দূর্নীতির আতুর ঘর পটুয়াখালী পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি শিরোনামে টি এম নিউজ ৭১. এ গত ১১ আগস্ট একটি প্রতিবেদন প্রচার হলেও টনক নরেনি পটুয়াখালী পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির কর্তা ব্যাক্তিদের।
সরেজমিনে অনুসন্ধান করে জানাগেছে নতুন সংযোগের প্রথম ধাপে অত্র অফিসের কিছু দালাল জেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের বিদ্যুৎ এর লাইন পাশ করানোর নামে ঘর প্রতি ২ থেকে ৫ হাজার টাকা করে তুলেন।
কেউ টাকা দিতে নাচাইলে তার সংযোগ পেতে বহু কাঠ খর পোহাতে হয়, তাই তারা বাধ্য হয়ে টাকা দিচ্ছেন বলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ভুক্তভোগীরা এ প্রতিবেদককে জানায়। লাইন পাশের প্রথম ধাপ পেরুলেও ২য় ধাপে আবার ও তাদেরকে টাকা দিতে হয় আর এ টাকা বিদ্যুৎ সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারগণ এ টাকা নিয়ে থাকেন।
আরো পড়ুন দুর্নীতির আতুর ঘর পটুয়াখালী পল্লী বিদ্যুৎ সমিত (পর্ব-১)
এ একাধিক ঠিকাদার বিষয়টি অকপটে স্বীকারও করেন, তারা বলেন আসলে এলাকার কিছু গণ্য মান্য ব্যাক্তিরা টাকা তুলে আমাদের লেবারদের থাকা খাওয়ার কিছু খরচ দেন। আপনারা যেহেতু বিদ্যুৎ অফিস থেকে বিল নিচ্ছেন তো সেক্ষেত্রে এলাকার সাধারণ মানুষের টাকা কেন নিচ্ছেন এমন প্রশ্নের সরাসরি কোন উত্তর নাদিয়ে দায় সারা জবাব যে,টাকাতো আমরা একারা নেই না। সকল ঠিকাদার নিয়ে থাকে তাই আমরা নেই।
এলাকার সাধারণ বিদ্যুৎ গ্রাহকদের অভিযোগ এলাকার প্রভাবশালী একটি মহল টাকা তুলছে টাকা নাদিলে আমরা লাইন পাবনা তাই শত কস্ট হলেও আমাদের টাকা দিতে হয়। নাম প্রকাশ না করার স্বর্থে টাকা তোলার একাধিক ব্যাক্তি অভিযোগ করে বলেন আমরা যে টাকাটা তুলি তার সিংহভাগ বিদ্যুৎ অফিসের প্রকৌশলীদের দিতে হয়। নাদিলে বছরের পর বছর লাইনের জন্য বিদ্যুৎ অফিসে ঘুরতে হয়। এর কিছু সত্ততাও পাওয়া যায়।
গত ১৮ ই জুলাই ২০১৯ মির্জাগঞ্জ উপজেলার আমরাগাছিয়ায় জনৈক নজরুল ইসলাম একটি আবেদন করেন তাতে উল্লেখ রয়েছে একটি নতুন খুটি দিয়ে তার বাড়ীতে সংযোগ দেয়ার জন্য কিন্তু, অদৃশ্য কারনে এক বছর অতিবাহিত হলেও আলোর মুখ দেখেনি সেই আবেদন,নজরুল বলেন ইঞ্জিনিয়ার শান্ত ঘটনাস্থলে গিয়ে প্ল্যান নিয়ে আসলেও টাকা নাদেয়ার কারনে তার সংযোগটি আজও আলোর মুখ দেখেনি।
এ বিষয় মুঠোফোনে শান্তর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আসলে ঐ ব্যাক্তি আমার সাথে যোগাযোগ করেনি, করলে হয়ত এতদিনে তার সংযোগটি পেয়ে জেত। টাকা পয়সা কত লাগবে এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন আপনি অফিসে এসে সরাসরি কথা বলেন আপনার খুটি পাশ হয়ে জাবে।
