December 26, 2024, 1:36 pm

সুনামগঞ্জের সঙ্গে ঢাকার দূরত্ব কমছে ৫৫ কিলোমিটার।

অনলাইন ডেক্স
  • Update Time : Monday, November 7, 2022,
  • 37 Time View

আজ সারাদেশে ১০০ সেতুর উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এর মধ্যে রানীগঞ্জ-কুশিয়ারা সেতু একটি। এটা রাজধানী ঢাকার সঙ্গে হাওরবাসীর বিকল্প যাতায়াতে পাগলা-জগন্নাথপুর-আউশকান্দি সড়কে সিলেট বিভাগের সবচেয়ে লম্বা সেতু। কুশিয়ারা নদীতে নির্মিত জগন্নাথপুর উপজেলার রানীগঞ্জে ‘দক্ষিণের দুয়ার’ খ্যাত সেতুটি চালু হতে যাওয়ায় ঢাকার সঙ্গে সুনামগঞ্জের দূরত্ব কমতে যাচ্ছে ৫৫ কিলোমিটার।

কমবে যাতায়াত খরচও।

 

দুর্নাম ঘুচবে হাওর-ভাটির বিড়ম্বিত যোগাযোগের। এ উপলক্ষে হাওর জেলায় উৎসবের আমেজ বিরাজ করছে। প্রশাসনও জমকালো উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে।

সুনামগঞ্জ সড়ক বিভাগ, স্থানীয় সুধীজন ও এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ১৯৯৯ সালে এই এলাকার সন্তান, প্রয়াত জাতীয় নেতা ও সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্দুস সামাদ আজাদ পাগলা-আউশকান্দি-রানীগঞ্জ সড়ক নির্মাণের উদ্যোগ নেন। ২০০১ সালে বিএনপি ক্ষমতায় আসার পর প্রকল্পটি বাতিল করে দিয়েছিল। ২০০৮ সালে আওয়ামী লীগ আবার ক্ষমতায় আসার পর সড়ক নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়। ২০১৪ সালের ২৫ জুন একনেক সভায় সেতুর জন্য ১২৫ কোটি টাকা বরাদ্দ দিয়ে প্রকল্প পাস হয়। ২০১৬ সালের আগস্টে বাংলাদেশ-চীন যৌথ প্রতিষ্ঠান ‘চায়না রেলওয়ে ২৪ ব্যুরো গ্রুপ কম্পানি লিমিটেড ২৪ বি এবং বাংলাদেশের এমএম বিল্ডার্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং লিমিটেড যৌথভাবে কাজ শুরু করে। ২০১৭ সালের ১৪ জানুয়ারি সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের সেতুর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন।

প্রকল্প সূত্রে জানা গেছে, এই সেতুর মাধ্যমে প্রথমবারের মতো দেশে একসঙ্গে ‘আই গার্ডার’ ও ‘বক্স গার্ডারের’ সমন্বয় করা হয়েছে। ৬০টি আই গার্ডার, ১২টি স্ল্যাব এবং ১৫ স্প্যানের সমন্বয়ে ৭০২.৩২০ মিটার দৈর্ঘ্য এবং ১০.২৫ মিটার প্রস্থ এই সেতুটি। দুই দিকের দীর্ঘ আড়াই কিলোমিটার সংযোগ সড়কে রয়েছে তিনটি কালভার্ট। সেতু নির্মাণ প্রকল্পে মোট খরচ হয়েছে প্রায় ১৫০ কোটি টাকা। সেতুর দক্ষিণ পারে নির্মিত হয়েছে এ্যাক্সেল লোড কন্ট্রোল স্টেশন ও আধুনিক ওয়েব বেজড ফোর লেন টোল প্লাজা।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ওই সড়কের বিভিন্ন স্থানে আরও সাতটি সেতু ১৩৫ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মাণ করা হয়েছে। সব মিলে সিলেট বিভাগে ১৭টি সেতু উদ্বোধন হতে যাচ্ছে আজ।

জগন্নাথপুরের রসুলপুর গ্রামের প্রবীণ বাসিন্দা হুমায়ুন মিয়া বলেন, ‘কুশিয়ারা সেতু আমাদের সময়ে শেষ হবে কল্পনাও করিনি। এখন আমার চোখের সামনে নতুন স্বপ্ন হয়ে উঁকি দিয়েছে। ’

তিনি বলেন, ‘সিলেট শহর ঘুরে আমাদের ঢাকা যেতে হতো। কুশিয়ারা সেতু পার হতে স্থানীয়দেরও প্রচুর কষ্ট হতো। সেতুটি চালুর ফলে শুধু আমাদের জগন্নাথপুরবাসীই নয়, পুরো জেলার মানুষ খুশি। ’

বাগময়না গ্রামের সালেহ আহমদ বলেন, ‘আমরা সহজেই কম সময়ে ও কম খরচে ঢাকায় যাতায়াত করতে পারব। ’

সুনামগঞ্জ জেলা শ্রমিক লীগের সভাপতি ব্যবসায়ী সেলিম আহমেদ বলেন, ‘দেশের উত্তর-পূর্ব প্রান্তের শেষ জেলা আমাদের সুনামগঞ্জ। আমাদের সিলেট শহর হয়েই ঢাকায় যেতে হয়। এখন রানীগঞ্জ সেতু হয়ে ঢাকায় যেতে পারব। ’

সুনামগঞ্জ সড়ক বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আশরাফুল ইসলাম বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী ১০০টি সেতুর মধ্যে আমাদের জেলায় সিলেট বিভাগের সবচেয়ে বড় রানীগঞ্জ সেতুসহ ১৭টি সেতু উদ্বোধন করতে যাচ্ছেন। এতে খরচ হয়েছে প্রায় ২৯০ কোটি টাকা। এই সেতুগুলো নির্মাণের ফলে একটি অঞ্চলের যোগাযোগ ব্যবস্থার বৈপ্লবিক পরিবর্তন শুরু হবে। যাতায়াতের সঙ্গে ব্যবসা-বাণিজ্যও সম্প্রসারিত হবে। ’

স্থানীয় সংসদ সদস্য পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেন, ‘রানীগঞ্জ-কুশিয়ারা সেতু ও সড়ক জনগণের জন্য আমরা চালু করে দিতে পারছি এটা আমাদের বড় পাওয়া। আমাদের জাতীয় উন্নয়ন সমতায় পৌঁছে দিতে ভূমিকা রাখবে এই সেতু। ’

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
© All rights reserved © 2024
ডিজাইন ও কারিগরি সহযোগিতায়: রায়তা-হোস্ট
tmnews71