২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলা মামলায় বিনা অপরাধে মো. জালাল ওরফে জজ মিয়াকে চার বছর কারাভোগ করতে হয়েছিল। এতে তাঁর মৌলিক অধিকার লঙ্ঘিত হয়েছে উল্লেখ করে তাঁকে ১০ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে আইনি নোটিশ পাঠানো হয়েছে।
স্বরাষ্ট্রসচিব, পুলিশের মহাপরিদর্শকসহ ১১ ব্যক্তি বরাবর এই আইনি নোটিশ পাঠানো হয়েছে। জজ মিয়ার পক্ষে আজ বৃহস্পতিবার রেজিস্ট্রি ডাকযোগে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মোহাম্মদ হুমায়ুন কবির ও মোহাম্মদ কাউছার এই আইনি নোটিশ পাঠান।
আইনি নোটিশ যাঁদের কাছে পাঠানো হয়েছে, তাঁদের মধ্যে তৎকালীন স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফজ্জামান বাবর, পুলিশের তৎকালীন মহাপরিদর্শক খোদা বকশ চৌধুরী, সহকারী পুলিশ সুপার আবদুর রশীদ, মুন্সী আতিকুর রহমান ও সাবেক বিশেষ পুলিশ সুপার মো. রুহুল আমিনও রয়েছেন।
নোটিশে বেআইনিভাবে জজ মিয়াকে কারাবাসে রাখার জন্য লুৎফজ্জামান বাবর, খোদা বকশ চৌধুরী, আবদুর রশীদ, মুন্সী আতিকুর রহমান, রুহুল আমিন বা অন্য কোনো কর্মকর্তা বা ব্যক্তির দায় আছে কি না, তা নিরূপণে তদন্ত কমিটি গঠন করতে বলা হয়েছে এবং তার মৌলিক অধিকার ক্ষুণ্ন হওয়ায় তাঁদের কাছ থেকে ক্ষতিপূরণের অর্থ আদায়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে বলা হয়েছে নোটিশে।
নোটিশ গ্রহণের ১৫ দিনের মধ্যে এসব বিষয়ে পদক্ষেপ জানাতে বলা হয়েছে। তা না হলে রিট দায়েরসহ প্রয়োজনীয় আইনগত পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলে নোটিশে উল্লেখ করা হয়েছে।
নোটিশে আরো বলা হয়, ২০০৪ সালের এই ভয়াবহ গ্রেনেড হামলার ঘটনায় ২০০৫ সালের জুনে জজ মিয়াকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ মামলায় তাঁকে জজ মিয়া সাজিয়ে কারাবাসে রাখা হয়। ২০০৯ সালের জুনে তিনি মুক্তি পান। কোনো দোষ ছাড়াই তাঁকে প্রায় চার বছর কারাগারে রাখা হয়।
২০০৪ সালের ২১ আগস্ট ঢাকার বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেত্রী ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সমাবেশে গ্রেনেড হামলা চালানো হয়। এতে দলের নেতা-কর্মীসহ ২২ জন নিহত হন। আহত হন তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেতা শেখ হাসিনাসহ কয়েক শ নেতা-কর্মী।
শুরু থেকেই এ গ্রেনেড হামলা মামলার তদন্ত ভিন্ন খাতে নেওয়ার চেষ্টা হয়। প্রথমে শৈবাল সাহা পার্থ, পরে আওয়ামী লীগ নেতা মোখলেসুর রহমানকে ফাঁসাতে না পেরে নোয়াখালীর সেনবাগ থেকে ধরে আনা হয় মো. জালালকে। তাঁকে দীর্ঘদিন রিমান্ডে রেখে ভয়ভীতি ও প্রলোভন দেখিয়ে তাঁর কাছ থেকে একটি সাজানো জবানবন্দি আদায় করা হয়।