জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক দুরন্ত বিপ্লব (৫১) খুন হননি। ঢাকা-বরিশাল রুটের মর্নিংসান-৫ লঞ্চের ধাক্কায় নৌকাডুবিতে তার মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।
আজ শনিবার (১৯ নভেম্বর) রাতে পিবিআই ঢাকা জেলার পুলিশ সুপার শাফিন মাহমুদ নিউজটোয়েন্টিফোরকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। পিবিআইয়ের ছায়া তদন্তে শেষে তিনি জানান, দুরন্ত বিপ্লব খুন হননি, লঞ্চের ধাক্কায় নৌকাডুবিতে নিহত হন।
তিনি বলেন, প্রাথমিকভাবে এটা আমাদের কাছে দুর্ঘটনা বলে প্রতীয়মান হয়েছে। গত ৭ নভেম্বর বিকেল ৫টার পর কেরানীগঞ্জের বটতলা ঘাট থেকে বুড়িগঙ্গা পাড়ি দিয়ে সোয়ারীঘাট আসছিলেন বিপ্লব। ওই নৌকার মাঝি ছিলেন শামসু নামের একজন। একই সময়ে ঢাকা-বরিশাল রুটের মর্নিংসান-৫ লঞ্চটি সোয়ারীঘাট থেকে সদরঘাটের উদ্দেশে যাত্রা করে।
দুরন্ত বিপ্লবসহ আরও চারজনকে বহন করা শামসু মাঝির নৌকাটি নদীর দুই-তৃতীয়াংশ পাড়ি দেয়ার পর মর্নিংসান-৫ লঞ্চটির ডান পাশে ধাক্কা লাগে। এতে উল্টে যায় নৌকাটি। দুর্ঘটনার পর আশপাশের নৌকা গিয়ে চার যাত্রী ও শামসু মাঝিকে উদ্ধার করে। তবে নিখোঁজ হন একযাত্রী। দুর্ঘটনার পর শামসু মাঝি তার গ্রামের বাড়ি ফরিদপুরে পালিয়ে গেলেও, পিবিআই তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাকে নিয়ে আসে।
এদিকে, মরদেহের ময়নাতদন্ত শেষে জানা যায়, বিপ্লবের মাথার পেছনে ও সামনে কিছু দিয়ে আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে। এছাড়া তার বুকের দুই পাশেও আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে। শাফিন মাহমুদ জানিয়েছে, নদীতে লঞ্চ অথবা ট্রলারের সঙ্গে ধাক্কায় এই ক্ষত চিহ্ন হয়। তিনি বলেন, নদী দিয়ে বড় বড় লঞ্চ যায়, ট্রলার যায়, বাল্কহেড যায়। সে হয়তো তাতে ধাক্কা খেয়েছে।
নিহত দুরন্ত বিপ্লব নেত্রকোনা জেলার পূর্বধলার ছোট ইলাশপুরের মৃত আব্দুল মান্নানের ছেলে। তিনি আওয়ামী লীগের কৃষি ও সমবায়বিষয়ক কেন্দ্রীয় উপ-কমিটির সদস্য এবং জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক।
উল্লেখ্য, কেরানীগঞ্জে দুরন্ত বিপ্লবের কৃষি খামার রয়েছে। গত সোমবার (৭ নভেম্বর) সন্ধ্যায় কেরানীগঞ্জ থেকে মোহাম্মদপুরে মায়ের বাসায় যাওয়ার পথে নিখোঁজ হন দুরন্ত। নিখোঁজের আগে তার মোবাইল ফোনের সর্বশেষ লোকেশন ছিল কামরাঙ্গীরচরের মুসলিমবাগ এলাকায়।
পরে শনিবার (১২ নভেম্বর) বিকেলে পাগলাঘাট এলাকা থেকে কচুরিপানার মধ্যে ভাসমান অবস্থায় তার মরদেহটি উদ্ধার করা হয়। রাত সাড়ে ১২টার দিকে কেরানীগঞ্জ থানা পুলিশের সঙ্গে নিহতের স্বজনরা যোগাযোগ করেন। পরে রাত ৩টায় নারায়ণগঞ্জ এসে নিহত বিপ্লবের মরদেহ সনাক্ত করেন তারা।