সম্প্রতি পরীক্ষার খাতায় ‘মন ভালো নেই’ লিখে ভাইরাল হয় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী। তাকে নিয়ে জল ঘোলা কম হয়নি। ডিপার্টমেন্ট থেকে প্রক্টর সেখান থেকে জাতীয় সব গণমাধ্যমের শিরোনামে আসে জবি শিক্ষার্থীর মন ভালো না থাকার বিষয়টি।
শুধু কি একজন? কারনে অকারণে এমন হাজারো শিক্ষার্থীর মন ভালো নেই।
এমন মন ভালো না থাকা শিক্ষার্থীদের পাশে আছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কাউন্সিলিং সেন্টার।
শিক্ষার্থীদের মানসিকভাবে দৃঢ় রাখতে ‘সুস্থ মন সুস্থ জীবন, গড়ে তুলি সুন্দর ভুবন’। এই স্লোগানকে সামনে রেখে চলতি বছরের ৩ জানুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. ইমদাদুল হক নিজে উপস্থিত থেকে ভাষা শহীদ রফিক ভবন চত্বরে কাউন্সিলিং সেন্টারের শুভ উদ্বোধন করেন।
ভবিষ্যতে যাতে শিক্ষার্থীদের মাঝে আত্মহত্যার প্রবনতা কমে, শিক্ষার্থীদের যাতে হতাশামুক্ত রাখা যায় সে উদ্দেশ্যকে সামনে রেখে বিশ্ববিদ্যালয়ে চালু করা হয় কাউন্সিলিং সেন্টার সেখানে শিক্ষার্থীদের মানসিক সাহায্য দেওয়ার জন্য সর্বদা প্রস্তুত থাকবে প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত মনোবিদগণ।
সম্প্রতি মন ভালো না থাকা জবির ওই শিক্ষার্থীর বক্তব্য ছিল করোনার মধ্যে দীর্ঘ সময়ে একা থাকাসহ নানা কারণে সে মানসিক চাপ ও প্রচণ্ড একাকীত্বের মধ্যে ছিলো। মানসিকভাবে ভেঙ্গ পড়ার কারণেই সে এই কাজটি করেছিল। শিক্ষার্থীরা যদি মানসিকভাবে এমন ভঙ্গুর থাকে তাহলে বিশ্ববিদ্যালয়ে কাউন্সিলিং সেন্টার আছে কেন?
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কাউন্সেলিং সেন্টারের আহ্বায়ক অধ্যাপক ড.নূর মোহাম্মদ এর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, কেউ যদি মানসিক সমস্যায় ভোগে তাহলে তাকে কাউন্সিলিং সেন্টার এ আসতে হবে। কারো মাঝে যদি হতাশাজনক কিছু লক্ষ্য করা যায় তাহলে তার বন্ধু বান্ধব সকলে যেন হতাশায় নিমজ্জিত থাকা ওই ব্যক্তিকে কাউন্সিলিং নিতে উৎসাহ দেন। এখানে কোনো ধরনের ফি ছাড়াই শিক্ষার্থীরা কাউন্সিলিং সেবা নিতে পারবে।
প্রায় ৭ মাস পার হলেও পূর্নাঙ্গভাবে কাউন্সেলর নিয়োগ হচ্ছে না কেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, কাউন্সেলিং সেন্টার জানুয়ারিতে চালু হলেও এর নিয়োগ এখনো প্রক্রিয়াধীন রয়েছে তবে আশাবাদী খুব দ্রুত এর সমাধান হবে। কাউন্সেলর স্বল্পতা রয়েছে তবে বর্তমানে মনোবিজ্ঞান বিভাগের মাস্টার্স অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীদের তিন দিনের বেসিক স্কিল ট্রেনিং শেষ হয়েছে সেখান থেকে ১২ জন কাউন্সেলর নেওয়া হবে। শিক্ষার্থীদের মানসিকভাবে সুস্থ রাখতে সর্বদা পাশে আছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কাউন্সেলিং সেন্টার। এক্ষেত্রে হতাশাগ্রস্ত শিক্ষার্থীদের হতাশা থেকে বের হতে তার সহপাঠী ও পরিবারের লোকজনকে সবচেয়ে বেশি উৎসাহ দিতে আহ্বান করেন।
কাউন্সেলর সেন্টার বিষয়ে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. ইমদাদুল হক জানান, কাউন্সেলিং সেন্টার এ পূর্ণাঙ্গ কাউন্সেলর নিয়োগের বিষয়টা ঝুলে আছে, নিয়োগ প্রক্রিয়া চলমান আছে কাউন্সেলর নিয়োগ দিতে হলে ইউজিসি থেকে আমাদের পোস্ট আনতে হবে। এখন কাউন্সেলদের কাউন্সেলিং দিতে যদি অতিমাত্রায় বেগ পেতে হয় তাহলে বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। শিক্ষার্থীদের মানসিক স্বাস্থ্যসেবা দিতে কাউন্সেলর সেন্টার ও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় সবসময় শিক্ষার্থীদের পাশে থাকবে বলে তিনি নিশ্চিত করেছেন।