আজ শুক্রবার বাদ রাজধানীর নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে শাওনের স্মরণে গায়েবানা জানাজা ও দোয়া অনুষ্ঠিত হয়। গায়েবানা জানাজার মধ্য দিয়ে নারায়ণগঞ্জে যুবদল নেতা রাজা আহমেদ শাওনকে স্মরণ করেছে বিএনপি।
জানাজার আগে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, এই সরকারের পেটুয়া বাহিনীর গুলিতে ভোলায় নুরে আলম ও আবদুর রহিমের প্রাণ গেল। গতকালও নারায়ণগঞ্জে আমাদের আরেক ভাই শাওনের প্রাণ গেল, রক্ত ঝরল।
বিএনপির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে সারা দেশে অসংখ্য জায়গায় একইভাবে সরকারের পুলিশ বাহিনী গুলি চালিয়েছে।
মির্জা ফখরুল বলেন, শাওনের এই রক্ত কখনো বৃথা যেতে পারে না। তার আত্মত্যাগ আমাদের আরো শক্তিশালী করবে। গণতন্ত্রের মুক্তির জন্য যে সংগ্রাম শুরু করেছি, যে লড়াই আমরা শুরু করেছি, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির জন্য যে লড়াই আমরা শুরু করেছি তার মাধ্যমে এই সরকারের পতন ঘটাব। আমরা শান্তিপূর্ণভাবে এই আন্দোলনের দেশের সমগ্র জনগণকে সম্পৃক্ত করে রাজপথে আন্দোলনের মধ্য দিয়ে আমরা বিজয় অর্জন করব ইনশাল্লাহ।
তিনি বলেন, শাওনকে আমরা শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করব। তার শোককে আমরা শক্তিতে রূপান্তিত করব এবং সমস্ত শক্তিকে একত্রিত করে আমরা ওদের পরাজিত করব। আসুন, আমরা শাওনের আত্মার মাগফেরাত কামনা করি, আল্লাহ তা‘লা যেন তাকে বেহেশতে নসিব করেন।
তিনি অভিযোগ করে বলেন, সকালে শাওনের বাসায় গেলাম। তার মায়ের সঙ্গে দেখা করেছি, তার পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে দেখা করেছি। সে (শাওন) একটি ওয়েলডিং কারখানাতে ওয়েলডিংয়ের কাজ করত এবং যুবদলের সক্রিয় কর্মী ছিল। কী অমানবিক, কী হৃদয় বিদারক। শাওনের লাশটিও সরকার তার পরিবারের কাছে হস্তান্তর করে নাই। রাত ২টার সময়ে পুলিশ পাহারায় তার লাশ নিয়ে গিয়ে সেখানে দাফন করেছে। তার দলের নেতাকর্মী, পরিবারের সদস্য ও তার বন্ধুদের কাউকে সেই জানাজায় অংশ নিতে দেয়নি।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, এই ফ্যাসিস্ট সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকে গুম-খুন-হত্যার মধ্য দিয়ে একদলীয় শাসনকে প্রতিষ্ঠিত করতে চায়, তারা বিরোধী দলকে নিশ্চিহ্ন করতে চায়। বিশেষ করে স্বাধীনতার ঘোষক জিয়াউর রহমানের দল বিএনপি, দেশনেত্রী খালেদা জিয়ার দল বিএনপি, আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বিএনপিকে তারা নির্মূল করতে চায়।
নয়া পল্টনের গায়েবানা জানাজায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য আমান উল্লাহ আমান, আবদুস সালাম, আবুল খায়ের ভুঁইয়া, কেন্দ্রীয় নেতা খায়রুল কবির খোকন, হাবিব উন নবী খান সোহেল, নাজিম উদ্দিন আলম, শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, মফিকুল হাসান তৃপ্তি, আবদুস সালাম আজাদ, মীর সরফত আলী সপু, সাইফুল আলম নিরব,মীর নেওয়াজ আলী, খন্দকার আবু আশফাক, মহানগরের রফিকুল আলম মজনু, আমিনুল হক, যুবদলের সুলতান সালাহউদ্দিন টুকু, স্বেচ্ছাসেবক দলের আবদুল কাদির ভুঁইয়া জুয়েল, এনডিপির আবু তাহের, জাগপার খন্দকার লুতফর রহমানসহ বিভিন্ন অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা অংশ নেন।
এর আগে বিএনপি মহাসচিব নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লরা নবীনগর বাজারে রাজা আহমেদ শাওনের পরিবারের সাথে দেখা করে তাদের সমবেদনা জানান এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের সান্ত্বনা জানান। তিনি যুবদলের সভাপতি সুলতান সালাহউদ্দিন টুকুসহ নেতাকর্মীদের নিয়ে শাওনের কবর জিয়ারত করেন। দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপারসন তারেক রহমানের পক্ষ থেকে শাওনের পরিবারকে আর্থিক অনুদান প্রদান করেন বিএনপি মহাসচিব।