নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্যপণ্যের চড়া দামের তালিকা লম্বা হচ্ছে। এ তালিকায় যুক্ত হয়েছে অপেক্ষাকৃত স্বল্প মূল্যের প্রোটিনের উৎস ডিমও। এমনকি অতীতের সকল রেকর্ড ভেঙে সর্বোচ্চ দামে বিক্রি হচ্ছে এ পণ্যটি।
চাহিদা বৃদ্ধি, পরিবহণ খরচ বাড়া ও মুরগির খাদ্যের দাম বাড়ায় ডিমেরও দামে এমন পরিস্থিতি বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।
তবে এর আগে দেশের মানুষকে কখনো এত দামে ডিম কিনতে হয়নি বলে জানিয়েছেন তারা। তারা বলছেন, ২০০৯ ও ২০১০ সালে ডিমের দাম অস্বাভাবিকভাবে বেড়েছিল। কারণ ছিল বার্ড ফ্লু। তখন এ রোগের কারণে অনেক খামার বন্ধ হয়ে সঙ্কট তৈরি হয়।
রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা যায়, ফার্মের বাদামি ডিম প্রতি হালি বিক্রি হচ্ছে ৪৭ থেকে ৫০ টাকায়। আর সাদা ডিম ৪৫ টাকায় প্রতি হালি বিক্রি হচ্ছে। অন্যদিকে প্রতি হালি হাঁসের ডিম বিক্রি হচ্ছে ৬৫ থেকে ৭০ টাকায়। আর দেশি মুরগির ডিম বিক্রেতারা প্রতি হালি ৫৪ থেকে ৫৮ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) তথ্য মতে, ২০০৮-০৯ ও ২০০৯-১০ অর্থবছরে দেশে মুরগির ডিমের হালির গড় দাম ছিল ২৭ টাকার আশপাশে। সর্বশেষ গত জুলাইয়ে গড় দাম ছিল ৪০ টাকার কিছু কম।
বাংলাদেশ অর্থনৈতিক সমীক্ষা-২০২২ অনুযায়ী, দেশে বছরে প্রায় দুই হাজার কোটি ডিম উৎপাদিত হয়। দেশে উৎপাদিত ডিম দিয়েই চাহিদা মেটে।
রংপুর সদরের পোল্ট্রি উদ্যোক্তা কৃষিবিদ আব্দুল্লাহ হিল হাফিজ গণমাধ্যমে বলেন, ‘শুক্রবার খামারে প্রতি হালি ডিম ৪২ টাকা দরে বিক্রি করেছি। সাম্প্রতিক সময়ে লোডশেডিংয়ের কারণে খামার চালানো কঠিন হয়ে পড়েছে। গরমে অনেক মুরগি মারা গেছে। জেনারেটরের মাধ্যমে বিদ্যুৎ সরবরাহের কারণে খরচও বেড়েছে। এ ছাড়া মুরগির ফিডের দামও অতীতের যে কোনো সময়ের চেয়ে বাড়তি। ’
‘স্বল্প সময়ে দুই দফা জ্বালানি তেলের দাম বাড়ায় পরিবহন খরচও বেড়েছে। যার প্রভাব পড়ছে ডিম ও ব্রয়লার মুরগির বাজারে। প্রতিকূল অবস্থায় টিকতে না পেরে অনেক খামারি ব্যবসা গুটিয়ে ফেলেছেন। যে কারণে বাজারে মুরগি ও ডিমের সরবরাহ কমে গেছে,’ যোগ করেন তিনি।