মেহেরপুরে পুলিশ কনস্টেবল আলাউদ্দিন হত্যা মামলায় চারজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। বৃহস্পতিবার দুপুরের দিকে মেহেরপুরের অতিরিক্ত জজ আদালতের বিচারক রিপতি কুমার বিশ্বাস এই রায় দেন।
দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- কুষ্টিয়া জেলার মিরপুর উপজেলার বালিদাপাড়া গ্রামের কালু মণ্ডলের ছেলে আনিস মণ্ডল, একই গ্রামের আব্দুল মালেক মণ্ডলের ছেলে, তাহাজুত হোসেন এবং সোনাউল্লাহর ছেলে শাকিল হোসেন ও রুবেল হোসেন।
মামলার অপর আসামি দুই আসামি সিদ্দিক ও আতিয়ারের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় তাদেরকে বেকসুর খালাস দেওয়া হয়েছে।
মামলার বিবরণে জানা যায় ২০১৫ সালের ২৪ জুলাই গাংনী উপজেলার পিরতলা আইসি ক্যাম্পের এস আই সুবীর রায়ের নেতৃত্বে পুলিশের একটি দল বামুন্দি-কাজিপুর এলাকায় টহল থাকাকালীন মাইক্রোযোগ ওই সড়ক দিয়ে মাদকদ্রব্য পাচার করা হবে বলে গোপন সূত্রে খবর পান। এ সময় তারা পীরতলা সাহেবনগর এলাকায় অবস্থান নিয়ে মাইক্রোবাসটিকে আটকানোর জন্য রাস্তার উপরে কাঠের গুঁড়ি ফেলে ব্যারিকেড সৃষ্টি করেন। কাছাকাছি এসে পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে মাইক্রোবোসের চালক গাছের গুঁড়ির পাশ কাটিয়ে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে।
এতে বাধা দেন কনস্টেবল আলাউদ্দিন। এ সময় হঠাৎ মাইক্রোবাসটি কনেস্টবল আলাউদ্দিনকে ধাক্কা দিলে তিনি ছিটকে যানটির বাম্পারের উপরে আটকে যান। মাদক ব্যবসায়ীরা পালানোর সময় বাম্পারে আটকে যাওয়া কনস্টেবল আলাউদ্দিনকে টেনেহিঁচড়ে ঘটনাস্থল থেকে প্রায় দেড় কিলোমিটার দূরে নিয়ে যায়। পরে হাড়াভাঙ্গা ডিএইচসিপি আর ফাজিল মাদ্রাসার সামনে স্পিড ব্রেকারের সামনে আলাউদ্দিন ছিটকে পড়ে যান। পরে সহকর্মীরা দ্রুত তাকে উদ্ধার করে কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতাাল পাঠালে সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় কনস্টেবল আলাউদ্দিন মৃত্যুবরণ করেন।
পরে ঘটনাস্থল থেকে দুই বস্তায় মোট ৩৪০ বোতল ফেন্সিডিল উদ্ধার এবং কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলার বালিদাাপাড়া গ্রাম থেকে কুষ্টিয়া-চ ০২-০০১১ নাম্বারের একটি মাইক্রোবাস জব্দ করা হয়। ওই ঘটনায় এসআই সুবীর রায় বাদী হয়ে গাংনী থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
একই ঘটনায় ফেনসিডিল উদ্ধার হওয়ায় আসামিদের বিরুদ্ধে মাদক মামলাও করা হয়। পরে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা প্রাথমিক তদন্ত শেষে আসামিদের বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করেন। হত্যা মামলায় মোট ১৬ জন সাক্ষী তাদের সাক্ষ্য প্রদান করেন। এতে আসামিরা দোষী প্রমাণিত হওয়ায় তাদের প্রত্যেককে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড, ১০ হাজার টাকা করে জরিমানা, অনাদায়ে আরও ৬ মাসের কারাণ্ডাদেশ দেন আদালত।