এদিকে সদর উপজেলার মাদারবুনিয়া ইউনিয়নে জনৈক সাবেক মেম্বার লতিফ সিকদার ২০১৫ সাল থেকে ঐ এলাকার বিদ্যুৎ গ্রাহকদের কাছ থেকে প্রায় ৮ লক্ষ টাকা তোলেন এমনকি সেখানে এখন পর্যন্ত কোন সংযোগ দেয়া হয়নি বর্তমানে বিদ্যুৎ এর খুটি বসানোর কাজ চলমান কিন্তু এখন তিনি পূণরায় আবারও ঘর প্রতি ১১০০ টাকা দাবী করেন,তার প্রতারণায় অতিষ্ঠ এলাকাবাসী।
এ বিষয় লতিফ সিকদার এর কাছে জানতে চাইলে টাকা অফিসের কাকে দিতে হয়, এমন প্রশ্নের সরাসরি কোন উত্তর নাদিয়ে কৌশলে এরিয়ে জায় এবং বলে বাংলাদেশের কোন অফিসে টাকা ছারা ফাইল লরে। আপনি পল্লী বিদ্যুৎ অফিসের কে? এমন প্রশ্নের সরাসরি কোন উত্তর নাদিয়ে বিষয়টি এরিয়ে জায় । ভুক্তভোগীরা বলছে এখন পূণরায় আবারও কিছু টাকা চায় ঐ চক্রটি। অফিসের টাকা পরিশোধ হয়নি বলে লাইন পাশ হয়নি এমনটা জানায় ঐ দালান। শুধু পটুয়াখালী সদর উপজেলাই নয়।
জেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে এমন চিত্র অব্যাহত রয়েছে। আর এ কাজে বিভিন্ন এলাকায় ক্ষমতাশীন একটি চক্র রয়েছে। এ চক্রের একাধিক সদস্য নাম প্রকাশ নাকরে বলেন, এ টাকার একটি বড় অংশ উপর লেভেলে দিতে হয়, অপর একটি অংশ লাইন পাশ করার জন্য পটুয়াখালী পল্লী বিদ্যুৎ অফিসে দিতে হয় আমরাতো কিছুই পাইনা এই যা চা পান খরচ আর অফিসে যাতায়াত করার খরচ হয় মাত্র।
তারা আরও বলেন এ বিষয় আমাদেরকে কেন ধরেন পারলে অফিসে গিয়ে তাদেরকে ধরেন যাতে আমরা বাংলাদেশ সরকারের ঘোষণা অনুযায়ী শুধু মিটারের টাকা জমা দিয়ে নতুন সংযোগ পেতে পারি। এ সকল অভিযোগের বিষয় জানতে পটুয়াখালী পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি র জেনারেল ম্যানেজার প্রকৌশলী মনোহর কুমার বিশ্বাসের কাছে জানতে চাইলে তিনি প্রথমে বিষয়টি অস্বীকার করলেও পরে আংশিক স্বীকার করে বলেন,আসলে আমাদের অফিসের কোন লোক এ টাকা নেয়ার সাথে জরিত না থাকলেও বিভিন্ন এলাকায় একটি চক্র বিদ্যুৎ এর নামে কিছু টাকা নিচ্ছে বলে ইতিমধ্যে কিছু অভিযোগ পাওয়ায় আমরা ইতিমধ্যে বিভিন্ন এলাকায় এ চক্রের বিরুদ্ধে প্রায় ২০ টি মামলা চলমান, নতুন কোন অভিযোগ পেলে আমরা তাদের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ নিবো।
অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন ঠিকাদারি কিছু প্রতিষ্ঠান টাকা তুলছে বলে অভিযোগ পেয়ে নির্বাহী প্রকৌশলী তাদেরকে কালো তালিকাভূক্ত করেছে এবং নতুন কোন অভিযোগ পেলে তাদেরকেও আইনের আওতায় আনা হবে। জেলা বাসী বলছে বাংলাদেশ সরকারের ঘোষণা অনুযায়ী আমরা শুধু মিটারের টাকা জমা দিয়ে নতুন সংযোগ পেতে চাই কোন দালালের মাধ্যম নয়। সচেতন মহল মনেকরছে পটুয়াখালী পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি শুরুতে ভালো থাকলেও বর্তমানে ঘুষ বানিজ্যে জরিয়ে পরছে তারা।
আর এ কাজে সহযোগিতা করেন খোদ এলাকার একটি কুচক্রী মহল। বিষয়টি যথাযথ কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়া নাহলে সরকারের ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ পৌঁছাতে বাধাগ্রস্ত হওয়া সহ অনেকেই বিদ্যুৎ থেকে বঞ্চিত হবে।