ঘুম নিয়ে অনেকেই বেশ সমস্যায় থাকেন। রাত হলে সময় মতো বিছানায় যান ঠিকই কিন্তু ঘুম আসে না কিছুতেই! ঘুমের জন্য অপেক্ষা করতে করতে রাতের প্রায় অর্ধেকটাই পার হয়ে যায় বিছানায় এপাশ ওপাশ করতে করতে। এমন সমস্যায় যাঁরা আছেন, তাঁরা অনেকেই ঘুমানোর জন্য ঘুমের ওষুধের সাহায্য নিয়ে থাকেন। কিন্তু ঘুমের ওষুধের প্রতি অতিরিক্ত নির্ভরশীলতাও আমাদের শরীরের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর।
তাহলে উপায়! কিছু সাধারণ খাবারও হতে পারে আপনার ঘুমের ওষুধের বিকল্প। এগুলোর কোনও পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াও নেই। তাই অনিদ্রার সমস্যার সমাধানের জন্য নির্ভয়ে এবং নির্বিঘ্নেই খেতে পারেন এই সব খাবার। জেনে নিন তেমনই কিছু খাবারের সম্পর্কে, যেগুলো হতে পারে আপনার ঘুমের ওষুধের বিকল্প।
হালকা গরম দুধ: হালকা গরম দুধ অনায়াসেই ঘুমের ওষুধের বিকল্প হতে পারে। অনেকেরই রাতের ঘুমে সমস্যা হয়। যাঁরা রাতে ঠিক সময়ে ঘুমাতে পারছেন না বা বিছানায় শুয়ে এপাশ-ওপাশ করে সারা রাত কাটাচ্ছেন, তাঁরা রাতে ঘুমানোর আগে হালকা গরম দুধ খেয়ে শুতে পারেন। দুধে আছে ট্রাইপটোফান ও এমিনো অ্যাসিড, যা শরীরে ঘুমের আবেশ সৃষ্টি করে।
এ ছাড়াও দুধের ক্যালসিয়াম মস্তিষ্কে ট্রাইপটোফান ব্যবহারে সহায়তা করে। এক গ্লাস দুধ খেলে আপনার মানসিক চাপ অনেকটাই কমে যায় এবং শরীর কিছুটা হলেও শিথিল হয়ে আসে। ফলে ঘুম সহজেই চলে আসে।
পাকা কলা: কলা খেলে রাতে ভাল ঘুম হয়। কলাকে ঘুমের ওষুদের বিকল্পও বলা যেতে পারে। কলায় আছে ম্যাগনেসিয়াম যা মাংসপেশীকে শিথিল করে। এ ছাড়াও কলা খেলে মেলাটোনিন ও সেরোটোনিন হরমোন নির্গত হয়ে শরীরে ঘুমের আবেশ নিয়ে আসে। তাই যাঁদের ঘুম হয় না, তাঁরা রাতের খাবারের সঙ্গে কলা রাখতে পারেন।
আলু: সেদ্ধ আলু বা রান্না করা আলু আপনার রাতের ঘুমের সহায়ক একটি খাবার হতে পারে। আলু খেলে ট্রাইপটোফানের সাহায্যে হাই তোলায় ব্যাঘাত সৃষ্টিকারী এসিড নষ্ট হয়ে যায়। ফলে আপনার মস্তিষ্ক বেশ দ্রুতই আপনাকে ঘুমিয়ে পড়তে সহায়তা করতে পারে।
মধু: মস্তিষ্কে ওরেক্সিন নামের একটি নিউরোট্রান্সমিটার আছে যা মতিষ্ককে সচল রেখে ঘুমের ব্যাঘাত ঘটায়। রাতে ঘুমানোর আগে মধু খেলে মস্তিষ্কে গ্লুকোজ প্রবেশ করে এবং ওরেক্সিন উৎপাদন বন্ধ করে দেয় কিছু ক্ষণের জন্য, যা আপনাকে দ্রুত ঘুমিয়ে পড়তে সহায়তা করবে।
বাদাম: রাতের ঘুমের জন্য আরেকটি উপকারী খাবার হলো বাদাম। যাদের রাতে ঘুমাতে সমস্যা হয় তারা প্রতিদিন রাতের খাবারে ১০/১২ টি বাদাম খেলে রাতের ঘুম ভাল হবে।
ওটমিল: যারা ওজন সমস্যায় থাকেন তারা অনেকেই ওটমিল খেয়ে থাকেন। ওটমিলে আছে ঘুমে সহায়ক মেলাটোনিন। তাই রাতের খাবার হিসেবে ওটমিল খেলে একদিকে আপনার ওজনটা নিয়ন্ত্রণে থাকবে, অন্য দিকে আপনার রাতের ঘুমটাও ভাল হবে।