January 7, 2025, 8:39 am

চীনে করোনার নতুন ঢেউ, হাসাপাতালগুলোতে ভিড়-ওষুধ সংকট।

অনলাইন ডেক্স
  • Update Time : Wednesday, December 14, 2022,
  • 27 Time View

বিক্ষোভের মুখে করোনাভাইরাসের বিধিনিষেধ শিথিল করতে বাধ্য হয়েছে চীনের শি জিনপিং প্রশাসন। তবে এতে করে দেশটির হাসপাতালে করোনা আক্রান্তদের ভিড় বেড়েছে। শনাক্ত রোগীদের চিকিৎসা দিতে হিমশিম খাচ্ছেন চিকিৎসাকর্মীরা। আক্রান্তদের থেকে সংক্রমিত হচ্ছেন চিকিৎসক ও নার্সরা।

তবে চিকিৎসাকর্মীর সংকটের জন্য করোনা আক্রান্ত চিকিৎসক ও নার্সকেও হাসপাতালে উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। খবর বিবিসির

 

স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক চেইন শি যুক্তরাষ্ট্রের ইয়েল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে নিজ দেশ অর্থাৎ চীনের সংকট পর্যবেক্ষণ করছেন। তিনি বলেন, ‘আমি হাসপাতালগুলোর পরিচালক, চিকিৎসক ও নার্সদের সঙ্গে কথা বলেছি। নতুন স্ট্রেইনের (ভাইরাসের নতুন ধরণ) ফলে শনাক্ত রোগী বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে হাসপাতালের ব্যবস্থা কেমন রয়েছে সে বিষয়ে তাদের সঙ্গে কথা হয়েছে। ’

‘সংক্রমিত চিকিৎসাকর্মীকেও হাসপাতালে কাজ করতে হবে। তবে হাসপাতালের পরিবেশ সংক্রমণ বাড়ানোর জায়গা,’ যোগ করেন তিনি।

এ দিকে চীনের হাসপাতালগুলোতে রোগীদের চাপ বাড়ায় জ্বর ওয়ার্ডের সক্ষমতা বাড়ানো হচ্ছে। তবে ওয়ার্ড বাড়ানো হলেও দ্রুততম সময়ের মধ্যে সেগুলো রোগীতে পরিপূর্ণ হয়ে যাচ্ছে। ভাইরাসে সংক্রমিত হলে বাড়িতে থেকেই চিকিৎসা পাওয়া যাবে এমন বার্তা পাচ্ছে না সংক্রমিতরা।

অধ্যাপক চেইন শি বলছেন, ‘বাড়িতেই চিকিৎসা সম্ভব, লোকদের মাঝে এমন বার্তা দ্রুত ছড়িয়ে দিতে হবে। ’

তিনি আরও বলেন, ‘হালকা উপসর্গ থাকলেও রোগীরা হাসপাতালে ছুটছেন, এটা আমাদের সংস্কৃতি হয়ে দাঁড়িয়েছে। এর ফলে চীনের জনস্বাস্থ্য ব্যবস্থা ভেঙে যেতে পারে। ’

জ্বর ও সর্দি বাড়ায় চীনের ফার্মেসিগুলোতে ওষুধের সংকট দেখা দিয়েছে। এমনকি করোনা পরীক্ষার কিটও পাওয়া যাচ্ছে না।

রাজধানী বেইজিংয়ের রেস্তোরাঁগুলো জনসাধারণের জন্য খুলে দেওয়া হলেও ভাইরাসের প্রভাবে সেখানে তেমন ক্রেতার দেখা পাওয়া যাচ্ছে না। এমনকি রাস্তাগুলোও মানবহীন হয়ে পড়ছে। চীনের প্রতিষ্ঠানগুলো তাদের কর্মীদের দ্রুত সময়ের মধ্যে কাজে যোগ দিতে বললেও অনেকেই কাজে যোগ দিচ্ছেন না। এর ফলে বুঝা যাচ্ছে শি জিনপিং প্রশাসনের ‘জিরো কোভিড নীতি’ সবচেয়ে বেশি কার্যকর ছিল।

বিবিসি বলছে, চীনে করোনাভাইরাস তার চোখ রাঙানি দেখাচ্ছে। তবে চীনা নাগরিকদের সৌভাগ্য, ক্ষমতাসীন কমিনিউস্ট পার্টি তাদের মৃত্যুর মুখে ঠেলে দেবে না।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, করোনা আক্রান্তের সংখ্যা শূন্যের কোটায় আনার লক্ষ্য ধীরে ধীরে ত্যাগ করছে চীন। তবে ইতোমধ্যে দাবানলের মতো ভাইরাসটি ছড়িয়ে পড়ছে। তবে করোনা নিয়ে ভয়ের কিছু নেই বলে জানিয়েছে শি প্রশাসন।

২০১৯ সালের শেষ দিকে চীনে প্রথম করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়। এরপর সংক্রমণ ঠেকাতে কঠোর বিধিনিষেধ জারি করে বেইজিং। এতে প্রথম দিকে চীনে সংক্রমণ ছিল কম। গত তিন বছরে প্রায় সব দেশ করোনাসংক্রান্ত বিধিনিষেধ তুলে নিয়েছে। কিন্তু চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং তার সরকারের গৃহীত ‘জিরো কোভিড নীতি’ থেকে সরে আসেননি। এতে করে বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহৎ অর্থনীতির দেশের অবস্থা খারাপ হতে থাকে। দেশজুড়ে ছড়িয়ে পড়ে বিক্ষোভ। অবশেষে বিধিনিষেধ শিথিল করতে বাধ্য হয় চীনা কর্তৃপক্ষ।

অধ্যাপক চেইনের মতে, চীনের সবকিছু খুলে দেওয়ার প্রকৃত সময় এখন ছিল না। তবে তারা তা করে ফেলেছে।

তিনি বলেন, ‘নিউজিল্যান্ড ও সিঙ্গাপুরের মতো দেশগুলো সংক্রমণের অবস্থা দেখে বিধিনিষেধে পরিবর্তন এনেছিল। তবে চীন তেমনটা করেনি। তারা শুধু বিক্ষোভকারীদের কথা শুনেছে। এমনটা করার জন্য এখন উপযুক্ত সময় ছিল না। ’

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
© All rights reserved © 2024
ডিজাইন ও কারিগরি সহযোগিতায়: রায়তা-হোস্ট
tmnews71