বেসরকারি টেলিভিশন মাছরাঙার সংবাদ উপস্থাপিকা এন কে নাতাশা জয় করতে পারলেন না ক্যান্সারকে। ফোর্থ স্টেজের ক্যান্সারের সঙ্গে লড়াই করে শেষ পর্যন্ত হেরে গেলেন তিনি। গতকাল বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত তিনটার দিকে রাজধানীর স্কয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি।
সংবাদ উপস্থাপিকা এন কে নাতাশা মরণব্যাধি ক্যান্সারের বিরুদ্ধে লড়েছিলেন বেশ সাহসিকতার সঙ্গে।
তার ধারণা ছিলো তিনি সুস্থ হয়ে যাবেন। তাই একেবারে শয্যাশায়ী হয়ে নয়, জীবনকে চালিয়ে নিয়েছিলেন স্বাভাবিকভাবে, নিয়মমাফিক। শরীরে ক্যান্সার নিয়ে অফিসও করছেন। চিকিৎসার সময়কালীন তার এ আত্মবিশ্বাস দেখে সবাই অবাক হয়েছিলেন।
আইইডিসিআরের উপদেষ্টা চিকিৎসক মুশতাক হোসেন জানান, ২০১৯ সালের মাঝামাঝিতে নাতাশার স্তন ক্যান্সার ধরা পড়ে। এরপর দেশে ও দেশের বাইরে চিকিৎসা নেন তিনি। ২০২০ সালের মার্চে তাঁর স্তন ক্যানসারের সার্জারি করা হয়। গত বছরের সেপ্টেম্বরে সুস্থ হয়ে উঠে আবার সংবাদ উপস্থাপনা শুরু করেন। কিন্তু গত ডিসেম্বর থেকেই তাঁর শারীরিক অবস্থার অবনতি হতে শুরু করে। গতকাল রাতে হার্ট অ্যাটাক করলে হাসপাতালে নেওয়ার পর তিনি মারা যান।
চিকিৎসার পর নাতাসা ঘুরে দাঁড়িয়েছিলেন। চিকিৎসা শেষে ক্যা্ন্সার জয় করে আবার কাজে যোগ দিয়েছিলেন ঘটা করে। তাকে দেখে অন্যান্য ক্যান্সার আক্রান্তরা ভরসা পেয়েছিলেন, অনেকে আশান্বিত হয়েছিলো। কাজে যোগ দেবার সেই ভিডিও এখনও ভাইরাল।
টিভির পর্দায় এন কে নাতাশা একজন জনপ্রিয় সংবাদপাঠিকা হলেও তিনি মূলত একজন চিকিৎসক, জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ছিলেন। স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ থেকে (২২তম ব্যাচ) এমবিবিএস পাস করেন তিনি। ডায়াবেটিস ও স্বাস্থ্য বিষয়ে পিএইচডি সম্পন্ন করেছিলেন। সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের (আইইডিসিআর) সহযোগী অধ্যাপক ছিলেন। একই সঙ্গে আইইডিসিআর প্রকাশিত ন্যাশনাল জার্নাল অব পাবলিক হেলথের ব্যবস্থাপনা সম্পাদক ছিলেন। টেলিভিশন চ্যানেল আরটিভির প্রতিষ্ঠাকালে সংবাদ উপস্থাপিকা হিসেবে কাজ শুরু করেন। সবশেষ তিনি মাছরাঙা টেলিভিশনে সংবাদ উপস্থাপিকা হিসেবে কর্মরত ছিলেন।