। প্রথম সিনেমায় তার বিপরীতে ছিলেন মিষ্টি মেয়ে কবরী।
এরপর ১৯৭৩ সালে মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক চলচ্চিত্র খান আতাউর রহমানের পরিচালনায় ‘আবার তোরা মানুষ হ’ ও ১৯৭৪ সালে নারায়ণ ঘোষ মিতার আলোর মিছিল এ দুটি সিনেমায় পার্শ্বচরিত্রে অভিনয় করেন তিনি।
১৯৭৫ সালে তার অভিনীত ‘সুজন সখী’ ও ‘লাঠিয়াল’ সিনেমা দুটি ব্যাপক ব্যবসাসফল হয়। ওই বছর ‘লাঠিয়াল’র জন্য তিনি সেরা-পার্শ্ব অভিনেতা হিসেবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পান। ১৯৭৬ সালে ‘সূর্যগ্রহণ’ ও ‘নয়নমণি’, ১৯৭৮ সালে শহীদুল্লাহ কায়সারের উপন্যাস অবলম্বনে নির্মিত আবদুল্লাহ আল মামুনের ‘সারেং বৌ’, আমজাদ হোসেনের ‘গোলাপী এখন ট্রেনে’সহ বেশকিছু সিনেমায় ‘মিয়া ভাই’খ্যাত চিত্রনায়ক ফারুকের অভিনয় প্রশংসিত হয়।
এর আগে গত বছরের ৮ এপ্রিল সন্ধ্যা থেকে হঠাৎ তার মৃত্যুর গুজব ছড়িয়ে পড়েছিল। ঠিক এক বছর পর আবারও কিংবদন্তি এ অভিনেতার মৃত্যুর গুজব ছড়ানো হচ্ছে। এতে চরম বিরক্ত তার পরিবার ও স্বজনরা।