কক্সবাজারের টেকনাফে ব্যবসায়ীকে অপহরণ করে ১৭ লাখ টাকা মুক্তিপণ আদায়ের ঘটনার মামলায় জেলা গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) বহিষ্কৃত সাত সদস্যের প্রত্যেককে সাত বছর করে কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে তাদের ১ লাখ টাকা করে জরিমানা, অনাদায়ে আরও এক বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।
কক্সবাজার জেলা দায়রা ও জজ আদালতের বিচারক মোহাম্মদ ইসমাইল মঙ্গলবার (২০ সেপ্টেম্বর) দুপুরে এ রায় দেন।
দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- তৎকালীন ডিবি পুলিশের এসআই মনিরুজ্জামান ও আবুল কালাম আজাদ, এএসআই ফিরোজ, গোলাম মোস্তফা ও আলাউদ্দিন এবং কনস্টেবল আল আমিন ও মোস্তফা আজম।
আসামিদের উপস্থিতিতে বিচারক রায় ঘোষণা করেন।
আদালত সূত্রে জানা যায়, ২০১৭ সালের ২৪ অক্টোবর কক্সবাজার সদর থানার পেছনের রোড থেকে ডিবি পুলিশ পরিচয়ে কয়েকজন টেকনাফের ব্যবসায়ী আবদুল গফুরকে মাইক্রোবাসে তুলে নিয়ে যান। তারা ব্যবসায়ীকে ‘ক্রসফায়ারে’ মেরে ফেলার হুমকি দিয়ে স্বজনদের কাছে ১ কোটি টাকা মুক্তিপণ দাবি করেন। এরপর ব্যবসায়ীর পরিবার ১৭ লাখ টাকা দিতে রাজি হয়।
এই টাকা হাতে পাওয়ার পরদিন ভোরে আবদুল গফুরকে কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভ সড়কের শামলাপুরে ছেড়ে দেওয়া হয়। ঘটনাটি গফুরের স্বজনেরা সেনাবাহিনীর নিরাপত্তা চৌকিতে জানায়। এরপর ডিবি পুলিশের সদস্যদের বহন করা মাইক্রোবাসটি ওই সড়কের সেনা চৌকিতে দিয়ে যাওয়ার সময় দায়িত্বরত সেনাসদস্যরা যানটি তল্লাশি করে ১৭ লাখ টাকা উদ্ধার করেন। এ সময় ডিবির এসআই মনিরুজ্জামান দৌড়ে পালিয়ে গেলেও বাকি ছয়জনকে ঘটনাস্থল থেকে আটক করেন সেনা সদস্যরা।
এ ঘটনায় ব্যবসায়ী আবদুল গফুর বাদী হয়ে ডিবি পুলিশের সাত সদস্যের বিরুদ্ধে টেকনাফ মডেল থানায় মামলা করেন। প্রায় ১০ মাস তদন্ত শেষে পুলিশ ব্যুরো অব
ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) ২০১৮ সালের আগস্ট মাসের প্রথম সপ্তাহে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেন। মামলায় ডিবির সাত সদস্যকে অভিযুক্ত করা হয়। গেল ৫ সেপ্টেম্বর বিচারিক কার্যক্রম শেষে আজ ২০ সেপ্টেম্বর রায় ঘোষণা করার দিন ধার্য করেছিলেন বিচারক।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী (পিপি) ফরিদুল আলম বলেন, ‘মামলায় ৩৬৫ ধারায় প্রত্যেককে ৫ বছর করে কারাদণ্ড ও এক লাখ টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও এক বছরের কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত। অপর ৩৮৬ ধারায় প্রত্যেককে ৭ বছর করে কারাদণ্ড ও দুই লাখ টাকা করে জরিমানা অনাদায়ে আরও দুই বছর কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে। উভয় সাজা একসঙ্গে ভোগ করতে হবে। ফলে সাজা সাত বছর বলে গণ্য হবে। ’