December 23, 2024, 7:51 am

মাঙ্কিপক্স নিয়ে সতর্ক করলেন বিএসএমএমইউ উপাচার্য।

অনলাইন ডেক্স
  • Update Time : Saturday, July 30, 2022,
  • 81 Time View

মাঙ্কিপক্স মোকাবিলায় বাংলাদেশ প্রস্তুত রয়েছে বলে জানিয়েছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডা. শারফুদ্দিন আহমেদ।  শনিবার (৩০ জুলাই) দুপুর ১২ টায় বিএসএমএমইউয়ের মিল্টন হলে মাঙ্কিপক্স বিষয়ে সতর্কতামূলক এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।

ডা. শারফুদ্দিন আহমেদ বলেন, সম্প্রতি যুক্তরাজ্য, ইতালি, জার্মানি, নেদারল্যান্ডস, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, অস্ট্রেলিয়া, কানাডাসহ ১৬টি দেশে একটি ফুসকুড়িসহ জ্বরের ঘটনা ঘটেছে যা মাঙ্কিপক্স হিসেবে নির্ণয় করা হয়। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা মাঙ্কিপক্সকে শনাক্তযোগ্য ও বর্ধনশীল ব্যাধি হিসেবে বর্ণনা করেছে।

সর্বশেষ তথ্য অনুয়ায়ী বিশ্বব্যাপী এ পর্যন্ত প্রায় ১৭ হাজার মাঙ্কিপক্স রোগী পাওয়া গেছে।

 

তিনি আরও বলেন, মাঙ্কিপক্স সরাসরি সংস্পর্শের মাধ্যমে ছড়ায়, যার মধ্যে শেষ্মা ঝিলি এবং ত্বকের ক্ষতের মাধ্যমে বা দূষিত বস্তুর সংস্পর্শে আসা অন্যতম। এটি শ্বাসপ্রশ্বাসের ফোঁটা বা ড্রপলেট দ্বারাও সংক্রামিত হতে পারে। স্বল্প দূরত্বে এবং দীর্ঘক্ষণ সান্নিধ্যে থাকার সময়ে। মাঙ্কিপক্সে আক্রান্ত অন্য ব্যক্তির সঙ্গে ঘনিষ্ঠ শারীরিক যোগাযোগের ক্ষেত্রে যে কেউ ঝুঁকিপূর্ণ। প্রধান ফ্যাক্টর হলো একাধিক সঙ্গী থাকা, দেখা গেছে ৭৪ শতাংশ রোগী বহুগামিতায় অভ্যস্ত। আর ২৬ শতাংশ রোগীর মাঙ্কিপক্সের সঙ্গে এইচআইভি পজিটিভ ধরা পড়ে।

সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন,  মাঙ্কিপক্স একটি ডিএনএ ভাইরাস। কাউপক্স, ভ্যাক্মিনিয়া এবং ভ্যারিওলা গ্রুপের ভাইরাস।
এটি একটি জুনোটিক ভাইরাস, যার প্রাথমিক সংক্রমণ সংক্রমিত প্রাণীর সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগের মাধ্যমে বা অপর্যাপ্তভাবে রান্না করা মাংস খাওয়ার মাধ্যমে ঘটে বলে বিশ্বাস করা হয়।

এই ভাইরাসের ২টা স্ট্রেইন আছে। কঙ্গো বেসিন স্ট্রেন পশ্চিম আফ্রিকার স্ট্রেইনের চেয়ে বেশি মারাত্মক।

এই ভাইরাস পশু থেকে মানুষে সংক্রমিত হয়। মানুষ থেকে মানুষে সংক্রমণই সবচেয়ে ভয়ঙ্কর মাধ্যম বলে বিবেচিত। ৯০ শতাংশ রোগী ১৫ বছরের কম বয়সী শিশু। গুটিবসন্তের টিকা বন্ধ করা এর একটি কারণ হতে পারে।

মাঙ্কিপক্সের জটিলতার মধ্যে রয়েছে স্থায়ী ক্ষত, বিকৃত দাগ, সেকেন্ডারি ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণ, ব্রঙ্কোপনিউমোনিয়া, শ্বাসকষ্ট, কেরাটাইটিস, কর্নিয়ার আলসারেশন, অন্ধত্ব, সেপ্টিসেমিয়া এবং অ্যানসেফালাইটিস। গুটিবসন্তের টিকা মাঙ্কিপক্স থেকে ৮৫ শতাংশ সুরক্ষা দেয়। ২ সপ্তাহের মধ্যে, সম্ভব হলে ৪ দিনের মধ্যে এটি ব্যবহার করতে হবে।

ইনকিউবেশন পিরিয়ড গড়ে ১২ দিন, ৪ থেকে ২১ দিন পর্যন্ত। প্রড্রোম ১ থেকে ১০ দিন স্থায়ী হয়। জ্বরজনিত অসুখের সঙ্গে ঠাণ্ডা লাগা, ঘাম, মাথাব্যথা, পিঠে ব্যথা, ক্ষুধামন্দা, ফ্যারিঞ্জাইটিস, শ্বাসকষ্ট এবং কাশি হয়ে থাকে।

লিম্ফ্যাডেনোপ্যাথি জ্বরের পরে ২-৩ দিনের মধ্যে ঘাড়ের চারদিকে দেখা যায়। ১ থেকে ১০ দিনের মধ্যে ফুসকুড়ি তৈরি হয়। ফুসকুড়ি প্রায়ই মুখে শুরু হয় এবং তারপর শরীরের বাকি অংশে ছড়িয়ে পড়ে।

বিএসএমএমইউ উপাচার্য বলেন, এই রোগ সাধারণত সেল্ফ লিমিটেড। আক্রান্ত বা সন্দেহযুক্ত প্রাণীর সংস্পর্শে যাওয়া বন্ধ রাখতে হবে। প্রাণীর কামড়, আঁচড় এবং লালা বা প্রস্রাবের সংস্পর্শে থেকে দূরে থাকা অপরিহার্য। আর আক্রান্ত রোগীকে হাসপাতালে ভর্তি করে সকল ক্ষত শুকানো পর্যন্ত আইসোলেশন আর কোয়ারেন্টিনে রেখে চিকিৎসা করা আবশ্যক।

তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশে এখনও এই রোগের কোনো রোগী ধরা পড়েনি।  করোনা মহামারিকে আমরা যেভাবে মোকাবিলা করেছি, ব্ল্যাক ফাঙ্গাসকে যেমনভাবে বাংলাদেশে আতঙ্ক সৃষ্টি করতে দিইনি, সেভাবে আমরা মাঙ্কিপক্স ভাইরাসের জন্যও প্রস্তুত আছি। যে কোনো ধরনের গুজব দূরে রেখে স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ মতো দেশের মানুষকে এই রোগ থেকেও আমরা নিরাপদ রাখতে পারবো।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
© All rights reserved © 2024
ডিজাইন ও কারিগরি সহযোগিতায়: রায়তা-হোস্ট
tmnews71