ছিলেন নায়ক। আর্জেন্টিনাকে ৩৬ পর বছর বিশ্বকাপ জিতিয়ে গেলেন হয়ে গেলেন মহানায়ক। বলা হচ্ছে লিওনেল মেসির কথা। ক্যারিয়ারের সূচনালগ্ন থেকেই পায়ের জাদুতে পুরো বিশ্বকে বুঁদ করে রাখেন তিনি।
একের পর এক রেকর্ড গড়ে ফুটবল ইতিহাসের পাতায় নিজের নাম লেখেন স্বর্ণাক্ষরে। তবে আর্জেন্টিনাকে বিশ্বকাপ জিতিয়ে শ্রেষ্ঠত্বর মালা পরেছেন তিনি। আর্জেন্টাইনরা পরম আপন করে নিয়েছেন মেসিকে।
দলকে শিরোপা জেতাতে পারছেন না বলে একটা সময় আর্জেন্টিনাতে মেসিকে নিয়ে সমালোচনা হতো। তবে মাত্র দেড় বছরের ব্যবধানে বদলে গেছে সমস্ত কিছু। মেসি এই সময়ে জাতীয় দলের হয়ে জিতেছেন কোপা আমেরিকার শিরোপা, লা ফিনালিসিমা এবং বিশ্বকাপ। আর্জেন্টাইনদের কাছে এখন মেসি তাই মহানায়ক।
৩৬ বছর পর দেশকে বিশ্বকাপ এনে দেওয়ায় পুরো আর্জেন্টিনা এখন ভুগছে মেসি-জ্বরে। যার ঘোরে অনেক আর্জেন্টাইন এখন মেসিকে নিজেদের প্রেসিডেন্ট হিসেবে দেখতে চান। এক জরিপে এ তথ্য জানিয়েছে আর্জেন্টিনার তথ্য-বিশ্লেষণী ও জনমত জরিপ প্রতিষ্ঠান ‘জ্যাকোব্বে অ্যান্ড অ্যাসোসিয়াদোস’।
স্প্যানিশ সংবাদমাধ্যম ‘মার্কা’র খবর, ১৮ ডিসেম্বর আর্জেন্টিনা বিশ্বকাপ জয়ের পর এই জরিপ চালায় প্রতিষ্ঠানটি। জরিপে উঠে এসেছে, আর্জেন্টিনা দলের অধিনায়ক মেসিকে দেশের জনগণের একটি বড় অংশ প্রেসিডেন্ট পদে দেখতে ভোট দিতে আগ্রহী। প্রতিষ্ঠানটির মুখপাত্র হোর্হে জ্যাকোব্বের প্রকাশিত জরিপের তথ্য-উপাত্তই জানিয়েছে মার্কা।
সেই জরিপে অংশ নেওয়া ৪৩.৭ শতাংশ আর্জেন্টাইন মেসিকে দেশের প্রেসিডেন্ট পদে দেখতে চান। যদিও বিরোধীদের সংখ্যাও নেহাত কম নয়। ৩৭.৮ শতাংশ নাগরিক এই মতের বিপক্ষে। মেসিকে তারা আর্জেন্টিনার প্রেসিডেন্ট হিসেবে দেখতে চান না। তাই মেসি প্রেসিডেন্ট পদে দাঁড়ালে তার পক্ষে ভোটও দেবেন না। এদিকে, ১৭.৫ শতাংশ আর্জেন্টাইন মেসিকে ভোট দেওয়ার বিষয়টি ভেবে দেখবেন। আর ০.৯ শতাংশ আর্জেন্টাইন এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত দিতে পারেননি কিংবা উত্তর দেননি।
তবে ‘জ্যাকোব্বে অ্যান্ড অ্যাসোসিয়াদোস’-এর তথ্য থেকে মার্কা জানিয়েছে, জরিপে আর্জেন্টিনার সব রাজনীতিবিদদের চেয়ে বেশি ভোট পেয়েছেন মেসিই। পিএসজি তারকা একাই পেয়েছেন ৩৬.৭ শতাংশ ভোট। তার পরের জায়গায় থাকা রাজধানী বুয়েন্স আয়ার্সের ফেডারেল ডেপুটির দায়িত্ব পালন করা রাজনীতিবিদ হাভিয়ের মিলেই পেয়েছেন মাত্র ১২ শতাংশ ভোট।
সাবেক প্রেসিডেন্ট ক্রিস্টিনা ফার্নান্দেজ কির্চনার পেয়েছেন ১১.৩ শতাংশ ভোট। রাজনৈতিক দল রিপাবলিকান প্রপোজালের প্রধান ও মরিসি মাক্রি প্রেসিডেন্ট থাকতে নিরাপত্তামন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করা প্যাট্রিসিয়া বুলরিখকে ৮.৮ শতাংশ ভোট দিয়েছেন। ৬.৯ শতাংশ ভোট পেয়েছেন সাবেক প্রেসিডেন্ট মরিসিও মাক্রি। বর্তমান প্রেসিডেন্ট আলবার্তো ফার্নান্দেজ পেয়েছেন মাত্র ১.৩ শতাংশ ভোট।
বিশ্বকাপ জয়ের পর আর্জেন্টিনার প্রেসিডেন্ট ভবন কাসা রোসাদায় গিয়ে উদযাপন করেননি মেসিরা। এ নিয়েও জরিপে নিজেদের মতামত দিয়েছেন আর্জেন্টাইনরা। ৮২.৯ শতাংশ আর্জেন্টাইন এই সিদ্ধান্তের পক্ষে। ১৫.৮ শতাংশ নাগরিক মনে করেন, এটি ছিল ভুল সিদ্ধান্ত। বাকি ১.৪ শতাংশ আর্জেন্টাইন মতামত দেননি।