রংপুরে বিএনপির পূর্ব ঘোষিত গণসমাবেশ শনিবার (২৯ অক্টোবর)। তবে সমাবেশের একদিন আগে থেকেই বন্ধ বাস চলাচল। শুক্রবার (২৮ অক্টোবর) সকাল থেকে জেলা মোটর মালিক সমিতির ডাকা ধর্মঘটে বাস চলাচল বন্ধ থাকবে সমাবেশের দিন সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত।
ধর্মঘট অনুযায়ী আজ সকাল থেকে কোনও বাস রংপুর ছেড়ে যায়নি।
এতে ভোগান্তিতে পড়েছেন যাত্রীরা। বাস না পেয়ে অনেকে বাড়ি ফিরে যাচ্ছেন।
সরেজমিনে দেখা গেছে, রংপুর নগরীর কামারপাড়ার ঢাকা কোচ স্ট্যান্ডে বাসের টিকিট কাউন্টারগুলো বন্ধ। স্ট্যান্ডে সব ঢাকাগামী বাস সারি সারি দাঁড়িয়ে আছে। কাউন্টারের ম্যানেজারের দাবি, বিএনপির সমাবেশকে ঘিরে সহিংসতার আশঙ্কায় বাস চলাচল বন্ধ রয়েছে।
তবে বাসচালক মমতাজ উদ্দিন বলছেন, রংপুরে বিএনপি মহাসমাবেশ ডেকেছে। ক্ষমতাসীন দলও পাল্টা কর্মসূচি দিতে পারে। এতে যে কোনো সময় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। এমন আশঙ্কায় বাস বন্ধ রেখেছেন মালিকরা।
রংপুর কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনালেও একই দৃশ্য। সকাল থেকে কোনও বাস টার্মিনাল ছেড়ে যায়। শতাধিক রুটের সব বাস বন্ধ রয়েছে। ট্রাক, মাইক্রোবাস ও মিনিবাস চলাচলও বন্ধ রয়েছে। বাসচালক ও তাদের সহযোগীরা বলছেন, মালিকের নির্দেশে বাস চলাচল বন্ধ রয়েছে।
রংপুর-কুড়িগ্রাম সড়কে প্রশাসনিক হয়রানির প্রতিবাদ ও মহাসড়কে নছিমন-করিমনসহ অবৈধ যানচলাচল বন্ধে ৩৬ ঘণ্টার পরিবহন ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে মোটর মালিক সমিতি। গণসমাবেশে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করতেই সরকারের মদদে পরিবহন ধর্মঘট হয়েছে বলে দাবি বিএনপির।
তবে এ অভিযোগ অস্বীকার করেছেন বৃহস্পতিবার দুপুরে রংপুর জেলা মোটর মালিক সমিতির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আফতাবুজ্জামান নিপ্পন। তিনি বলেন, প্রশাসনিক হয়রানি এবং মহাসড়কে নছিমন করিমন বন্ধের দাবিতে শুক্রবার ( ২৮ অক্টোবর) সকাল ছয়টা থেকে শনিবার (২৯ অক্টোবর) সন্ধ্যা ছয়টা পর্যন্ত ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে পরিবহন মালিক সমিতি। মোটর, ট্রাক মালিক, ট্রাক্টর, কার, মাইক্রোবাস মালিক সমিতি যৌথসভার মাধ্যমে এই ধর্মঘটের ডাক দেওয়া হয়।
সমাবেশের সার্বিক প্রস্তুতির বিষয়ে গণসমাবেশ বাস্তবায়ন কমিটির সদস্যসচিব ও সংসদ সদস্য হারুন অর রশিদ বলেন, পরিবহন ধর্মঘট হবে এটা আগেই ধারণা করেছিলাম। সরকারের নীতি নির্ধারকরা তিনটি গণসমাবেশ দেখেই ধর্মঘট দিয়েছে। আমরা মনে করি এই পরিবহন ধর্মঘটের মধ্য দিয়ে রাজপথ সরকার নিজেই বিএনপি এবং জনগণের দখলে দিয়ে দিল। এখন নির্বিঘ্নে রাজপথ দিয়ে মিছিল নিয়ে আসতে পারবে।
বাস ধর্মঘটের কারণে দুর্ভোগে পড়েছেন সাধারণ যাত্রীরা। ঢাকার উদ্দেশ্যে বের হয়েছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী পঙ্কজ কুমার রায়। শনিবার তার ল্যাব ফাইনাল পরীক্ষা। কিন্তু বাস বন্ধ থাকায় পড়েছেন বিপাকে। তিনি বলেন, পরীক্ষা দিতে না পারলে অনেক সমস্যায় পড়বো। যেভাবেই হোক ঢাকা পৌঁছাতে হবে।
রহিমা বেগম নামের এক নারী গাইবান্ধার উদ্দেশ্যে বাস টার্মিনালে এসেছেন। বাস না চলায় তিনিও বিপদে পড়েছেন। ওই নারী বলেন, ছেলের সঙ্গে দেখা করতে গাইবান্ধায় যাওয়ার জন্য এসেছিলাম। কিন্তু বাস বন্ধ। তাই বাড়ি ফিরে যাচ্ছি।